তালিবানের অত্যাচারের ইতিবৃত্ত: পাকিস্তান ও জেহাদি মিলিশিয়াদের দিকে তাকিয়ে থাকা খালিস্তানপন্থীদের মধ্যে ত্রাহি রবের মাঝে প্রশ্ন খালিস্তানের মরীচিকায় বিভোর বিচ্ছিন্নতাবাদী শিখদের ভবিষ্যৎ কি? বলির পাঁঠা হলো কিন্তু বেচারা নিরীহ শিখরা, CAA বিরোধীরাই বা এবার কি বলবেন

আফগানিস্তানের কাবুলের গুরুদ্বারা প্রমুখ ও বিশিষ্ট শিখ নেতা গুরনাম সিং জানিয়েছেন যে তালিবানরা আফগানিস্তান দখল নেওয়ার পরেই শুরু হয়ে গিয়েছে আফগানিস্তানে শিখ ও হিন্দুদের উপর ভয়ানক অত্যাচার।
অমুসলিমদের সম্পত্তি লুট, খুন , মেয়েদের ধর্ষণ , এগুলি মোটামুটি ইসলামিক দেশগুলোর কৃষ্টির অন্যতম অঙ্গ , আর তালিবানরা তাদের সংস্কৃতি সঠিক ভাবে পালন করছে, কিন্তু এর ফলে দুর্বিসহ হয়ে উঠছে আফগানিস্তানে থাকা হিন্দু ও শিখদের জীবন।

ইতিমধ্যেই আফগানিস্তানের শিখ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের তরফে কাবুল গুরদ্বারার প্রধান গুরনাম সিং ভারত সরকারের কাছে আবেদন করেছে নতুন নাগরিকত্ব আইন (CAA)মাধ্যমে যেন আফগানিস্তানের হিন্দু ও শিখদের যেন ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়।
তবে এখনো পর্যন্ত কোনো জবাব সে ভাবে আসেনি ভারত সরকারের পক্ষ থেকে।

ঘটনা অনাকাঙ্খিত কিন্তু ধর্মের কল বাতাসে নড়ে, CAA বিরোধীরাই বা এবার কি বলবে?

এদিকে সূত্রের খবর, আফগানিস্তানে অত্যাচারিত হিন্দু ও শিখরা যেন ভারতে এসে নাগরিকত্ব আইনের মাধ্যমে নাগরিকত্ব না পান তার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে বিরোধীরা।

এই গৃহ বিবাদের মধ্যেই ভারত সরকার আফগানিস্তানের হিন্দু ও শিখদের সুরক্ষা দেওয়ার ব্যাপারটি খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখছে বলে জানা গিয়েছে।

ইতিমধ্যে আরেকটি সম্ভাবনাও তৈরী হয়েছে।
আফগানিস্তানের শিখদের সমর্থনে এগিয়ে এসেছে কানাডার বেশ কিছু বড় শিখ সংগঠন , যেমন মাম্মীত সিংহ ভুল্লার ফাউন্ডেশন , খালসা এইড কানাডা , ওয়ার্ল্ড শিখ অর্গানাইজেশন।
এই সংগঠনগুলির দাবি ভারত সরকার কখন কি করবে সেই ভরসায় না থেকে কানাডা সরকার যেন আফগানিস্তানে অত্যাচারিত হিন্দু ও শিখদের কানাডা তে আশ্রয় দেয়।

সূত্রের খবর গোলমালটা বেঁধেছে ঠিক এইখানেই, কারণ কানাডার বেশির ভাগ শিখ সংগঠন (যার মধ্যে পূর্বে উল্লেখ করা শিখ সংগঠন গুলোর নাম আছে ) খালিস্তান গঠনের পক্ষে।
এদের অনেকের সাথেই পাকিস্তানের ও আফগানিস্তানের সম্পর্ক ভালো।
বহুদিনের অভিযোগ তাদের মধ্যে গোপনে আর্থিক লেনদেন ও হয় এবং ভারতকে বিপদে ফেলতে পাকিস্তান কানাডার শিখদের বা শিখ সংগঠনদের নানা ভাবে সাহায্য করে যাতে খালিস্তানি মুভমেন্টকে আরো জোরদার করা যায় ও ভারত কে সব দিক দিয়ে বিপদে ফেলা যায় ।
এদিকে আফগানিস্তানে শিখ ও হিন্দুদের উপর তালিবানদের প্রবল ও অমানবিক অত্যাচারের ফলে কানাডার খালিস্তান পন্থী শিখ ও শিখ সংগঠনের মধ্যেই ব্যাপক ফাটল দেখা দিয়েছে।

এখন প্রায় অর্ধেকরও বেশি শিখ ও তাদেরই সংগঠন , যারা গতকাল পর্যন্ত পাকিস্তান বা আফগানিস্তানের মুসলিমদের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে খালিস্তানি আন্দোলন করতে পিছুপা হতেন না , আজ তারাই হয়ে উঠেছেন পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মুসলিমদের ঘোর বিরোধী।
এখন তাদের সাফ বক্তব্য , পবিত্র খালিস্তানের স্বপ্ন কখনোই নিজেরই শত্রুর টাকায় বা সমর্থনে নিয়ে পূরণ করা সম্ভবও নয় উচিতও নয় কারণ তা পবিত্র শিখ ধর্ম এর পক্ষে চরম অপমানের ও অবমানকর।

গোঁড়া খালিস্তানি সমর্থকেরা কানাডা তে ক্রমশ সংখ্যালঘু হয়ে যাচ্ছে এবং এরই সাথে কানাডাতে জাতীয়তাবাদী তথা রাষ্ট্রবাদী শিখদের আবার পুনরুত্থান হচ্ছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।

তালিবানের আফগানিস্তান দখল ও সেই খানে হিন্দু ও শিখদের প্রতি তুমুল অত্যাচার এর ঘটনার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে পরিষ্কার যে নাগরিকত্ব আইন কতটা প্রয়োজন।
একই সাথে দীর্ঘদিন ধরে কানাডাতে পাকিস্তানের টাকায় বিপুল ভাবে বাড়তে থাকা খালিস্তানি সমর্থন ও সংগঠনগুলিকে একটা মোক্ষম ধাক্কা খেলো বলা চলে।
আফগানিস্তানে তালিবান বিজয়ের ঘটনা পাকিস্তানের আই এস আইয়ের টাকায় ও অস্ত্রের মদতে গড়ে উঠা খালিস্তানি আন্দোলনকে জোর ধাক্কা দিলো বলা চলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.