হিন্দু হলেই যত বিপত্তি বাংলাদেশে, ধর্মাচরণ করা যাবে না, মন্দির থাকা চলবে না।
গত মার্চ মাস থেকে জুন মাস পর্যন্ত বাংলাদেশে ৪১ এর বেশিবার আক্রান্ত হয়েছে মন্দির।
সূত্রের খবর , চট্টগ্রাম , সিলেট , টাঙ্গাইল , হবিগঞ্জ , ফরিদপুর সহ বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ জায়গায় বিভিন্ন সময় হিন্দু মন্দিরে আক্রমণ চালানো হয়েছে ।
দূর্গা মন্দির , কালী মন্দির , বিষ্ণু মন্দির , রাধা কৃষ্ণের মন্দিরসহ অসংখ মন্দির আক্রমণ চালায় জিহাদিরা , আর এর ফলস্বরূপ গ্রেফতার হয়েছে মাত্র ১৪ জন ।
শুধু মন্দির ভাঙাই নয় , মন্দিরের সম্পত্তি লুট , মূর্তি ভাঙা , মূর্তি কালিমালিপ্ত করা , আসেপাশে হিন্দু সম্পত্তি লুট করা , হিন্দু হত্যা , হিন্দু মায়েদের ও মেয়েদের শীলতাহানি ও ধর্ষণ করা একটা নিত্যনৈমিত্যিক কর্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশে ।
হিন্দুদের অভিযোগ , বাংলাদেশে তাদের দ্বিতীয় শ্রেণীরও নয় , তৃতীয় শ্রেণীর নাগরিক হিসাবে দেখা হয় এবং রাখ ঢাক না রেখেই বলা হয় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে হবে নয়তো হিন্দু প্রধান ভারতে চলে যেতে হবে যদিও ভারতে মুসলিমদের তা কখনোই বলা হয় না।
হিন্দুদের আরো অভিযোগ , বাংলাদেশ সরকার মুখে হিন্দুদের সুরক্ষার কথা বললেও , আদতে বা পরোক্ষে জিহাদিদেরই সমর্থন করে বা করে যাচ্ছে।
বাংলাদেশে নানান সময় মৌলবাদী গোষ্ঠীরা হিন্দুদের উপর আক্রমণ চালিয়েই থাকে। বিশেষত ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকায় মন্দিরগুলির উপর নানান সময় তাদের হামলা চিরাচরিত ঘটনা। পুলিশ প্রধান জানান, ভারতের সীমান্তবর্তী রূপসা উপ-জেলার শিয়ালী গ্রামে ঘটনাস্থলে নজরদারি চালানোর জন্য ব়্যাব কর্মীরা পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতার হাত মিলিয়েছে।
সূত্র অনুযায়ী, অঞ্চলের হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা মহামারীর থেকে বাঁচার জন্য ভগবানের আশীর্বাদের উদ্দেশ্যে নামগান করতে যাওয়ার সময় থেকেই গোলযোগ বাধে। তারা মসজিদের পাশ দিয়ে যে সময় যাচ্ছিলেন, সেই সময় নমাজ পাঠ হচ্ছিল। নমাজ পড়াকালীন এই ঘটনার কারণে তাদের অসুবিধের সৃষ্টি হয় এবং পরবর্তীতে তারা চারটি হিন্দু মন্দিরের দেবতাদের মূর্তি ধ্বংস করে বলে অভিযোগ। সঙ্গে কিছু হিন্দু পরিবারের দোকানেও আক্রমণ করেন। আক্রান্তদের কথায়, দুর্বৃত্তরা প্রথমে শিয়ালী মহাশ্মশান মন্দিরে হামলা করে এবং তারপর মন্দির ও শ্মশানে প্রতিমা ভাঙচুর করে। সেখান থেকে, তারা শিয়ালী পূর্বপাড়া এলাকায় আক্রমণ চালায় যেখানে তারা হরি মন্দির, দুর্গা মন্দির এবং গোবিন্দ মন্দিরে হিন্দু দেব-দেবীর মূর্তি ভাঙচুর করে।
স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের ছয়টি দোকান ও দুটি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। রূপসা উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণগোপাল সেন জানান, হামলার সময় চারটি মন্দিরে অন্তত ১০টি প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামি লিগের সংসদ সদস্য সালাম মুর্শেদী জানান, এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, একটি ধর্মীয় পুনর্মিলনী সভা আয়োজন করা হয়েছিল যাতে এলাকার ছয়টি গ্রামের বাসিন্দারা যোগ দিয়েছিলেন। সবাই শান্তি বজায় রাখার এবং বন্ধুত্ব ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলেই জানিয়েছেন তিনি। মুর্শেদী ব্যক্তিগতভাবে সভায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, তিনি নিজের খরচে মূর্তি এবং দোকানগুলি পুনর্নির্মাণ করবেন। এবং সরকার পক্ষ থেকেও মন্দির নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ধর্মীয় গোড়ামির বিষয়টি যেন ফুলে ফেঁপে উঠছে প্রতিনিয়তই। নানান দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়দের উপর ধর্মীয় পরিসরে আঘাতের চিহ্ন সর্বত্রই বিদ্যমান। বাংলাদেশের খুলনা জেলার হিন্দু মন্দিরে ইসলামিক সম্প্রদায়ের আক্রমণ যেন পাকিস্তানের ঘটনার পুনরাবৃত্তি।
বাংলাদেশের খুলনা জেলায় কমপক্ষে চারটি মন্দির, কিছু দোকান এবং সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবারের উপর হামলা চালানো হয়। ঘটনা ক্রমশ জটিল হতে থাকায় পুলিশি হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হয়। পুলিশকে সাহায্য করতে ব়্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে ডাকা হয়।খুলনা জেলা পুলিশ প্রধান মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের জানান, অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার জন্য এখন পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বাংলাদেশের হিন্দু-বুদ্ধ-খ্রিস্টীয় ইউনিটি কাউন্সিলের প্রধান সদস্য এই ঘটনাটিকে দুর্ভাগ্যজনক বলে নিন্দা করেন। তিনি বলেন, সময়মতো পুলিশি হস্তক্ষেপ এই ধরনের ঘটনা থেকে রেহাই দিতে পারে। ধর্মীয় বিষয়ে এই ধরনের ঘটনা যেন দেশের এক অপমান এবং তার সঙ্গে মানুষের জীবনযাত্রাতেও এর প্রভাব ভীষণ মাত্রায় আঘাত ফেলে। প্রতিনিধি দল এবং হিন্দু নেতারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করাকালীন এলাকার হিন্দু বাসিন্দারা হামলার প্রতিবাদ করে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানায়।
Source :