COVAXIN: মান খারাপ, মানবদেহে প্রয়োগের অনুমতিই পায়নি কোভ্যাক্সিনের প্রথম কয়েকটি ব্যাচ!

কোভ্যাক্সিনের প্রথম কয়েকটি ব্যাচ গুণমানের কারণে মানবদেহে প্রয়োগের ছাড়পত্র পায়নি বলে জানালেন কেন্দ্রের কোভিড প্রতিষেধক টাস্ক ফোর্সের প্রধান এন কে অরোরা। অন্য দিকে, কোভ্যাক্সিন করোনার ডেল্টা প্লাস প্রজাতির ভাইরাসকে রুখতে সক্ষম বলে এ দিন দাবি করেছে ভারত বায়োটেক এবং ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)।

এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রের তরফে বিভিন্ন রাজ্যকে প্রায় ৫০ কোটি ডোজ় প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে প্রায় ৫ কোটি ডোজ় কোভ্যাক্সিন। সম্প্রতি কোভ্যাক্সিনের অভাব দেখা দেওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে। আজ এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অরোরা বলেন, ‘‘কোভ্যাক্সিনের প্রথম কয়েকটি ব্যাচ গুণমান ঠিক না থাকায় ছাড়পত্র পায়নি। ফলে কোভ্যাক্সিন উৎপাদনের ক্ষেত্রে ঘাটতি দেখা দেয়।’’ অরোরা জানান, ভারত বায়োটেক কিছুদিনের মধ্যেই উৎপাদন বেশ কয়েক গুণ বাড়াতে পারবে বলে মনে করছে কেন্দ্র।

ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য দায়ী ছিল ডেল্টা প্রজাতি। পরবর্তী সময়ে সেই প্রজাতি চরিত্র বদল করে ডেল্টা প্লাসে পরিণত হয়। তবে ডেল্টা প্লাস সংক্রমণের প্রশ্নে কতটা ক্ষতিকর, তা নিয়ে এখনও গবেষণা চলছে। গত এপ্রিলে ভারতে প্রথম ডেল্টা প্লাস নমুনা পাওয়া গিয়েছিল। দ্রুত সেই সব রোগীদের চিহ্নিতকরণ ও নজরদারির আওতায় নিয়ে আসায় এখনও পর্যন্ত ভারতে মাত্র ৭০ জনের শরীরে ডেল্টা প্লাসের নমুনা পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। যদিও ডেল্টা প্লাস ৭০টি দেশে ছড়িয়ে যাওয়ায় অনেক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের আশঙ্কা, আগামী দিনে বিশ্বে তৃতীয় ঢেউয়ের পিছনে মূল কারণ হবে ওই প্রজাতি।

মানবদেহে তৃতীয় দফা প্রয়োগের পরে কোভ্যাক্সিন প্রতিষেধকের কার্যকারিতা প্রায় ৭৭.৮ শতাংশ বলে দাবি ভারত বায়োটেক সংস্থার। ডেল্টার প্রজাতিগুলির ক্ষেত্রে এর কার্যকারিতা ছিল প্রায় ৬৫.২ শতাংশ। অনেক দেশেই যখন করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ছে তখন ভারত বায়োটেক আজ দাবি করল, তাদের কোভ্যাক্সিন প্রতিষেধক ডেল্টা প্লাস প্রজাতিকে রুখে দিতে সক্ষম। গবেষণার বিষয়বস্তু খুব দ্রুত ‘বায়োআর১৪’ জার্নালে প্রকাশিত হতে চলেছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। তাদের দাবি, গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ওই প্রতিষেধক দেওয়ার ফলে শরীরে যে অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে, তা ডেল্টা প্লাসকে প্রতিহত করতে সক্ষম। সংস্থার দাবি, মানবশরীরে তৃতীয় দফা প্রয়োগের ফলাফল সামনে আসায় বর্তমানে ভারত ছাড়া ফিলিপিন্স, ইরান, মেক্সিকো, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মতো অন্তত ১৬টি দেশে তাদের প্রতিষেধক জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের ছাড়পত্র পেয়েছে।

কোভ্যাক্সিন উৎপাদনে ভারতে বায়োটেককে সাহায্য করছে আইসিএমআর। ওই সাহায্যের বিনিময়ে ভারত বায়োটেক তাদের প্রতিষেধক বিক্রি থেকে পাওয়া অর্থের ৫ শতাংশ আইসিএমআর-কে রয়্যালটি হিসেবে দেবে। অনেকেরই অভিযোগ, এই রয়্যালটি দেওয়ার জন্যই বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে অনেক বেশি দাম দিয়ে কোভ্যাক্সিন প্রতিষেধক নিতে হচ্ছে নাগরিকদের। জনস্বাস্থ্য অভিযান সংস্থার পক্ষে অমূল্য নিধির বক্তব্য, ‘‘দেখে মনে হচ্ছে, প্রতিষেধক বিক্রি করে লাভ করার লক্ষ্যে আঁতাঁত হয়েছে ভারত বায়োটেক ওআইসিএমআর-এর।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.