ক্রীতদাস প্রথা এখনো রমরমিয়ে চলছে আফ্রিকা ও আরবে, আল-সাবাব ও জঙ্গি দোসররা নিরপরাধ মেয়েদের অপহরণ করে বানাচ্ছে যৌন ক্রীতদাসী

এই নয় যে শুধু আমেরিকা অথবা ইউরোপেই দাসত্ব প্রথা চালু হয়েছিল, আফ্রিকা ও আরবে দাসত্ব প্রথা শুরু হয়েছে কমপক্ষে সপ্তম শতকে।

আরবে জিহাদিরা পূর্ব আফ্রিকার দখল নেওয়ার পর যুদ্ধ বন্দীদের দাসে পরিণত করতো , নারী পুরুষ নির্বিশেষে, আর তারপর চলতো নিদারুন অত্যাচার।
কেনিয়া, ঘানা, তাঞ্জানিয়া, সোমালিয়া, ইথিওপিয়া, ইরিত্রিয়ার মতো মুসলিম বহুল দেশে এর প্রচলন ছিল বললে ভুল হবেনা।

ইতিহাস সাক্ষী আছে যে আরব দুনিয়াতে “কালো ” (Black) বা ” নিগ্রো(Negro) ” বা ” আফ্রিকান(African) ” ক্রীতদাসের বিলাসবহুল ইতিহাস ছিল এবং এখনো আছে।

সুইডেন (Sweden) এর উপসালা (Uppsala University) বিশ্ববিদ্যালয়ের আফ্রিকান লিঙ্গুইস্টিক্স (African Linguistics) বিষয়ক অধ্যাপক আব্দুলআজিজি লোধির (Abdulazizi Lodhi) মতে ” ক্রীতদাস প্রথা আফ্রিকার সভ্যতার অন্যতম অঙ্গ ছিল এবং এখনো এর নিদর্শন ভুরিভুরি।”

পূর্ব আফ্রিকার (East Africa) জাঞ্জিবার দ্বীপ (Zanzibar Island) একসময়ে ছিল আফ্রিকান ক্রীতদাস কেনা বেচার পীঠস্থান।
আর্কাইভ থেকে নেওয়া পুরনো তথ্য বলছে একসময় ১৭ মিলিয়নের উপর ক্রীতদাস কেনা বেচা হয়েছে আফ্রিকাতে যার মধ্যে আমেরিকা ও ইউরোপ ছাড়াও সিংহ ভাগ অধিকার ছিল মিশর ও আরবদের। আর এর মধ্যে আট মিলিয়ন ক্রীতদাস পূর্ব আফ্রিকা থেকেই।
তবে জাঞ্জিবার কেও হার মানিয়ে গেছে বর্তমান তাঞ্জানিয়ার (Tanzania) একটি প্রসিদ্ধ জায়গা , আর্চিপেলাগো , (Archepelago) যাকে পূর্ব আফ্রিকার ক্রীতদাস কেনাবেচার মক্কা (Mecca) বলা হতো। এছাড়া ঘানা র (Ghana) কেপ কোস্ট কাসল (Cape Coast Castle) ও ছিল আফ্রিকান ক্রীতদাসদের বন্দী করে রাখবার অন্যতম জায়গা যেখানে একই সঙ্গে ১৫০০ ক্রীতদাস রাখা হতো এবং এখান থেকেই ও আর্চিপেলাগো ও বিভিন্ন জায়গা থেকে বিক্রি হওয়ার পর তাদের মূলত নিয়ে যাওয়া হতো মিশর (Egypt) ও সৌদি আরবে (Saudi Arabia)।

এই মুহূর্তে সর্বাধিক ক্রীতদাস বা যৌন ক্রীতদাস পাওয়া যায় কেনিয়া , ঘানা , সোমালিয়া , তাঞ্জানিয়া , ইথোপিয়া ও ইরিত্রিয়া র মতো মুসলিম সংখ্যাগুরু আফ্রিকান দেশ গুলিতে।

সূত্রের খবর , হাজারো হাজারো আফ্রিকান মুসলিম ও অমুসলিম নারীদের ক্রীতদাস এবং যৌন ক্রীতদাস করে রাখা হয় বা হয়েছে এবং পুরো বিষয়টাই নিয়ন্ত্রণ করে ইসলামী জঙ্গি তথা জিহাদিরা। এদের মধ্যে এই বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা নেয় আল-সাবাব (Al Shabab) ও ইসলামিক স্টেট (Islamic State ) জঙ্গিরা।

কোন মেয়েদের কোথায় ও কি ভাবে বন্দী করা হবে , ও তাদের কোথায় কি ভাবে ব্যবহার করা হবে বা বেচা হবে , পুরোটাই নিয়ন্ত্রণ করে জিহাদি গোষ্ঠীগুলি।

বন্দী হওয়া ক্রীতদাস নারীদের যৌন মিলনের সময় শিকল দিয়ে বেঁধে রাখবার রীতি আছে এবং এই যৌন মিলনের (যা জোর করেই হয় বলা বাহুল্য ) সময় কোনো প্রকার সাবধানতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়না বাধ্যতামূলক ভাবেই কারণ এর ফলে যে সন্তান প্রসব হয় তাদের জিহাদিরা ব্যবহার করে পরবর্তী প্রজন্মের জিহাদি হিসাবে প্রস্তুত করার জন্য।

বিখ্যাত সমাজ বিজ্ঞানী (Social Scientist) ডক্টর চার্লস জ্যাকবস (Dr. Charles Jacobs) যিনি ” আমেরিকেন্স ফর পিস এন্ড টলারেন্স ” (Americans for Peace and Tolerance) সংস্থার প্রেসিডেন্ট ও বটে জানান , ” আফ্রিকা , আরব তথা মুসলিম দুনিয়ায় আফ্রিকান তথা ব্ল্যাক ক্রীতদাস প্রথা অতি প্রাচীন এবং তা আজও বর্তমান। তবে খুবই আশ্চর্যের বিষয় যে মানবাধিকার নিয়ে অনেক আলোচনা ও আন্দোলন হলেও , এই বিষয়ে কোনো আলোচনা বা আন্দোলন কখনো হয়নি বা হয়না , আরো আশ্চর্য লাগে বামপন্থীদের এই বিষয়ে একদম চুপ দেখে।”

এদিকে কেনিয়ার (Kenya) ন্যাশনাল কাউন্টার টেররিসম সার্কেল (National Counter Terrorism Circle) এর ডিরেক্টর (Director) মার্টিন কিমানির(Martin Kimani) মতে ” আল-সাবাব ও ইসলামিক স্টেটের মতো জঙ্গি সংগঠন তাদের জন্য প্রচুর পরিমানে নারী গুপ্তচর নিয়োগ করেছে ও করছে এবং এটা খুবই বিপদজনক কারণ এর ফলে যৌন ক্রীতদাস তো বাড়ছেই তারই সাথে ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে এইডস রোগীর সংখ্যা।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.