আপাত দৃষ্টিতে মুসলিম দেশগুলোর সাথে চীনের সম্পর্ক মধুর মনে হলেও বাস্তবেও কি তাই?

ইসলামকে গিলতেও পারছেনা , আবার ফেলতেও পারছেনা , এমনি টানাপোড়েনের মধ্যে আছে চীন এবং এই নিয়ে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যেও বাড়ছে অন্তর্দ্বন্দ্ব।

চিনে বসবাসরত ১০ মিলিয়ন উইঘুর মুসলিমদের কি চরম দুরবস্থার মধ্যে আছে তা সবারই জানা।
সূত্রের খবর , চীন সেনার হাতে ইতিমধ্যেই প্রাণ হারিয়েছে প্রায় ৫ লক্ষ উইঘুর মুসলিম , বাকি কয়েক লক্ষ্য আছে ডিটেনশন ক্যাম্পে।
চিনে মুসলিমদের দাড়ি রাখা, নামাজ পড়া , কোরান পড়া , এমনকি প্রকাশ্যে আল্লাহর নাম নেওয়াও বেআইনি। পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম মুসলিম বিদ্বেষী দেশ হিসাবে চীনের নাম গোটা দুনিয়া জানে।

এদিকে সদ্য আফগানিস্তানে ক্ষমতায় আসা তালিবানরা চীনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ , কারণএকটাই, অর্থ।
আফগানিস্তানকে নতুন ভাবে গড়তে চাই বিপুল অর্থ , আর তাই কট্টর জিহাদি সৈনিক তালিবান রাও বিক্রি হয়ে গেলো চীনের অর্থের কাছে ।
তালিবানরা জানিয়েছে উইঘুর ও চীনের দ্বন্দে তারা চীনের পক্ষে, এই ধরণের বক্তব্য সত্যি অকল্পনীয়। অর্থের জোর , বড় জোর।

অন্যদিকে চীনের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে পূর্ব তুর্কমেনিস্তানের ইসলামিক মুভমেন্ট-এর (ETIM)জঙ্গিরা , যারা উইঘুর মুসলিমদের অন্যতম সমর্থক ও একই সাথে তালিবানদের সহযোগী।
এদিকে চীন জানিয়েছে যে ETIM এর সাথে আল-কায়দার সরাসরি যোগাযোগ আছে এবং ETIM চায় চীনের পশ্চিমপ্রান্ত যেখানে উইঘুরদের বাস সেই অঞ্চল ভেঙে পৃথক পূর্ব তুর্কমেনিস্তান নাম ইসলামিক দেশ তৈরী করতে।

এখানে উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হলো কিরঘিজস্তান , কাজাকিস্তানের সাথে তারা পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের ভূখণ্ড নিয়ে ওই ইসলামিক দেশ তৈরী করতে চায়।

এই তত্ত্বে আবার আপত্তি আছে তালিবানদের কারণ তারা আফগানিস্তান ভাঙতে চায়না , বরং তারা পাকিস্তানের কিছু জায়গা দখল করতে চায়।

এদিকে তালিবানদের সাথে পাকিস্তান সরকারের ভালো সম্পর্ক থাকলেও তালিবানদের এই তত্ত্বে আছে তাদের ঘোর আপত্তি।
এই বিষয়ে পাকিস্তানের সাথে তালিবান ও ETIM এর চরম বিরোধ আছে।

অন্যদিকে ETIM এর রাগ আছে পাকিস্তান ও তালিবানদের উপর কারণ তারা কট্টর মুসলিম বা ইসলামের সমর্থক হয়েও পৃথিবীর অন্যতম ইসলাম বিরোধী দেশের কাছে শুধুমাত্র অর্থের কাছে বিক্রি হয়ে গিয়েছে।

মাঝখানথেকে চীন পড়েছে ফাঁপরে , চীন তাদের দেশ থেকে মুসলিমদের নিশ্চিন্ন করতে চায় আবার একই সাথে তালিবান ও পাকিস্তানের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখতে চায়।

এদিকে আল-কায়দা পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে ETIM কে এবং তারা এটাও জানিয়েছে যে চীন হচ্ছে ইসলামের সব চেয়ে বড়ো শত্রু।

ইসলাম ও চীনের অম্ল মধুর সম্পর্কের এই অদ্ভুত দ্বন্দ্ব বা গোলকধাঁধার সত্যি কি কোনো সঠিক উত্তর আছে, নাকি এর পুরো অর্থই লুকিয়ে আছে অর্থনীতির উপর?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.