সন্তানের মানসিক অবস্থাকে আমল দেন না বেশিরভাগ মা-বাবাই। ছোট শিশুদের মনে কী চলছে, তারা আদৌ খুশি কিনা, সে বিষয়ে উদাসীন অভিভাবক ও শিক্ষকরা। খালি বাড়তে থাকে তুলনা, অযথা প্রত্যাশা, উচ্চাকাঙ্খার চাপ। আর তার ফলে হারিয়ে যাচ্ছে ওরা।
সম্প্রতি দেশে শিশু-আত্মহত্যার পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো (NCRB)। আর তাতেই উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১৭ সাল থেকে ২০১৯ সাল, এই তিন বছরে আত্মহননের পথে হেঁটেছে ২৪ হাজার ৫৬৮ জন শিশু। এর মধ্যে ১৩ হাজার ৩২৫ জন মেয়ে।
সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শিশু আত্মহত্যার সংখ্যা মধ্য প্রদেশে। উক্ত তিন বছরে সেখানে ৩ হাজার ১১৫ জন আত্মঘাতী হয়েছে। এরপরেই রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের নাম।
পশ্চিমবঙ্গে তিন বছরে ২ হাজার ৮০২ জন শিশু আত্মহত্যা করেছে। তারপরেই স্থান মহারাষ্ট্রের।
রিপোর্টে প্রতিটি আত্মহত্যার কারণগুলিও দেখা হয়েছে। আর তাতে বলা হয়েছে, মোট আত্মহত্যার মধ্যে ৪ হাজার ৪৬ জনের ক্ষেত্রে কারণ ছিল ‘পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া’। অর্থাত্ পড়াশোনার চাপেই আত্মহনন বেছে নিয়েছে এই নাবালক-নাবালিকারা।
বাড়ি থেকে অল্প বয়সে জোর করে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করায় আত্মঘাতী ৬৩৯ জন। এর মধ্যে ৪১১ জন মেয়ে।
এছাড়া শারীরিক নিগ্রহ, প্রিয়জনের মৃত্যু, মাদকাসক্তির ফলেও আত্মহত্যা করেছে বহু শিশু।
এ কথা অস্বীকার করার জায়গা নেই যে ছেলেমেয়েদের অত্যাধিক চাপ দেন বহু মা-বাবাই। এ বিষয়ে এক মনোবিদ জানান, পড়াশোনার জন্য বকা-ঝকা, মারধর, অপমান, অন্যের সঙ্গে তুলনা নয়। বরং মা-বাবার উচিত্ উত্সাহ দেওয়া, বন্ধুর মতো ব্যবহার করা এবং প্রয়োজনে সময় নিয়ে বোঝানো। আর পরীক্ষার নম্বরই যে সব নয়, তা বুঝুন, বোঝান। শিক্ষকদের ক্ষেত্রেও এটা প্রযোজ্য। সন্তানকে প্রশ্ন করার আগে নিজেকে প্রশ্ন করুন, আপনি ভাল অভিভাবক তো?