টিকাপ্রাপ্তদেরও পড়তে পারে ডেল্টার হানা, তবে বাড়াবাড়ি হওয়ার সম্ভাবনা কম

করোনা ভাইরাসের ডেল্টা ভেরিয়েন্টের বিরুদ্ধে কতটা কার্যকর টিকা? সেই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছে বিশ্ব। নতুন পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী আগের তুলনায় আরও বেশি টিকা গ্রহণকারী ডেল্টায় আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে বাঁচোয়া একটাই। টিকা নেওয়া থাকলে যে কোনও ভেরিয়েন্টের সংক্রমণেই গুরুতর উপসর্গ ও হাসপাতালে ভর্তির মতো বাড়াবাড়ি এড়ানো যাবে।

অর্থাত্ করোনা টিকা নেওয়া থাকলেও সংক্রমণ হতেই পারে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন যে তাহলে টিকা নিয়ে লাভ কী? কিন্তু প্রবল শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসের সমস্যা, অক্সিজেনের চাহিদা ইত্যাদি মারাত্মক প্রভাবগুলি রুখে দেওয়া যাবে। প্রায় সব গবেষণায় এটা মেনে নেওয়া হয়েছে, যে সম্পূর্ণ টিকাপ্রাপ্তরা করোনায় আক্রান্ত হলেও হাসপাতালে চিকিৎসার প্রয়োজন প্রায় হয় না বললেই চলে৷ ফলে এখনও যাঁরা টিকা গ্রহণের ব্যাপারে উদাসীন, তাঁদের এ বিষয়ে আরও সচেতনতা প্রয়োজন। আর টিকা গ্রহণ করার পরেও করোনা বিধি মেনে চলতে হবে

এ বিষয়ে ফ্রান্সের পাস্তুর ইনস্টিটিউটের এক গবেষণা ‘নেচার’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। সেখানে টিকা গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি বলে উল্লেখ করা হয়েছে৷ রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ফাইজার বা অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার একটি ডোজ নিলে তেমন প্রতিরোধ গড়ে উঠবে না৷ তবে দ্বিতীয় ডোজের পর ইমিউনিটি কয়েক গুণ বেড়ে যায়৷

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ডেল্টা ভেরিয়েন্টে সংক্রমণে অসুস্থতা অনেকগুণ বেশি, এমনটা ভাবার কারণ নেই। বরং, এর দ্রুত হারে ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতাই বেশি উদ্বেগজনক। ডেল্টার থেকে গ্যামা, ল্যামডা ঢের শক্তিশালী, জানিয়েছেন গবেষকরা।

অন্যদিকে টিকা গ্রহণ না করা ব্যক্তিরা কার্যত ‘মিউটেশনের কারখানা’। এমনটাই জানিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইরাস বিশেষজ্ঞ ডঃ উইলিয়াম স্ক্যাফনার। তিনি জানান, সব ভাইরাসেরই মিউটেশন হয়। কিছু মিউটেশনে ভাইরাস দুর্বলও হয়। কিন্তু সেই সঙ্গে ডেল্টা ভেরিয়েন্টের মতো উদ্বেগের কারণও হয়ে দাঁড়াতে পারে। ডঃ স্ক্যাফনারের মতে, ‘এর থেকে এমন মিউটেশন হয়ে যেতে পারে, যাতে ভবিষ্যতে আরও কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হবে।’ ফলে তখন করোনা টিকা গ্রহণকারীরাও আরও শক্তিশালী সেই ভেরিয়েন্টের থেকে অসুরক্ষিত হয়ে পড়বেন। ফলে কিছু মানুষের উদাসীনতার শিকার হবেন সকলেই।

ডঃ স্ক্যাফনার জানান, মিউটেশন রুখতে দ্রুত হারে টিকাকরণ সেরে ফেলাই একমাত্র পথ। একই কথা বলেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও (WHO)। ‘যত বেশি আমরা ভাইরাসকে ছড়াতে দেব, তত বেশি ভাইরাসের চরিত্র বদলে যাবে,’ গত মাসে এমনটাই জানিয়েছে হু।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.