বেশ কয়েক বছর আগে শরণার্থী হয়ে আফগান পরিবারটি এসেছিলো জার্মানিতে।
তারপর ওই দেশেই কাজ খুঁজে নেয়, জার্মান সরকারের বদান্যতায় ভালোই কাটছিল তাঁদের জীবন। দুই আফগান ভাইয়ের একটি মাত্র যুবতী বোন ক্রমশই বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছিলো ইসলামের “অতি রক্ষণশীল ও মধ্যযুগীও রীতি ও নীতি” থেকে এবং ক্রমশই সম্পৃক্ত হয়ে পড়ছিলো জার্মান তথা ইউরোপিয়ান সভ্যতার সাথে।
কিন্তু তাতেই আপত্তি পরিবারের, বিশেষ করে ওই যুবতীর দুই দাদার।
তাদের উদ্যেশ্য একটাই ধর্মীয় কট্টরতা নিয়ে বাঁচা যা ওই দেশের উদারপন্থী সমাজব্যবস্থার সাথে খাপ খায় না।
দুই ভাই বোনকে বোঝায় যে অতি উন্নত রাষ্ট্র বা জাতি হিসাবে জার্মানরা বা ইউরোপীয়ানরা তাদের আশ্রয় দিতে পারে , খাবার দিতে পারে , চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে পারে , কিন্তু কোনো মতেই জার্মানদের বা ইউরোপিয়ানদের ধর্ম বা সংস্কৃতিকে ভালোবাসা বা সম্মান জানানোর প্রশ্নই ওঠেনা কারণ, কারণ “কাফেরদের ” সংস্কৃতি তাদের অপছন্দ।
প্রথাগতভাবে শিক্ষিত না হলেও ১৬ বছর বয়সী আফগান তরুণীর মনে হয়েছিল এই ধরণের চিন্তা ভাবনা সুস্থতার পরিপন্থী। প্রতিবাদ জানালেন তিনি এবং এর ফলও পেলেন হাতেনাতে।
তারই দুই দাদা তাঁকে কুচিকুচি করে কেটে ফেলে দিলো বাগানে।
গতকাল ঘটনাটি ঘটে জার্মানির রাজধানী বার্লিন (Berlin) এর শহরতলিতে। খুনে দুই ভাইকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। আজীবন কারাবাস প্রায় নিশ্চিত জেনেও নির্বিকার তারা, নয় অনুতপ্তও। তাদের সাফ বক্তব্য, তারা ইসলাম রক্ষার জন্যই এই কাজ করেছেন , সুতরাং বিপথগামী বোন কে খুনে কোনো পাপ নেই , দুঃখও নেই বরং ‘ আল্লা ‘ তাদের উপর ‘ মেহেরবান’ হবে এই পবিত্র কাজ করার জন্য।
পরিসংখ্যান বলছে এই ধরণের ‘অনার কিলিং’ যত পৃথিবীতে হচ্ছে, তার ৯২% শতাংশই হয় মুসলিম সমাজে। এখন ইসলামিক দেশে তো বটেই ইউরোপ আশ্রয় নেওয়া মুসলিমরা ইউরোপের বিভিন্ন রাষ্ট্রেও এই কাজ শুরু করে দিয়েছে।
জার্মান আইনজীবী মীরকো রোডের ( Mirko Rode) মতে , ” এই চরম অসহিষ্ণু প্রবণতা শুধু জার্মানির সমস্যা নয় , গোটা ইউরোপ এর তথা বিশ্বের সমস্যা।”
এই নৃশংস ঘটিনাটি সরকারের তরফ থেকে চেপে দেয়ার অভিযোগ আসছে জার্মান দক্ষিণপন্থীদের পক্ষ থেকে, অভিবাসন নীতির ফলে চাপের মুখে পরে এঞ্জেলা মের্কেল সরকারের নির্দেশেই এই ঘটনাটি লুকিয়ে রাখা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এতো বড়ো ঘটনা ঘটনার পর ও ডয়েস ওয়েল, বার্লিন জাইটুং এবং কোনো মিডিয়া হাউস এই খবরটি প্রকাশ করে নি।