ভারতবর্ষের মূল সমস্যা একটি ভ্রান্ত শব্দ– ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’

‘ধর্মনিরপেক্ষতা’- শব্দবন্ধ টি নিশ্চিতভাবেই ভারতবর্ষের রাজনীতি তে সর্বাধিক উচ্চারিত ও অপপ্রয়োগ করা শব্দ।
প্রত্যেক ভাষার সঙ্গে তার সংস্কৃতি জড়িয়ে থাকে , তাই প্রত্যেক ইংরেজি শব্দের যেমন একদম ঠিক বাংলা প্রতিশব্দ সম্ভব নয় ঠিক তেমনি প্রত্যেক বাংলার একদম ঠিক ইংরেজি প্রতিশব্দ সম্ভব নয়।
Religion এর বাংলা প্রতিশব্দ ‘ধর্ম’ নয়।
‘ধর্ম’ সম্পূর্ণভাবে ভারতীয় সংস্কৃতিগত অবধারণা ।আর Religion একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের উপাসনা-পদ্ধতি।
প্রত্যেক পদার্থের যেমন নিজস্ব বৈশিষ্ট্য থাকে , ঠিক তেমনি প্রত্যেক মানুষ সমাজ , প্রকৃতি , সমগ্ৰ বিশ্বের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে , একাত্ম হয়ে , যে কর্তব্য পালন করে তাই ‘ধর্ম’।
এর মধ্যে যুক্তি-তর্ক , সমাজের প্রয়োজন অনুযায়ী রীতির পরিবর্তন হতে পারে কিন্তু উদ্দ্যেশ্য একই থাকে , সমগ্ৰ বিশ্বের কল্যাণ।
অন্যদিকে যেখানে একটিমাত্র ‘মত’ কে মানতে বাধ্য করা হয় , সমগ্ৰ বিশ্ব কে একটিমাত্র মতের অনুসারী করবার জন্য মানবাধিকার এর লঙ্ঘন করা হয় , অন্যদের সংস্কৃতি এবং সেই সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত কয়েকহাজার বছরের জ্ঞান কে ভস্মীভূত করা হয় , তা কখনোই ‘মানবধর্ম’ হতে পারে না।
ভারতবর্ষের সনাতন ধর্ম , নিজের মত প্রতিষ্ঠা করতে কখনো কোনো দেশ আক্রমণ করে নি , রক্তপাত করে নি। ভারতবর্ষে যখন শঙ্করাচার্য আসমুদ্রহিমাচল ভ্রমণ করে শাস্ত্রনির্ভর যুক্তির মাধ্যমে সনাতন ধর্মের প্রতি আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করছিলেন , দর্শনের নতুন চিন্তনে মানব ইতিহাস সমৃদ্ধ হচ্ছিল ।সেসময় কোথাও মানব সভ্যতাকে অমানবিক , অসহিষ্ণু ঘটনাবলীর সাক্ষী হতে হয় নি।
‘Religion’ এর বাংলা তাই ‘উপাসনা-পদ্ধতি’ হতে পারে , ‘ধর্ম’ নয়।সেক্যুলারিজম এর ইংরেজি অর্থ ‘not connected with religious matter’ ।তাই সেক্যুলারিজম এর অর্থ কখনোই ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ হতে পারে না।আরবীয় ও ইউরোপীয় ‘Religion’ ভারতবর্ষে প্রবেশের আগে পর্যন্ত শাক্ত , বৈষ্ণব,বৌদ্ধ,শিখ ,জৈনের মতো বিভিন্ন উপাসনা পদ্ধতি ভারতীয় ধর্মের দর্শন থেকেই পুষ্ট হয়েছে এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে এদের মধ্যে সংমিশ্রণ ঘটেছে।কোথাও নিজের সম্প্রদায়ের মত জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা দেখা যায় নি।
ইউরোপের রিলিজিয়ান এবং ভারতবর্ষের ‘ধর্ম’ এর মধ্যে পার্থক্য বোঝাতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘ভারতবর্ষের ইতিহাস’ প্রবন্ধে বলেছেন……..

“গীতায় জ্ঞান প্রেম ও কর্মের মধ্যে যে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্য-স্থাপনের চেষ্টা দেখি তাহা বিশেষরূপে ভারতবর্ষের। য়ুরোপে রিলিজন বলিয়া যে শব্দ আছে ভারতবর্ষীয় ভাষায় তাহার অনুবাদ অসম্ভব; কারণ, ভারতবর্ষ ধর্মের মধ্যে মানসিক বিচ্ছেদ ঘটিতে বাধা দিয়াছে–আমাদের বুদ্ধি-বিশ্বাস-আচরণ, আমাদের ইহকাল-পরকাল, সমস্ত জড়াইয়াই ধর্ম। ভারতবর্ষ তাহাকে খন্ডিত করিয়া কোনোটাকে পোশাকি এবং কোনোটাকে আটপৌরে করিয়া রাখে নাই। হাতের জীবন, পায়ের জীবন, মাথার জীবন, উদরের জীবন যেমন আলাদা নয়–বিশ্বাসের ধর্ম, আচরণের ধর্ম, রবিবারের ধর্ম, অপর ছয়দিনের ধর্ম, গির্জার ধর্ম, এবং গৃহের ধর্মে ভারতবর্ষ ভেদ ঘটাইয়া দেয় নাই। ভারতবর্ষের ধর্ম সমস্ত সমাজেরই ধর্ম, তাহার মূল মাটির ভিতরে এবং মাথা আকাশের মধ্যে; তাহার মূলকে স্বতন্ত্র ও মাথাকে স্বতন্ত্র করিয়া ভারতবর্ষ দেখে নাই–ধর্মকে ভারতবর্ষ দ্যুলোকভূলোকব্যাপী মানবের-সমস্ত-জীবন-ব্যাপী একটি বৃহৎ বনস্পতিরূপে দেখিয়াছে।”

সাহিত্য সম্রাট ঋষি বঙ্কিমচন্দ্রের “ধর্ম কি?” প্রবন্ধ থেকেও ‘ধর্ম’ আর ‘রিলিজিয়ন’ এর বিভেদ স্পষ্ট হয়……
“গুরু। ধর্ম্ম কথাটার অর্থ উল্‌টাইয়া দিয়া তুমি গোলযোগ উপস্থিত করিলে। ধর্ম্ম শব্দটা নানা প্রকার অর্থে ব্যবহৃত হয়। অন্যান্য অর্থে আমাদিগের প্রয়োজন নাই; তুমি যে অর্থে এমন ধর্ম্ম শব্দ ব্যবহার করিলে, উহা ইংরেজি Religion শব্দের আধুনিক তর্জমা মাত্র। দেশী জিনিস নহে।

শিষ্য। ভাল, Religion কি, তাহাই না হয় বুঝান।

গুরু। কি জন্য? Religion পাশ্চাত্ত্য শব্দ, পাশ্চাত্ত্য পণ্ডিতেরা ইহা নানা প্রকারে বুঝাইয়াছেন; কাহারও সঙ্গে কাহারও মত মিলে না।#

শিষ্য। কিন্তু রিলিজনের ভিতর এমন কি নিত্য বস্তু কিছুই নাই, যাহা সকল রিলিজনে পাওয়া যায়?

গুরু। আছে। কিন্তু সেই নিত্য পদার্থকে রিলিজন বলিবার প্রয়োজন নাই; তাহাকে ধর্ম্ম বলিলে আর কোন গোলযোগ হইবে না।”

ভারতবর্ষীয় সমাজ,রাষ্ট্র, এমনকি ব্যক্তিগত জীবন যে সমস্ত নিয়ম দ্বারা পরিচালিত হতো , তাকেই ‘ধর্ম’ বলা হতো।
মনুসংহিতায় বলা হয়েছে ,
“ধৃতিঃ ক্ষমা দমোস্তেয়ং শৌচমিন্দ্রিয়নিগ্রহঃ।
ধীর্বিদ‍্যা সত‍্যমক্রোধো দশকং ধর্ম লক্ষণম্।।”

অর্থাৎ ; ধৈর্য, ক্ষমা, আত্মনিয়ন্ত্রণ, চুরি না করা, পবিত্রতা, ইন্দ্রিয় সংযম, ধী(জ্ঞানেরও অধিক), বিদ‍্যা(পরা ও অপরা), সত‍্য এবং অক্রোধ এই দশটি ধর্মের লক্ষণ।
আবার ,
‘যতোহভ্যুদয়নিঃশ্রেয়সসিদ্ধিঃ স ধর্মঃ’

অর্থাৎ ,যে ব্যবস্থা আমাদের আকাঙ্ক্ষাগুলির লাগাম টেনে ধরতে সক্ষম করে তোলে ,উৎসাহ যোগায় ,চরম ভোগের মধ্যে জীবনযাপন করলেও যে ব্যবস্থা মানুষের মধ্যে সেই স্বর্গীয় আনন্দ বা পরম সত্যকে উপলব্ধির যোগ্যতা এনে দেয় তারই নাম ‘ধর্ম’।
ধর্মের সঙ্গে যুক্ত সামাজিক দিকটি হলো—
“ধারণাৎ ধর্মমিত্যাহুঃ ধর্ম ধারায়তি প্রজাঃ’
অর্থাৎ, যে শক্তি ব্যক্তিসমূহ কে একত্রে আনে এবং সমাজ রূপে তাদের ধরে রাখে তারই নাম ধর্ম।
এই দুই সংজ্ঞাকে জুড়লে দেখা যায় ধর্ম স্থাপন এর অর্থ হলো এমন একটা সংঘবদ্ধ সামাজিক জীবন গড়ে তোলা যেখানে প্রত্যেকেই এই সমাজের অপরাপরের সঙ্গে একাত্মতা অনুভব করবে, অন্যের পার্থিব জীবনকে অধিকতর সমৃদ্ধ ও সুখী করে তোলার জন্য ত্যাগের প্রেরণায় উদ্দীপ্ত হবে এবং সেই আধ্যাত্মিক জীবনকে বিকশিত করবে যা পরম সত্যের উপলব্ধির অভিমুখী হয়।

‘ধর্ম’ প্রসঙ্গে স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন “অন্যান্য জাতির পক্ষে ধর্ম—সংসারের অন্যান্য কাজের মত একটা কাজ মাত্র। রাজনীতি-চর্চা আছে, সামাজিকতা আছে, ধন ও প্রভুত্বের দ্বারা যাহা পাওয়া যায় তাহা আছে, ইন্দ্রিয়নিচয় যাহাতে আনন্দ অনুভব করে, তাহার চেষ্টা আছে। এই-সব নানা কার্যের ভিতর এবং ভোগে নিস্তেজ ইন্দ্রিয়গ্রাম কিসে একটু উত্তেজিত হইবে—সেই চেষ্টার সঙ্গে সঙ্গে একটু-আধটু ধর্মকর্মও অনুষ্ঠিত হয়। এখানে—এই ভারতের কিন্তু মানুষের সমগ্র চেষ্টা ধর্মের জন্য; ধর্মলাভই তাহার জীবনের একমাত্র কার্য।”
(স্বামী বিবেকানন্দ রচনাবলী ৫ম খন্ড)
ভারতের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি, বিশ্ববরেণ্য দার্শনিক সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ তাঁর একটি প্রবন্ধ
“Dharma: The Individual And The Social Order in Hinduism” তে ভারতবর্ষের ‘ধর্ম’ প্রসঙ্গে বলেছেন
“While the spontaneous activities of interest and desire are to be accepted, their full values cannot be realized if their action is unrestrained. There must be a rule, a guidance, a restraint. Dharma gives coherence and direction to the different activities of life. It is not a religious creed or cult imposing an ethical or social rule. It is the complete rule of life, the harmony of the whole man who finds a right and just law of his living. Each man and group, each activity of soul, mind, life, and body, has its dharma.

While man is justified in satisfying his desires, which is essential for the expression of life, to conform to the dictates of his desires is not the law of his being. He will not get the best out of them if he does not conform to the dharma or the rule of right practice.

From righteousness ( dharma ) flow forth pleasure and profit. Why then do we not follow righteousness?’ Dharma tells us that while our life is in the first instance for our own satisfaction, it is more essentially for the community and most of all for that universal self which is in each of us and all beings. Ethical life is the means to spiritual freedom, as well as its expression on earth.”
ধর্মানুরাগী রাধাকৃষ্ণাণ এর ‘The Hindu View of life’ , ‘Religion & Society’ ইত্যাদি বই তে এই ভাবই প্রাধান্য পেয়েছে যে , যাই আমাদের সমাজ সংস্কারের পরিকল্পনা হোক, রাজনীতি বা অর্থনীতির ক্ষেত্রে যে বিপ্লবের প্রচেষ্টাই আমরা করি না কেনো ,কোনো কিছুই সফল হবে না যদি না তার পিছনে ধর্মের প্রেরণা থাকে।
সংবিধান খসড়া কমিটির প্রধান ডঃ বি আর আম্বেদকর সনাতন ধর্ম ত্যাগ করে বৌদ্ধ ধর্ম গ্ৰহণ করেছিলেন কিন্তু ধর্ম সম্পর্কে তাঁর মনে কোনো বিরূপ মনোভাবের সৃষ্টি হয় নি।তাই ভারতীয় সংবিধানের মাধ্যমে ভারতবর্ষ কে ‘ধর্ম’ থেকে দূরে নিয়ে যাওয়ার কোনো প্রয়াস তিনি করেন নি।
ভারতীয় সংবিধানের প্রথম সংস্করণের বিভিন্ন পাতায় শান্তিনিকেতনের শিল্পী রামমনোহর সিনহা ও নন্দলাল বসুর হাতে আঁকা বিভিন্ন চিত্র রাষ্ট্রপরিচালনার সর্বক্ষেত্রে ভারতীয় ধর্মের মাহাত্ম্য প্রকাশ করে।যেমন নাগরিকদের মূল কর্তব্য যে পৃষ্ঠায় লেখা হয়েছে , সেখানে রাম-সীতা-লক্ষণ ত্রয়ীর ছবি আছে।এ থেকেই প্রমাণিত সংবিধান প্রণেতারা রাষ্ট্রের প্রতি ব্যক্তির কর্তব্য ও ব্যক্তির অধিকার সুনিশ্চিত করতে ভারতীয় ধর্ম কেই আদর্শ হিসেবে গ্ৰহণ করেছিলেন।
কিন্তু ১৯৭৫ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী অগণতান্ত্রিক ভাবে সংবিধানে ‘Secular’ কথাটি যুক্ত করেন। রাষ্ট্রপরিচালনায় চার্চের আধিপত্য কমাতে ইউরোপে সৃষ্ট ‘Secular’ শব্দটি ভারতবর্ষে আমদানি করা অনুকরণের এক নির্লজ্জ দৃষ্টান্ত।
পাশ্চাত্য সভ্যতার সাময়িক উন্নতিতে প্রভাবিত হয়ে তাদের অন্ধ অনুকরণ বিষয়ে সাবধান করে
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিজের ‘প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য’ প্রবন্ধে বলেছেন “বস্তুত প্রত্যেক সভাত্যারই একটি মূল আশ্রয় আছে। সেই আশ্রয়টি ধর্মের উপরে প্রতিষ্ঠিত কি না তাহাই বিচার্য। যদি তাহা উদার ব্যাপক না হয়, যদি তাহা ধর্মকে পীড়িত করিয়া বর্ধিত হয়, তবে তাহার আপাত-উন্নতি দেখিয়া আমরা তাহাকে যেন ঈর্ষা এবং তাহাকেই একমাত্র ইপ্সিত বলিয়া বরণ, না করি।”

‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দটি কে তুষ্টিকরণের জন্য স্বাধীনতার আগে ও পরে ভারতীয় রাজনীতিতে বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা হয়েছে।’ধর্মনিরপেক্ষতা’র গোলকধাঁধায় ফেঁসে , সমাজ ও রাষ্ট্র নির্মাণে ভারতবর্ষের দুই মহাকাব্য রামায়ণ ও মহাভারত পাঠ কে গুরুত্বহীন করে দেওয়া হলো।
শুধু তাই নয় ; সনাতন ভারতীয় সংস্কৃতির উদারভাবের সুযোগ নিয়ে এমন একটি মতবাদের সঙ্গে আপস করা হয়েছে বারবার, যা অন্যমতের সঙ্গে কোনো কালে, কোনো দেশে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাসী নয় , শুধুমাত্র সংখ্যার জোরে সারা পৃথিবীতে নিজস্ব মত-প্রতিষ্ঠাই যার চরম লক্ষ্য।এই ধরনের আপস সরাসরি ভারতবর্ষের অন্য মত গ্ৰহণের , যুক্তি দ্বারা মত প্রতিষ্ঠার অভ্যাস কেই কুঠারাঘাত করে।
১৯১৯ সালে , গান্ধিজীর খিলাফত আন্দোলন কে সমর্থন করা-এরকমই একটি আঘাত।ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের ভারতবর্ষের ‘ধর্ম’ থেকে বিচ্যুত হওয়ার সেই শুরু।এরপর ‘ভারত মাতা’র বন্দনা যা স্বাধীনতা সংগ্ৰামী বীর যুবকরদের আত্মোৎসর্গে উদ্বুদ্ধ করতো , সেই ‘বন্দেমাতরম্’ সঙ্গীত জাতীয় কংগ্রেসের অধিবেশনে সম্পূর্ণ গাওয়া নিষিদ্ধ হলো ১৯৩৭ সালে , শুধুমাত্র সেই অসহিষ্ণু মতবাদের সঙ্গে আপস করতে।বলা যায় , জাতীয় কংগ্রেস ‘বন্দেমাতরম্’ কে খন্ডিত করে যে অধার্মিক পথে নিজেদের গতি অব্যাহত রাখলো তারই শেষ পরিণতি মুসলিম লীগের সঙ্গে আপস করে ‘ভারত-ভাগ’।

মানব ধর্ম থেকে বিচ্যুত হয়েই তৎকালীন ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল কংগ্রেস আর্টিকেল ৩৭০ এর মতো মানবাধিকার বিরোধী একটি ধারা সংযোজন করে কাশ্মিরী হিন্দুদের উপর অত্যাচার ও পরে পলায়নের জমি প্রস্তুত করে।
কিন্তু দেরিতে হলেও ভারতবর্ষের ধর্মপথে চলা শুরু হয়েছে। আর্টিকেল ৩৭০ বাতিল , কুপ্রথা ট্রিপল তালাক বাতিল ও প্রতিবেশী দেশের অত্যাচারিত সংখ্যালঘু হিন্দু ও অন্যান্য উপাসনা পদ্ধতির মানুষদের আশ্রয়দানের জন্য নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাশ হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে রাম মন্দির পুনর্নির্মাণ এ ভারতবর্ষের সাংস্কৃতিক ঐক্যের ভিত্তি দৃঢ়তর হয়েছে।
সারা বিশ্ব ‘বিশ্ব যোগ দিবস’ পালন করে ভারতবর্ষের ধর্মের ব্যবহারিক দিকের সঙ্গে একাত্ম হয়েছে।অনুন্নত দেশগুলিতে বিশল্যকরণীর মতো করোনা মহামারীর ভ্যাক্সিনের যোগান দিয়ে ভারতবর্ষের সনাতন ধর্মের মন্ত্র ‘বসুধৈব কুটুম্বকম্’ সারা বিশ্বে ধ্বনিত হচ্ছে। সমগ্ৰ বিশ্বের আস্থা অর্জনে সফল বর্তমান ভারত তাই ধর্মের পথে অবিচল থেকেই শান্তি ও মৈত্রীর বাণি নিয়ে নিজেকে বিশ্বগুরুর আসনে প্রতিষ্ঠিত করবে।

(লেখক একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যার শিক্ষক)

পিন্টু সান্যাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.