মোটরসাইকেলের জন্য একগুচ্ছ নয়া নিয়ম কেন্দ্রের, আপনি জানেন তো?

লক্ষ্য মোটরসাইকেল আরোহীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা। সেই উদ্দেশ্যেই একগুচ্ছ নয়া নিয়ম ও বিধিনিষেধ জারি করল কেন্দ্রীয় সরকার। 

কী সেই নিয়ম?

জুলাই মাসে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ ও হাইওয়ে মন্ত্রক এই নিয়মে বদল আনে। সংশোধন করা হয় কেন্দ্রীয় মোটর ভেহিকেলস আইন ১৯৮৯। এ বিষয়ে গেজেট বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশিত হয়।

সেখানে বলা হয়েছে,

১) গ্র্যাবরেল বাধ্যতামূলক: এবার থেকে প্রতিটি মোটরসাইকেলে পিলিয়নের (পিছনের সিটের আরোহী) জন্য গ্র্যাব রেল রাখতে হবে। মোটরসাইকেলের দুইপাশে বা পিছনের অংশে এটি থাকবে। অর্থাত্ যাতে সেটি ধরে ব্যাক সিটের আরোহী বসতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে।

বেশিরভাগ কমিউটার মোটরসাইকেল গ্র্যাব রেল-সহ বিক্রি হয়। অনেকক্ষেত্রে একটু বিলাসবহুল মোটরসাইকেলে এগুলি থাকে না। অনেকে আবার স্বেচ্ছায় গাড়ির সৌন্দর্য বাড়াতে এটি খুলে রাখেন। এবার থেকে তা করা যাবে না।

২) শাড়ি গার্ড বাধ্যতামূলক : বেশিরভাগ মোটরসাইকেল কেনার সময়েই শোরুম থেকে এটি ফিট করে দেয়। কেউ কেউ বাইকের স্পোর্টি লুক বজায় রাখতে এটি লাগান না। আবার অনেক দামি বাইকে কোনও শাড়ি গার্ড লাগানোর ব্যবস্থাই থাকে না।

এবার থেকে প্রতিটি মোটরসাইকেলে শাড়ি গার্ড আবশ্যিক। পিছনের চাকার অন্তত অর্ধেক অংশ জুড়ে তা থাকতে হবে। পিছনে বসা ব্যক্তির পোশাক চাকায় জড়িয়ে দুর্ঘটনা এড়াতেই এই সিদ্ধান্ত।

৩) কন্টেনারের সাইজ : মোটরসাইকেলের পিছনে জিনিস বহনের জন্য যে কন্টেনার, তার সর্বোচ্চ পরিমাপও স্থির করে দেওয়া হয়েছে। কন্টেনারটি লম্বায় ৫৫০ mm, চওড়ায় ৫১০ mm এবং উচ্চতায় ৫০০ mm-এর অধিক হলে চলবে না।

কেন্দ্রের স্থির করা কন্টেনারের সর্বোচ্চ সাইজ বেশ বড়। অর্থাত্ সম্ভবত তা ফুড ডেলিভারির রাইডারদের কন্টেনারের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য হবে। তবে এ বিষয়ে কেন্দ্র এখনও কিছু স্পষ্ট করেনি।

তবে এমন কন্টেনার থাকলে ব্যাকসিটে আর কাউকে বসানো যাবে না। উল্লেখ করা হয়েছে নির্দেশিকায়।

৪) ফুট-পেগের নিয়ম মানতে হবে : অটোমোটিভ ইন্ডাস্ট্রি স্ট্যান্ডার্ডসের (AIS) সাইজের নিয়ম মেনে মোটরসাইকেলে ফুট পেগ রাখতে হবে নির্মাতাদের। আগামী ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র।

কিন্তু গ্র্যাব রেল ও শাড়ি গার্ডের নিয়ম তো আগেও ছিল!

হ্যাঁ। ঠিকই ধরেছেন। ২০০০-এর দশকের শুরুর দিকেই কেন্দ্র এই নিয়মগুলি চালু করেছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও বেশ কিছু মোটরসাইকেল নির্মাতা এই নিয়মের প্রয়োগ করেনি। বিশেষত, দামি স্পোর্টস বাইকের ক্ষেত্রে এই ফিচারগুলি এড়িয়ে যাওয়া হয়। উদাসীন ক্রেতারাও।

এবার থেকে সেটা চলবে না। নিয়মগুলি মানতেই হবে। নয় তো আরটিও অফিসে রেজিস্ট্রেশন হবে না।

ওয়াকিবহাল মহল বলছে, এর সূত্রপাত ২০১৮ সালে। সুপ্রিম কোর্ট মোটরসাইকেল নিরাপত্তা সংক্রান্ত এক মামলায় এ বিষয়ে পদক্ষেপ করার বিষয়ে জানায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্পোর্টসবাইকের শোরুম ম্যানেজার এ বিষয়ে আলোকপাত করলেন। তিনি বললেন, ‘বেশিরভাগ মোটরসাইকেল নির্মাতাই কেন্দ্রের নিয়ম মেনেই ব্যবসা করে। কিন্তু কোনও কোনও সংস্থা তাদের দামি, বিলাসবহুল বাইকে গ্র্যাব রেল, শাড়ি গার্ড রাখে না।’

তিনি জানান, অনেক দামি স্পোর্টসবাইক ক্রেতারা সাধারণত একাই চড়েন। পিলিয়ন নিলেও তিনি রাইডে নিরাপদ এমন পোশাক পড়েন। আর রাইডারকে আঁকড়ে বিশেষ কায়দায় বসেন। তাই গ্র্যাব রেল, শাড়ি গার্ড রাখা হয় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.