সম্প্রতি উত্তরাখন্ডের সীমানায় ফের শুরু হয়েছে চিনের দাপাদাপি। চিনের পিপল লিবারেশন আর্মির ৩৫ থেকে ৪০ জনের একটি সৈন্যদলকে টহলদারি করতে আবারও দেখা গিয়েছে। গত বছরের লাদাখের গালোয়ান ভ্যালি সীমান্তে ভারত চিন সংঘর্ষের বিবাদ এখনও চলছে। তাঁর মধ্যেই চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রন রেখা বরাবর তাদের সক্রিয়তা বাড়িয়েই চলেছে।
এএনআই সূত্রের খবর, উত্তরাখন্ডের চামোলি জেলার বারাহোতি এলাকার সামনে প্রকৃত নিয়ন্ত্রন রেখার কাছে চিনের অতি সক্রিয়তা লক্ষ্য করা গেছে আচমকাই। সীমান্তে শুরু করেছে টহলদারি। এমনকি তাদের বায়ুসেনা ঘাঁটিতে ড্রোন ও হেলিকপ্টারের আনাগোনা বেড়েছে। তবে ভারতীয় সেনাও সতর্ক হয়েছে এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। একই সঙ্গে ভারতীয় এয়ারবেসকেও সক্রিয় করে তোলা হয়েছে বলে জানা গেছে।
সরকারি আধিকারিক সূত্রে জানা গেছে, চিনা ফৌজ কিছু দিন আগে ঘোড়া নিয়ে আসে এবং তাদের কিছু চিহ্ন ফেলে রেখে যায়। মূলত তারা বর্ষাকালের পরে আসে কিন্তু এবার তারা আগেই এসেছে এবং তাদের সক্রিয়তা পূর্বের তুলনায় অনেকাংশে বাড়িয়েছে। এই ধরনের ঘটনা এই প্রথম নয়, উত্তরাখন্ডের আকাশে একাধিকবার চিনের ড্রোন দেখা গিয়েছে। সীমান্তবর্তী এই বারাহোতি এলাকাকে নিজেদের এলাকা বলেও চিন দাবি করেছে বহুবার।
প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর সিকিম, অরুণাচল প্রদেশ এবং লাদাখে ইদানিং চিনের সামরিক কার্যকলাপ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। জুনের শেষের দিকেই চিনের ৫০ হাজার সেনা মোতায়েনের খবর সামনে এসেছিল। সঙ্গে সীমান্তে বসতি স্থাপন করা, বায়ুসেনা ঘাঁটি বাড়ানো এবং পরিকাঠামো বৃদ্ধি করার চিনের তৎপরতা উদ্বেগ বাড়িয়েছে ভারত সরকারের।
তবে উল্টোদিকে ভারতও সামরিক পরিকাঠামো ততটাই শক্তিশালী করে তুলেছে। চিনের বিরুদ্ধে সমস্ত রকম পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে সক্ষম ভারতও, বলে দাবি করেছেন আধিকারিকরা।
গত বছর মে মাসে লাদাখের গালোয়ানে সংঘর্ষ হওয়ার পর এই ধরনের ঘটনা এড়াতে সীমান্তবর্তী ইস্টার্ন, সেন্টার এবং ওয়েস্টার্ন সেক্টরে সেনা মোতায়েন বাড়িয়ে দিয়েছে ভারত। ইতিমধ্যেই চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত এবং সেন্ট্রাল আর্মি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াই ডিমরি সেন্ট্রাল সেক্টর পরিদর্শন করতে গিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে এসেছেন, সেন্ট্রাল সেক্টরের অন্তর্বর্তী এই বারাহোতি এলাকা।
চিনের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত নিয়ে বিবাদ যেমন চলছে বহু দিন ধরেই তেমনই এই নিয়ে মিমাংসার কূটনৈতিক আলোচনাও চলছে ততদিন ধরেই। কিন্তু এখনও তাঁর সুরাহা হয়ে ওঠেনি এবং ভবিষ্যতে কবে হবে তাও অনুমান করতে পারছেন না বিশেষজ্ঞ মহল। তাদের দাবি, বার বার কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে মিমাংসা করার কথা বলা হলেও বাস্তবিক চিত্র কিন্তু অন্য কথা বলছে।