ঠাকুর যে আসলে কি ছিলেন তার কিঞ্চিতমাত্র আভাস আমরা পাই নি এবং এই বিষয়ে নূন্যতম ধারণাও আমাদের নেই

শ্রীরামকৃষ্ণদেব সম্বন্ধে স্বামীজী বলেছিলেন “ওনার শুধু চেহারাটাই ছিল মানুষের মতো। বাকি সব কিছুই ছিল অতি মানবিক। উনি যে কে ছিলেন, কোথা থেকে এসেছিলেন তার কিছুই বুঝতে পারি নি। আমি অনেক জায়গায় বিভিন্ন বিষয়ে কথা বললেও ঠাকুর সম্বন্ধে কোথাও কোন কথা বলি না। ভয় হয় নিজের মতো করে ওনাকে বর্ণনা করতে গিয়ে পাছে ওনাকে ছোট করে ফেলি।”

শিষ্য শরৎচন্দ্র চক্রবর্তী স্বামীজী বিভিন্ন মহাপুরুষের নাম উল্লেখ করে জিজ্ঞাসা করেছিলেন “আপনি কি ঠাকুরকে এনাদের সমান মনে করেন ?” স্বামীজী বলেছিলেন “তুই যাঁদের নাম করলি আমি তাঁদের সবার থেকে ঠাকুরকে বড় বলে জানি এবং মানি।” স্বামীজী শ্রীরামকৃষ্ণদেবের কৃপাধন্য গিরিশ চন্দ্র ঘোষকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “বল তো জি সি, তুমি ঠাকুর সম্বন্ধে কি বুঝেছ ?” গিরিশ ঘোষ বলেছিলেন “আমি তাঁর সম্বন্ধে আর কি বলব! আমার মতো পাপী শুধু তাঁর কৃপাতেই তোমাদের মতো কামিনীকাঞ্চন ত্যাগী বাল ব্রহ্মচারীদের সাথে এক আসনে বসার সুযোগ পায়।” এই বলে গিরিশ চন্দ্র ঘোষ কাঁদতে লাগলেন।

ভেবে অবাক লাগে, যে ঠাকুরের সমন্ধে তাঁরই সবচেয়ে প্রিয় শিষ্য স্বয়ং স্বামী বিবেকানন্দ পর্যন্ত কোন কথা বলতে সাহস পেতেন না, সেই রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব আমাদের সিনেমা, সিরিয়াল ও যাত্রাপালাতে একজন সাধারণ ন্যালাক্ষ্যাপা হয়ে উঠেছেন। ঠাকুর যে আসলে কি ছিলেন তার কিঞ্চিতমাত্র আভাস আমরা পাই নি এবং এই বিষয়ে নূন্যতম ধারণাও আমাদের নেই।

বামাখ্যাপা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.