পূণ্যভূমি অযোধ্যা নগরী

নগর সভ্যতার কথা শুনলেই আমাদের মনে পড়ে হরপ্পা মহেঞ্জোদারো সভ্যতার কথা। এই সভ্যতার খ্যাতি তার নগর পরিকল্পনার জন্য। অন্যদিকে বৈদিক সভ্যতার প্রসিদ্ধি গ্রাম কেন্দ্রিক সভ্যতা রূপে। ভারতীয় সভ্যতার সংস্কৃতিক ভিত্তি বৈদিক সভ্যতার সঙ্গে সিন্ধু নদের তীরে গড়ে ওঠা সভ্যতার কোন যোগাযোগ ছিল কিনা আজ অব্দি ইতিহাস সে বিষয়ে কোনো প্রমাণিত তথ্য তুলে ধরতে পারেনি। কিন্তু বৈদিক সভ্যতাতে যে যথেষ্ট সুসজ্জিত, পরিকল্পিত নগরী ছিল, সে কথা বিদ্যালয় পাঠ্য ইতিহাস ভারতীয় ছাত্র, ছাত্রীদের কাছে গোপন করে । আধুনিক নগরায়নের সঙ্গে শিল্পায়নের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে। কিন্তু শিল্প কোন প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতার ( হরপ্পা মহেঞ্জোদারো বা বৈদিক সভ্যতা )অর্থনৈতিক ভিত্তি ছিল না বরং অর্থনৈতিক ভিত্তি ছিল কৃষি ও বাণিজ্য। এতদসত্বেও ভারতীয় সভ্যতায় আমরা পরিকল্পিত নগরের অলিখিত এবং লিখিত ঐতিহাসিক প্রমাণ পাই। বৈদিক সভ্যতার পরিকল্পিত নগরীর লিখিত প্রমাণ রয়েছে বাল্মীকি রামায়ণে। একথা অনস্বীকার্য যে রামায়ণ সম্ভবত পৃথিবীর আদিতম কাব্য । বাল্মীকি রামায়ণের প্রতিটি সর্গের শেষে কবি বাল্মীকি রামায়ণকে মহাকাব্য নয়; বরং আদিকাব্য বলে বর্ণনা করেছেন । এই আদি কাব্যের
বালকান্ডের পঞ্চম ও ষষ্ঠ সর্গ জুড়ে রয়েছে অযোধ্যা নগরীর বর্ণনা । এই বর্ণনা থেকে আমরা অতি সহজেই বৈদিক সভ্যতার নগর পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে পারি।

রামায়ণ শব্দের অর্থ রামের ভ্রমণ । অর্থাৎ রামায়ণের প্রধান চরিত্র রাম। উত্তর ভারত থেকে মধ্য, পশ্চিম ও দক্ষিণ ভারত ঘুরে শ্রীলংকা পর্যন্ত যে ভ্রমণ রাম করেছিলেন তাঁর বনবাসের সময় , তারই বর্ননা বিবৃত হয়েছে রামায়ণে। এই ভ্রমণ যুগপৎ রাজনৈতিক এবং আধ্যাত্মিক। যুগ যুগ ধরে ভারত সহ থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া , শ্রীলংকা প্রভৃতি দক্ষিণ এশিয়াস্থিত দেশের মানুষ এই ভ্রমণ বৃত্তান্ত থেকে রাজনৈতিক ও আধ্যাত্মিক শিক্ষা লাভ করে আসছেন। এখন অযোধ্যা নগরী হলো রামায়ণের প্রধান চরিত্র রামের জন্মভূমি । তাই বাল্মীকি অতি যত্নে অযোধ্যা নগরীর বর্ণনা দিয়েছেন। পুরুষানুক্রমে রামের পিতা দশরথ ছিলেন কোশল রাজ্যের রাজা। আর এই
কোশল রাজ্যের রাজধানী হল অযোধ্যা । অযোধ্যা শব্দটি সংস্কৃত শব্দ। এর অর্থ যে নগরী শত্রুর দ্বারা অজেয়। হিন্দিতে অযোধ্যাকে অবধ নগরী বলে অভিহিত করা হয়। অবধ কথার অর্থ হল যাকে বধ করা যায় না। এই অযোধ্যা নগরীর উল্লেখ রামায়ণ ছাড়াও মহাভারত, পালি ভাষায় রচিত বৌদ্ধদের প্রাচীনতম গ্রন্থ এবং প্রাকৃত ভাষায় রচিত জৈনদের প্রাচীনতম গ্রন্থতে পাওয়া যায়। সেখানে অযোধ্যাকে সকেতা নামে উল্লেখ করা হয়েছে। এই গ্রন্থগুলিতে উল্লিখিত সকেতা নগরীর টপোগ্রাফিক বিবরণ দেখে বিশেষজ্ঞরা এই নগরী আর অযোধ্যাকে একই নগরী বলে অভিহিত করেছেন। বাল্মীকি রামায়ণে অযোধ্যা নগরীর বর্ণনা শুরু হচ্ছে বালকান্ডের পঞ্চম সর্গের ষষ্ঠ শ্লোকে। সেখানে বলা হচ্ছে :

অযোধ্যা নাম নগরী তত্রাসীল্লোকবিশ্রুতা ৷
মনুনা মানবেন্দ্রেণ যা পুরী নির্মিতা স্বযম্ ৷৷1.5.6৷৷

অর্থাৎ সেখানে অযোধ্যা নামে লোকবিশ্রুত ( কিংবদন্তি) এক নগরী ছিল যেটি নির্মাণ করেন মানবেন্দ্র মনু স্বয়ং। সেখানে বলতে এই কোশল রাজ্যের কথা বলা হয়েছে। কারণ তার পূর্ববর্তী শ্লোকেই বাল্মীকি বর্ণনা করেছেন কোশল রাজ্যের , যেটি সরযু নদীর তীরে অবস্থিত, খাদ্যশস্য ও সম্পদে পরিপূর্ণ এক মহান জনপদ।

কোসলো নাম মুদিতস্স্ফীতো জনপদো মহান্ ৷
নিবিষ্টস্সরযূতীরে প্রভূতধনধান্যবান্ ৷৷1.5.5৷৷

উল্লেখ্য অযোধ্যা নগরীর প্রতিষ্ঠাতা মনু হলেন রামের পূর্বপুরুষ। বাল্মীকি রামায়ণের বালকান্ডের
সত্তরতম সর্গে রামের পূর্বপুরুষদের নাম বর্ণিত হয়েছে। সেই বর্ণনা অনুযায়ী মনু হলেন বিবস্বান সূর্যের পুত্র। সেই কারণেই রামের বংশ সূর্যবংশ । আর মনুর পঁয়ত্রিশ প্রজন্ম পরে জন্মগ্রহণ করেন দশরথ পুত্র রাম। এই ঘটনা প্রমাণ করে রামের পূর্বপুরুষরা বহিরাগত ছিলেন না । আর রামেরই এক পূর্বপুরুষ অযোধ্যা নগরী নির্মাণ করেন। বাল্মীকি অন্তত একথাই লিখে গেছেন।

মহাপুরী অযোধ্যার আয়তন বর্ণনা করতে গিয়ে বাল্মীকি বলেন যে এই নগরী লম্বায় ছিল দ্বাদশ যোজন অর্থাৎ 96 মাইল আর বিস্তৃতিতে তিন যোজন অর্থাৎ 24 মাইল। এই বিস্তার পরিমাপ প্রমাণ করে তৎকালীন দিনে নগরের বিস্তৃতি পরিমাপের অভ্যাস এবং ব্যবস্থা দুটোই বর্তমান ছিল । আরো আকর্ষনীয় বিষয় হলো নগরীর রাস্তার বর্ণনা। বাল কান্ডের পঞ্চম সর্গে বাল্মীকি লিখেছেন সমগ্র অযোধ্যা নগরী ছিল রাজপথে সুবিভক্ত। নগরের অন্তর্দেশ ছিল প্রশস্ত রাস্তায় সুবিভক্ত। রাস্তাগুলি ছিল পুষ্পে পুষ্পে শোভিত, নিত্য জলসিক্ত

রাজমার্গেণ মহতা সুবিভক্তেন শোভিতা ৷
মুক্তপুষ্পাবকীর্ণেন জলসিক্তেন নিত্যশ: ৷৷1.5.8৷৷

অযোধ্যার রাজপথের বর্ণনা আমাদের হরপ্পা সভ্যতার রাজপথের কথা এবং আধুনিক ভারতের সোনালী চতুর্ভুজ প্রকল্পের কথা মনে করিয়ে দেয়। এই বিবৃতি বৈদিক সভ্যতার নগর পরিকল্পনার সাক্ষ্য দেয় যা বিদ্যালয় পাঠ্য ইতিহাসে অনুপস্থিত

অযোধ্যা নগরী গভীর পরীখা এবং দুর্গ দ্বারা বেষ্টিত ছিল। তার ফলে এই নগরী শত্রুদের কাছে ছিল অগম্য। দুর্গ প্রাচীরের গায়ে মধ্যে মধ্যে ছিল সুসজ্জিত কপাট ও তোরণ। নগরের মধ্যে ছিল বিভিন্ন রূপ বিপনী । সেখানে সর্ব প্রকার যন্ত্র, যুদ্ধাস্ত্র পাওয়া যেত । শ্রীময় এই নগরীতে ছিল ধ্বজ শোভিত বহু সুউচ্চ অট্টালিকা। যেগুলি শত শত শতাঘ্নী (অস্ত্র ) দ্বারা সুরক্ষিত ছিল । নগরের চারপাশে পরীখা, দুর্গ এবং অস্ত্র দ্বারা সুরক্ষিত অট্টালিকার বর্ণনা অবশ্যই রাজধানীর মজবুত সুরক্ষা ব্যবস্থাকে ফুটিয়ে তোলে এবং সেইসঙ্গে নির্মাণ শিল্প ও প্রযুক্তি ব্যবহারের নিদর্শন তুলে ধরে । বাল্মীকি সুসজ্জিত, রত্নখচিত , পর্বত সদৃশ প্রাসাদের উপস্থিতির জন্য অযোধ্যা নগরীকে অমরাবতীর সঙ্গে তুলনা করেছেন।

প্রাসাদৈ রত্নবিকৃতৈ: পর্বতৈরুপশোভিতাম্ ৷
কূটাগারৈশ্চ সম্পূর্ণামিন্দ্রস্যেবামরাবতীম্ ৷৷1.5.15৷৷

বাল্মীকির বর্ণনা অনুযায়ী অযোধ্যা নগরী ব্যবসা বাণিজ্যেরও কেন্দ্র ছিল। নগরে আগত বিভিন্ন দেশের বণিকরা নগরের শোভাবর্ধন করত। এছাড়াও রাজাকে কর প্রদানের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সামন্ত রাজারাও এই নগরে পদার্পণ করতেন। নগরীর গৃহগুলি ছিল ঘন। অর্থাৎ রাজধানী নগরের জনসংখ্যা ছিল অধিক। তবে তাই বলে নগর কিন্তু ঘিঞ্জি ছিল না। নগরীর প্রতিটি স্থান সুব্যবহৃত ছিল । সমভূমির উপর নির্মিত প্রাসাদের নগরের সৌন্দর্য বর্ণনা করতে গিয়ে বাল্মীকি অযোধ্যাকে অষ্টপদের (দাবা জাতীয় খেলা ) ঘরের সঙ্গে তুলনা করেছেন। বাল্মীকির মতে অযোধ্যা নগরী ছিল ইক্ষু রসের ন্যায় সুমিষ্ট। এখানে বাল্মীকি মাটির তলার জলের কথাই বলেছেন বলে অনুমান করা যেতে পারে।

গৃহগাঢামবিচ্ছিদ্রাং সমভূমৌ নিবেশিতাম্ ৷
শালিতণ্ডুলসম্পূর্ণামিক্ষুকাণ্ডরসোদকাম্ ৷৷1.5.17৷।

নগরীর জনগণের বিনোদনের কথাও বাল্মীকি বালকান্ডের পঞ্চম সর্গে উল্লেখ করেছেন। তাঁর বর্ণনা অনুযায়ী অযোধ্যা নগরে পুরনারীদের নাট্যশালা, উদ্যান ও আম্রবন ছিল। নাগরী মুখরিত হত দুন্দুভি, মৃদঙ্গ, বীণা আর প্রণবের নাদে। নগরী ছিল চতুর্দিকে শালবৃক্ষ দ্বারা বেষ্টিত এবং ক্ষুদ্র নগরী দ্বারা পরিবেষ্টিত। অর্থাৎ আজকের মেট্রো শহর গুলির ন্যায় অযোধ্যাকে কেন্দ্র করে ছিল মফস্বল নগরী।

বাল্মীকির অযোধ্যা নগরীর বর্ণনাতে আমরা নগরীর জনগণদের পেশা ও চরিত্র সম্পর্কেও ধারণা পাই। অযোধ্যা নগরীতে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র – এই চার বর্ণের মানুষই বসবাস করতেন। প্রথমে তিনি বর্ণনা দিয়েছেন যোদ্ধাদের। অযোধ্যা নগরীর যোদ্ধারা মহারথ নামে পরিচিত ছিলেন। তাঁরা ধারালো অস্ত্র ও বাহুবলের সাহায্যে বাঘ, সিংহ বরাহ ইত্যাদি হত্যা করতেন। শব্দভেদী বাণ চালাতে তাঁরা পারঙ্গম ছিলেন। তবে যাদের রক্ষা করার কেউ নেই , সেইসব অসহায়দের এনারা হত্যা করতেন না। মহারাজ দশরথ নিজে একজন বীর যোদ্ধা ছিলেন। তিনি একাই অনেকজন মহারথের সঙ্গে যুদ্ধ করতে পারতেন। নগরীর ব্রাহ্মণগণ ছিলেন যাগ-যজ্ঞে পারদর্শী, বেদান্ত ও বেদাঙ্গে পন্ডিত, গুণবান , জীতেন্দ্রিয়, সত্য ও ন্যায় পরায়ণ, মর্যাদাবান, মহাত্মা ঋষিদের সমকক্ষ, অধ্যায়নে আগ্রহী, স্বকর্মে উৎসাহী, দান গ্রহণে সংযত, বৈবাহিক সম্পর্কে নিষ্ঠাবান, ধার্মিক এবং দীর্ঘায়ু। ক্ষত্রিয়রা ব্রাহ্মণদের মান্য করতেন । বৈশ্য- শূদ্র রাও নিজ নিজ বৃত্তিতে নিয়োজিত ছিলেন এবং উপরের বর্ণদের মান্য করতেন। ব্রাহ্মণদের গুণের বর্ণনা এটা প্রমাণ করে যে সেসময় ব্রাহ্মণকে সম্মান লাভের জন্য গুনবান হতে হত। উল্লেখ্য বাল্মীকির বর্ণনাতে কোথাও বলা নেই যে ব্রাহ্মণ , ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র পৃথক পৃথক স্থানে বসবাস করত। অস্পৃশ্যতা প্রথার বিবরণও কোথাও নেই। পরবর্তীতে মহারাজ দশরথের যজ্ঞের বিবরণেও আমরা চার বর্ণের উপস্থিতি দেখতে পাই।

বাল্মীকি তাঁর কাব্যে অযোধ্যার সাধারণ
জনগনেরও বর্ণনা দিয়েছেন পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে। সে সময় অযোধ্যা নগরে এমন কোন গৃহস্থ ছিলেন না যিনি ধর্ম , অর্থ , কাম – এই ত্রিবর্গ সিদ্ধ করেননি অথবা যাঁর সম্পদ, গোধন বা অশ্বের অভাব রয়েছে । এই নগরে ছিলনা কোন নাস্তিক, কামুক, আবিদ্বান কিংবা নৃশংস কোনো পুরুষ।

কামী বা ন কদর্যো বা নৃশংস: পুরুষ: ক্বচিত্ ৷
দ্রষ্টুং শক্যমযোধ্যাযান্নাবিদ্বান্ন চ নাস্তিক: ৷৷1.6.8৷৷

বাল্মীকির বর্ণনা অনুযায়ী পুরুষ-মহিলা নির্বিশেষে সকল নাগরিক ছিলেন ধর্মপরায়ণ, যাগ-যজ্ঞ ও ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে বলিদানে আগ্রহী, আত্মনিয়ন্ত্রণে সক্ষম, আচার-আচরণে ভদ্র ও মহর্ষিদের ন্যায় পবিত্র। সকলেই তৃপ্তি সহকারে অন্ন গ্রহণ করতেন। অযোধ্যা নগরীর বাসিন্দারা কুণ্ডল, কিরীট বা মুকুট , অঙ্গদ, কন্ঠহার এবং হাতে আভরণ পরিধান করতেন । নাগরিকদের পরিধান নগরের আর্থিক সচ্ছলতার প্রমাণ স্বরূপ । তাঁদের দেহ ছিল পরিষ্কার; মন আনন্দময় । তাঁরা নিজ নিজ দেহকে
উপলিপ্ত করতেন এবং দেহে সুগন্ধি প্রয়োগ করতেন। এর থেকে প্রমাণিত হয় অযোধ্যা নগরী আর্থিকভাবে সমৃদ্ধ হবার পাশাপাশি মানসিক সুখের সূচকেও উপরে ছিল।

অযোধ্যা নগরীর বর্ণনাতে বাল্মীকি মানবসম্পদের পাশাপাশি নগরের পশুসম্পদের ও বিবরণ দিয়েছেন । অযোধ্যাতে ছিল অসাধারণ অশ্ব। এগুলির মধ্যে কোনটি কম্বোজ জাত, কোনটি বাহ্লিক জাত, কোনটি আবার সিন্ধু অঞ্চল জাত। এইরূপ অশ্বের বর্ণনা অযোধ্যার সঙ্গে অন্য রাজ্যের বাণিজ্যের কথা স্মরণ করিয়ে দেয় । অশ্বের ন্যায় নগরীতে বিভিন্ন জাতের হস্তী ছিল। এদের মধ্যে কেউ ছিল বিন্ধ্য পর্বত জাত, কেউ হিমাবত পর্বত, কেউ বা আবার ইন্দ্রের ঐরাবত বংশ জাত। এছাড়াও সংকর প্রজাতির হস্তীরও উল্লেখ পাওয়া যায় বাল্মীকির বর্ণনায় । সংকর প্রজাতির হাতির অস্তিত্ব প্রমাণ করে পশুদের প্রজনন ক্রিয়া করানোর কৌশল তৎকালীন অযোধ্যা নগরীর বাসিন্দারা আয়ত্ত করেছিলেন।

অযোধ্যা নগরীর বর্ণনা আমাদের চোখের সামনে একটি সুন্দর, সুপরিকল্পীত নগরের চিত্র ফুটিয়ে তোলে। এই নগর হলো শ্রীরামের মাতৃভূমি । কবির বর্ণনা অবশ্যই আজকের ঐতিহাসিকদের বর্ণনার মত নয়। মেকলের শিক্ষায় পরিপুষ্ট কোন ঐতিহাসিক আজ এই বর্ণনা পড়ে বলতে পারেন যে এসবই কবির কল্পনা ! কিন্তু কবি যদি না দেখে বা শুনে থাকবেন , তবে এই রূপ বিবরণ তিনি দেবেন কিভাবে? তাছাড়া রামায়ণ যে একটি ঐতিহাসিক উপাদান সেকথা আশা করি কোন ঐতিহাসিক অস্বীকার করবেন না । তাই একথা অনস্বীকার্য যে রামায়ণে অযোধ্যার বর্ণনা বৈদিক যুগে পরিকল্পিত , সুদৃশ, দুর্গ ও পরীখা পরিবেষ্টিত নগরের অস্তিত্বকে প্রমাণ করে।

সূর্য শেখর হালদার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.