করোনার তৃতীয় ঢেউয়েও কি জাল বিস্তার করতে পারে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকরমাইকোসিস? দ্বিতীয় ঢেউয়ে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। গরম এবং আর্দ্র আবহাওয়ার জন্য অন্য দেশের তুলনায় বেশি ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্তের হদিশ পাওয়া যায় ভারতে। কিন্তু আচমকা এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ল কেন? বা করোনা আক্রান্তদের শরীরে কোন রাস্তায় এই ফাঙ্গাস প্রবেশ করল? তার কারণ খুঁজতে নেমেছে আইসিএমআর। তারই অঙ্গ হিসাবে পূর্ব ভারতে এই রোগের জাল বিস্তারের কারণ খুঁজবে এসএসকেএম হাসপাতাল।
রাজ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্তের চিকিৎসায় কলকাতা, বাঁকুড়া এবং উত্তরবঙ্গের তিনটি হাসপাতালকে নির্বাচন করা হয়েছে। করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের বাড়বাড়ন্তের কারণ খোঁজার জন্য এই তিন হাসপাতালে চিকিৎসা হওয়া রোগীদের নিয়ে গবেষণা চালানো হবে। এ ছাড়াও পূর্ব ভারতের অন্য রাজ্যে এই রোগে আক্রান্তদের পরিসংখ্যানও খতিয়ে দেখা হবে। এসএসকেএম হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগের প্রধান সৌমিত্র ঘোষের নেতৃত্বে মাইক্রোবায়োলজির চিকিৎসক কুমকুম ভট্টাচার্য এবং ফার্মাকোলজির চিকিৎসক অভিজিৎ হাজরা এই গবেষণা চালাবেন।
করোনাকালে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্তের মধ্যে অনেকেই হাসপাতালে অক্সিজেন সাপোর্টে ছিলেন। এই রোগে আক্রান্তদের বেশির ভাগই ডায়াবিটিসে ভুগছিলেন এবং তাঁদের করোনা চিকিৎসার জন্য স্টেরয়েড ব্যবহার করা হয়েছিল। গবেষণায়, করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত অক্সিজেন এবং স্টেরয়েড, এই দুইয়ের সঙ্গে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের যোগাযোগ কতটা তা দেখা হবে।
সময়ের সঙ্গে করোনাও তার রূপ বদলেছে। করোনার বিশেষ কোনও রূপ রোগীর শরীরে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের জাল বিস্তারে সুবিধা করে দিয়েছে কি না, তাও দেখা হবে। গবেষণার সঙ্গে যুক্ত এক চিকিৎসক জানান, করোনার বিশেষ কোনও রূপের সঙ্গে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের যোগাযোগ আছে কি না তা দেখা জরুরি। তাতে তৃতীয় ঢেউয়েও করোনা রোগীদের মধ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস ছড়াতে পারে কি না সে সম্পর্কে আভাস পাওয়া যেতে পারে। একই সঙ্গে রাজ্যের বিশেষ কোনও এলাকাতেই এই ফাঙ্গাসে বেশি আক্রান্তের হদিশ মিলেছে কি না, তাও দেখা হবে।
২ অগস্ট থেকেই গবেষণার কাজ পুরোদমে শুরু হয়ে যাবে বলে জানান সৌমিত্র। আগামী চার মাসের মধ্যে এই গবেষণা শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।