খাবারের তেলের দাম বেড়েছে মোটামুটি 40% থেকে 50% l এগারো বছরে সর্বোচ্চ l সাধারণ মানুষ তাঁর কষ্টের জন্য সরকারকে দায়ী করবে সেটাই স্বাভাবিক l তবু মূল্যবৃদ্ধির কারণগুলো জানানো দরকার l
প্রথমতঃ গত তিন দশকে মানুষের হাতে যত পয়সা এসেছে, ততই তেলের ব্যাবহার বেড়েছে l মাথাপিছু মাসে 0.37 কিলো থেকে প্রায় গ্রামের.67 কিলো থেকে কিছু বড় শহরে 1 কিলো l
দ্বিতীয়তঃ মোট চাহিদা বছরে 23 থেকে 25 মিলিয়ন টন l যার মধ্যে গড়ে 13 মিলিয়ন টন আমদানি করতে হয় l আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল থেকে সোয়া তেল; ইন্দোনেশিয়া মালয়েশিয়া থেকে পাম তেল এবং ইউক্রেন আর্জেন্টিনা থেকে সূর্যামুখী l ফলে তেলের দাম আন্তর্জাতিক দামের উপর নির্ভরশীল l মালয়েশিয়াতে শ্রমিক অসন্তোষ ও রফতানি কর বৃদ্ধি এবং ইন্দোনেশিয়ায় শুধু রফতানি কর বৃদ্ধির জন্য পাম তেলের দাম 2281 রিঙ্গিট থেকে বেড়ে হয়েছে 3890 রিঙ্গিট l চিকাগো বোর্ড অফ ট্রেড সোয়া তেলের দাম $306 থেকে বেড়ে হয়েছে $559 হয়েছে l
কিন্তু দাম বাড়লো কেন আন্তর্জাতিক বাজারে?
- সোয়াতেলকে যথেচ্ছ জ্বালানি হিসেবে ব্যাবহার করার পাশ্চাত্য প্রবণতা l
- চীনের বিপুল আমদানি সেই এক কারণে l
- মালয়েশিয়ার শ্রমিক সমস্যা
- লা নীনার জন্য পাম ও সোয়া তেলের কম উৎপাদন
- মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার রফতানি কর বৃদ্ধি
এছাড়া সর্ষের তেলের ক্ষেত্রে সরকার মানের বিষয়ে কিছু কড়াকড়ি করায় ভেজাল মেশানো বন্ধ হয়ে গেছে l ফলে এক্ষেত্রেও দাম বেড়েছে l
কিন্তু উপায় কি? দেশী কৃষকদের স্বার্থ রক্ষা এবং কৃষি পরিকাঠামো কর হিসেবে আমদানি কর অনেকদিন ধরেই বাড়িয়ে রেখেছে সরকার l আবার, আমদানি কর কমালে চাষীরা দাম পাবে না l তবে এই পরিস্থিতিতে সরকারের কিছুটা আমদানি কর ছাড় দেয়ার ব্যাপারে বিবেচনা করা উচিত l কৃষকদের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে l
সরকার আগামী দিনে খাবারের তেলে আত্মনির্ভর করার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা নিচ্ছে l কিন্তু রাতারাতি কৃষকদের এতদিনের অভ্যাস পরিবর্তন সম্ভব না l হুগলির আলু চাষী, বর্ধমানের চাল চাষী কিম্বা মালদার আম চাষী কি রাতারাতি তাদের অভ্যাসে বদল আনবে?
সুদীপ্ত গুহ