স্নাতকে ইতিহাসে গোল্ড মেডেল। তবে শিবপুরের স্বর্ণালী সামন্ত এখন NRS Medical কলেজ ও হাসপাতালের ডোমপদের পদপ্রার্থী। যে পদের জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পাশ। সেই পদের জন্য পরীক্ষায় বসতে চান এক সন্তানের মা স্বর্ণালী। তাঁর বক্তব্য, “কাজের আবার ছোট বড় কী”
জানা গিয়েছে, খুব অল্প বয়সে বিয়ে করে শিবপুরে স্বামী দেবব্রতর সঙ্গে সংসার পাতেন স্বর্ণালী। কিন্তু, পড়াশোনার মায়া কাটাতে পারেননি। বিয়ের পরও পড়াশোনা চালিয়ে যান। স্নাতকে ইতিহাসে নিয়ে পড়াশোনা করেন। গোল্ড মেডেল পান। সরকারি চাকরির চেষ্টাও করেন। কিন্তু বৃথা সেই চেষ্টা। অগত্যা ডালহৌসি এলাকার এক বেসরকারি সংস্থায় রিসেপশানিস্টের কাজে যোগ দেন। স্বামী দেবব্রত Uber বাইক চালান। তবে অতিমারির ধাক্কা নাড়ে দিয়েছে স্বর্ণালী-দেবব্রতর ছোট্ট সংসার। লকডাউনে একটানা তিনমাস বাড়িতে বসে রয়েছেন দু’জনে। একমাত্র মেয়ের খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করা, সংসার টানা বড় কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে তাঁদের জন্য। তাই অগত্যা NRS Medical কলেজ ও হাসপাতালে ডোমপদে চাকরির জন্য আবেদন করেছেন তিনি।
স্বর্ণালী জানান, নিয়োগের বিজ্ঞাপনে লেখা ছিল ল্যাবরেটরি অ্যাটেনডেন্ট (পূর্বের ডোম পদ)। তাই আবেদনের সময়ও তিনি জানতেন না সেটি ডোমপদের বিজ্ঞপ্তি। পরে বিষয়টা পরিষ্কার হলেও অবশ্য পিছিয়ে যাননি তিনি। তাঁর কথায়, “আমার একটা নিরাপদ চাকরির খুব প্রয়োজন। হাসপাতালে ডাক্তার, নার্স, আয়া সব মেয়েরা হতে পারলে, ডোমের কাজ করা থেকেই পিছিয়ে আসব কেন?” কোথা থেকে পান এই আত্মবিশ্বাস? স্বর্ণালী জানান, ‘পরিবারের সমর্থনই তাঁর এগিয়ে যাওয়ার মন্ত্র।’ রবিবার NRS মেডিক্যাল কলেজে গিয়ে লিখিত পরীক্ষা দিয়েও এসেছেন তিনি। আপাতত ফল প্রকাশের অপেক্ষা। মনে প্রাণে চাকরিটা চাইছেন স্বর্ণালী সামন্ত। তবেই যে পরিবারটা নিরাপত্তা পাবে।