ডিএমকে জয়লাভ করার পর একজন খ্রিস্টান ধর্মগুরুর ভারত মাতা, প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’কে ক্রমাগত নিন্দায় জর্জরিত করা এবং তারসাথে হিন্দুদের বিরুদ্ধে একরাশ ঘৃণা, ক্ষোভ উগরে দেওয়ার ভিডিও ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
ঐ পাদ্রি আরও বলেছেন যে “খ্রিস্টান ও মুসলমানদের ভিক্ষার দানেই আজ ডিএমকে জিততে পেরেছে”।
কন্যাকুমারী জেলার আরুমানাই পৌরসভার একটি গির্জায় খ্রিস্টান ও ইসলামপন্থীরা যৌথভাবে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় পাদ্রি জর্জ পোনাইয়া বলেন, “এইচআরএন্ডসিই( দ্য হিন্দু রিলিজিয়াস অ্যান্ড চ্যারিটেবল্ এনডোওম্যান্টস্ ডিপার্টমেন্ট) মন্ত্রী শেখর বাবু যতই মন্দিরের কুম্বাবিশেগম পরিদর্শন করুন, যতই মন্দিরে পোশাক না পরে পূজা করুন না কেন, কোনও হিন্দু তাদের (ডিএমকে) পক্ষে ভোট দেয়নি। এই জয়ের পিছনে অবদান না তো মান্ডাইকাডু আম্মান মন্দিরের উপাসকদের আছে, না অন্য কোনো হিন্দুদের। বরং খ্রিস্টান ও মুসলমানদের দেওয়া ভিক্ষাতেই ডিএমকে জিতেছে। এটা কখনোই ডিএমকে’র ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে আপনারা নিজেদের ক্ষমতায় জিতেননি”।
সাথে আরও জানান যে তিনি ইতিমধ্যেই ডিএমকে বিধায়ক প্রিন্সকে বলেছেন— আজ যে ডিএমকে জিতেছে, তার অন্যতম প্রধান কারণ হ’ল জনসাধারণকে খ্রিস্টান ধর্মগুরুদের দেওয়া নির্দেশ এবং তাদের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে খ্রীষ্টান কর্মীদের নিরলস প্রচার।
তিনি আরও বলেন, “আমরা ডিএমকে’র কন্যাকুমারী জেলা সেক্রেটারী সুরেশ রাজনকে জানিয়েছিলাম যে আমরা নাগেরকয়েলে একটি সভা চলাকালীনই সেখানে প্রচার করব। কিন্তু তিনি সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেন যেহেতু এটা ডিএমকে-র বিরুদ্ধে হিন্দু ভোটারদের সংঘবদ্ধ করতো। ফলস্বরূপ, বিজেপির এমআর গান্ধী নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন।
“তিনি দাবি করেছিলেন যে তিনি জুতো পরে মাটিতে পা রাখবেন না কারণ তাঁর কাছে এই মাটি দেবী স্বরূপ “— বিজেপি বিধায়ক এমআর গান্ধীর এই বক্তব্য প্রসঙ্গে পাদ্রি বলেন যে, “আমি মাটিতে হাঁটার সময় জুতো পরে থাকি কারণ আমি চাই না আমার পায়ে ভারতমাতার ময়লা স্পর্শ করুক।”
তিনি একপ্রকার দাবি করেছেন যে তামিলনাড়ু সরকারের উচিৎ আমাদের বিনামূল্যে পাদুকা(জুতো) সরবরাহ করা যাতে ভারতমাতার মাটিতে হাঁটার ফলে আমাদের পায়ে ফুসকুড়ি বা চুলকানি না হয়। এই ‘ভুমা দেবী'(ভারতমাতা) একজন বিপজ্জনক মহিলা।
তিনি হিন্দুদের সতর্ক করার সুরে জানিয়েছেন— “আমরা (সংখ্যালঘুরা) একসময় ৪২% ছিলাম এবং এখন আমরা কন্যাকুমারীর মোট জনসংখ্যার ৬২%। শীঘ্রই, আমাদের জনসংখ্যা ৭০% অতিক্রম করবে। আমরা আমাদের জনসংখ্যা এই বৃদ্ধি অব্যাহত রাখব এবং কেউ এটা থামাতে পারবে না। এটা হিন্দুদের জন্য একটা সতর্কবার্তা বলা যেতে পারে। আমরা বিজেপি বা আরএসএসকে ভয় পাই না। আপনারাও আমাদের থামাতে পারবেন না”।
তিনি আরও বলেন, যে ঈশ্বরকে আমরা বিশ্বাস করি, সেই পরমেশ্বর এখনও যদি সত্যিই বেঁচে থাকেন তাহলে অবশ্যই প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের শেষ জীবন খুবই দুর্ভাগ্যজনক হবে এবং আমরা দেখতে পাবো অমিত শাহ ও মোদীকে কুকুর এবং কৃমিতে গ্রাস করছে।
জর্জ পোনাইয়ার মতো ধর্মান্ধদের জন্যই আজ দেশে ধর্মীয় কলহ ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। রাজ্যে বিরোধী দল এবং হিন্দু সংগঠনগুলির চাপে কন্যাকুমারী থেকে যদিও জর্জকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ, কিন্তু তিনি ধর্মীয় বিভেদকে উস্কে দেওয়ার সুরে যে ভাষন তথা হুমকি দিয়েছেন সেই ভিডিও এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।