তিনবারের অলিম্পিক্স চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে ছিটকে দিয়ে প্রথমবার মেয়েদের হকির সেমিফাইনালে উঠে ইতিহাস গড়ল ভারত। দ্বিতীয় কোয়ার্টারে পেনাল্টি কর্ণার থেকে গুরজিত কউরের ভারতের হয়ে ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন। গোটা ম্যাচ জুড়ে ভারতের গোলকিপার সবিতা ছিলেন দুর্ভেদ্য। অস্ট্রেলিয়া মোট ৯টি পেনাল্টি কর্ণার পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি। ভারত একটি পেনাল্টি কর্ণার পেয়েই বাজিমাত করে।
ভারতের প্রথম একাদশ: সবিতা (গোলকিপার), রানি (ক্যাপ্টেন), গুরজিত কউর, দীপ গ্রেস এক্কা, উদিতা, নিশা, নেহা, মনিকা, নভজ্যোত কউর, নভনীত কউর, বন্দনা।
প্রথম কোয়ার্টার:-
৩ মিনিটের মাথায় ভারত প্রথমবার অস্ট্রেলিয়ার সার্কলে আক্রমণ হানে। যদিও শুরুতেই অজি শিবিরে ধাক্কা দিতে পারেনি ভারতীয় দল। রানি রামপাল হানা দিয়েছিলেন প্রতিপক্ষের ডি বক্সে। ফাইনাল টাচ দিতে পারেননি।
৯ মনিটের মাথায় বন্দনার পাস থেকে বল ধরে অস্ট্রেলিয়ার জালে জড়ানোর চেষ্টা করেন রানি। ভাগ্য সঙ্গ না দেওয়ায় গোল পায়নি ভারত। কেননা, বল পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়।
প্রথম কোয়ার্টারের ১৫ মিনিটে ম্যাচ গোলশূন্য। তবে ভারত ম্যাচের শুরুটা করে দাপটের সঙ্গে। ভাগ্য সঙ্গ দিলে ভারত ইতিমধ্যেই এক গোলে এগিয়ে যেতে পারত। আপাতত প্রথম কোয়ার্টারের শেষে স্কোর-লাইন ০-০।
দ্বিতীয় কোয়ার্টার:-
দ্বিতীয় কোয়ার্টেরর শুরুতে অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের প্রথম পেনাল্টি কর্ণার আদায় করে নেয়। যদিও গোল করতে পারেনি তারা। সবিতা সেভ করেন প্রথম পেনাল্টি কর্ণার। অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয়বার পেনাল্টি কর্ণার পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি।
গোল: ২২ মিনিটের মাথায় ম্যাচে প্রথমবার পেনাল্টি কর্ণার পেয়ে যায় ভারত। গুরজিত কউর গোল করে ১-০ এগিয়ে দেন ভারতকে।
২৩ মিনিটের মাথায় গ্রিন কার্ড দেখলেন মনিকা। ২ মিনিটের জন্য মাঠের বাইরে চলে গেলেন ভারতীয় তারকা। অস্ট্রেলিয়ার উপর চাপ বজায় রেখেছে ভারত।
২৬ মিনিটের মাথায় সালিমা মাঝমাঠ থেকে বল ধরে অস্ট্রেলিয়ার ডি বক্সে ঢুকে পড়েন। যদিও তিনি টার্গেটে শট রাখতে পারেননি।
হাফ-টাইম: দ্বিতীয় কোয়ার্টারের খেলা শেষ। ভারত পেনাল্টি কর্ণার থেকে প্রথম সুযোগেই গোল করে ১-০ এগিয়ে।
তৃতীয় কোয়ার্টার:-
তৃতীয় কোয়ার্টারের শুরুতেই উইলিয়ামসের শট বাঁচিয়ে দেন ভারতের গোলকিপার সবিতা। ৩৩ মিনিটের মাথায় খুব কাছ থেকে ভারতের পোস্ট লক্ষ্য করে শট নিয়েছিলেন অজি তারকা।
৩৪ মিনিটের মাথায় ম্যাচে ফের পেনাল্টি কর্ণার পেয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। যদিও এবারও তাকা তা গোলে পরিণত করতে পারেনি।
সমতা ফেরানোর লক্ষে মরিয়া অস্ট্রেলিয়া ভারতের অর্ধে রীতিমতো শিবির পেতেছে। ভারত যদিও জমাট রক্ষণে দূর্গ রক্ষা করে চলেছে।
দারুণ সুযোগ তৈরি করে ভারত। ডানদিক থেকে শর্মিলা দেবী বল বাড়িয়ে দেন রানির দিকে। রানি শট টার্গেটে রাখতে পারেননি।
তৃতীয় কোয়ার্টারের খেলা শেষ। সুতরাং, ম্যাচের ৪৫ মিনিট অতিক্রান্ত। বাকি রয়েছে ১৫ মিনিটের শেষ কোয়ার্টারের খেলা। ভারত এখনও এগিয়ে ১-০ গোলে। শেষ কোয়ার্টারে ব্যবধান বজায় রাখতে পারলেই শেষ চারের টিকিট পাকা করবে ভারত। শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ভারত চলতি অলিম্পিক্সে এখনও পর্যন্ত নিজেদের সেরা খেলা উপহার দিচ্ছে।
চতুর্থ কোয়ার্টার:-
শেষ কোয়ার্টারের ৫ মিনিটের খেলা অতিক্রান্ত। ভারত ১-০ লিড ধরে রেখেছে। শেষ ১০ মিনিট দূর্গ সামলাতে পারলেই বাজিমাত করবেন রানিরা।
৫২ মিনিটে জোড়া পেনাল্টি কর্ণার বাঁচাল ভারত। পরপর দু’টি পেনাল্টি কর্ণার থেকে গোল করতে ব্যর্থ হয় অস্ট্রেলিয়া। সবিতা আরও একবার ভারতের পতন রোধ করেন। চাপ বাড়ছে অস্ট্রিলায়ার উপর।
৫৪ মিনিটের মাথায় গ্রিন কার্ড দেখেন নিক্কি প্রধান। সুতরাং, ২ মিনিটের জন্য তাঁকে মাঠের বাইরে চলে যেতে হয়।
৫৭ মিনিটে ভিডিও রেফারেল নিয়ে পেনাল্টি কর্ণার পেয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচে এটি তাদের ৮ নম্বর পেনাল্টি কর্ণার। ফের গোল বাঁচান সবিতা।
৫৮ মিনিটে ফের অস্ট্রেলিয়া পেনাল্টি কর্ণার পেলেও গোল করতে পারেনি।
শেষ কোয়ার্টারেও ভারতের জালে বল জড়াতে ব্যর্থ অস্ট্রেলিয়া। ফলে ১-০ গোলে ম্যাচ জিতে সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে ভারত।