মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী,
আপনি কাল নেতাজী ইন্ডোরে ঘোষণা করেছেন ২৫,০০০ক্লাবকে ৫ লক্ষ টাকা করে দেবেন। মোট পরিমাণ কত হয়? ২৫০০০× ৫,০০০০০= ১২৫ কোটি!!!! কার টাকা? আপনার? আপনার দলের?? না, আমাদের টাকা।বাংলার সাধারণ মানুষের ট্যাক্সের টাকা! যাদের বাড়ি বানাবার বা উন্নয়নের বা ত্রাণের টাকা এলেও চুরি হয়ে যায় দিনের পর দিন প্রকাশ্যে। আপনার পুলিশ নির্দেশ পায়না সেই চোরদের জেলে ভরার! শুধু অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে বাংলার জনগন। প্রতিবাদ করতে গেলেই মিথ্যে কেসে ফেঁসে যাওয়ার ভয় যে সবার বুকে!তাই চুপ সবাই।
দুটো করোনার ধাক্কায়, ঝড়ের দাপটে কাজ হারিয়েছে যে অগণিত মানুষ, ৫-৬ বছর ধরে চাকরির জন্য অন্দোলন বিক্ষোভে রাস্তায় বসে আছে যে লক্ষ লক্ষ শিক্ষিত বেকার যুবক, “…শ্রী” অনুদানে বাঁচার অভ্যাস থেকে স্বসম্মানে স্বনির্ভর হতে চাইছে যে মেয়েগুলো – এই টাকাটা তাদের টাকা।তার ও তার পরিবারের রক্ত জল করা ট্যাক্সের টাকা।
কদিন আগের একটা খবর স্পষ্ট করে দিয়েছিল “এগিয়ে না পিছিয়ে বাংলা”! এ রাজ্যে ডোমের চাকরির জন্য ৮০০০ আবেদন পত্র পড়েছিল মাত্র কয়েকদিনে। মাইনে ১৫ হাজার, তাও পার্মানেন্ট নয় এই চাকরি।এই ক্লাস পাশ করা চাকরি পেতে পচা গলা মৃতদেহের সাথে সময় কাটাতে রাজী ছিল মাষ্টার ডিগ্রি বা ইঞ্জিনিয়ার পাশ করা বেকার যুবকরা। এমন কি ৭৪ জন মহিলাও আবেদন করেছিলেন ডোম হতে!!খুব সহজ কি এই ঘটনাটা?মানি, কোন কাজ ছোট নয়। কিন্তু কোন আর্থিক অবস্থায় পড়লে চুরি জোচ্চুরিতে না ঢুকে এই কষ্টদায়ক চাকরির জন্যেও হুড়োহুড়ি পড়ে ম্যাডাম? এই টাকাটা এদের সবার টাকা।।
মেনে নিলাম সামনে কর্পোরেশন বা উপনির্বাচন হতে পারে, তাই বলে প্রতি এলাকায় ক্লাবের ছেলের হাতে রাখতে অন্যায় ভাবে জনগনের কষ্টের টাকা তুলে দেবেন???এটা খেলা করার সময়? যার পেটে ভাত নেই সে খেলতে যায় কোন মুখে? টাকা বিলিয়ে ক্যাডার কিনতে হলে দলের টাকা খরচ করুন, কেউ কিচ্ছু বলতে পারবে না। আর সততার সাথে বাংলার বিন্দুমাত্র উন্নয়ন করতে চাইলে এই টাকায় চাকরি দিন বেকার ছেলেমেয়েদের!! এই ২৫ হাজার ক্লাবের ১ টা করে শিক্ষিত ছেলেকেও চাকরি দিন অন্তত!!!
মানুষ আবার ক্ষমতায় এনেছেন বলে মানুষের টাকা দিয়ে যা খুশী করবেন না দয়া করে। শিক্ষিত বেকার ছেলেমেয়েদের চোখের জল আছে এই টাকায়।ক্লাবের ফূর্তি বা আনন্দের বিনিময়ে তাদের হাতে রাখতে আর ভোট কব্জা করতে এই টাকার ব্যবহার বন্ধ করুন। বাংলা যে আসলে বিপদে আছে তা সব থেকে বেশী আপনি জানেন।
জানি আপনার ভক্ত মিডিয়ারা এটা নিয়ে লিখবে না বা টক শো করবে না। সত্যিটা গুলিয়ে দেওয়াটাই তাদের দায়িত্ব।
কিন্তু বিপদে তো বাংলা। রাজ্যে ঋণের বোঝা ২০১১ পর থেকে বেড়ে আজ প্রায় ৫ লক্ষ কোটি টাকা। সেখানে এই চরম আর্থিক দূরাবস্থায় ১২৫ কোটি অনেক টাকা।।
সিপিএম কংগ্রেস টিএমসি বিজেপির বাইরে এসে ভাবুন। রাজনীতি ভুলে একটু সত্যিকারের আমাদের সবার মুখ্যমন্ত্রী হন!!! তারপর তো দেশ বা ত্রিপুরাকে বাংলার মত উন্নয়নের জোয়ারে ভাসাবেন।
বিশ্বাস করুন, আপনার হয়ে যে ভক্ত আমায় গালাগাল করবে সেও জানে আমার কথাগুলো সত্যি। আমায় মিথ্যে কেসে ফাঁসাতে পারে এ রাজ্যের যে পুলিশ সেও জানে এই কথাগুলো শুধু আমার কথা নয়, দলমত নির্বিশেষে বাংলার নাগরিকের( ভোটারের) কথা!
ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
প্রণাম নেবেন।
নাগরিক রুদ্রনীল ঘোষ।