সম্প্রতি আফগানিস্তানে তালিবানের হাতে নিহত হওয়া পুলিৎজার বিজয়ী চিত্রসাংবাদিকের অন্তিম পরিণতি ফুটবলের পরিভাষায় আত্মঘাতী গোল বা same side goal অর্থাৎ own goal ছাড়া আর কি বা বলা যায়?
কে ছিলেন এই সিদ্দিকী ?
জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া থেকে অর্থনীতি নিয়ে পাস করার পর ওই একই জায়গা থেকে মাস কমিউনিকেশন নিয়ে পোস্ট গ্রাজুয়েট করে সাংবাদিকতা তে পদার্পন করে দানিশ।
বিভিন্ন প্রাদেশিক ও জাতীয় মিডিয়া তে কাজ করার পর রয়টার্সে যোগদান।
ক্যারিয়ারের প্রথম থেকেই হিন্দু ও ভারত বিরোধী সাংবাদিকতার সংস্কৃতির সাথে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন সিদ্দিকী।
বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন পর্যায়ে, বিভিন্ন ভাবে, বিভিন্ন আকার ইঙ্গিতে তিনি তার সুপ্ত হিন্দু ও ভারত বিদ্বেষ ও একই সাথে তার ইসলামিক সাম্রাজ্যবাদের প্রতি নিষ্ঠা ও একাত্মবোধ তুলে ধরেছেন তার বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে।
দানিশের কীর্তি ভারতবিরোধীদের হৃদয়পটে অম্লান থাকারই কথা। কাশ্মীরে জিহাদের মাধ্যমে হিন্দু নিধন যজ্ঞকে পূর্ণ সমর্থন জানানো , কাশ্মীরে ৩৭০ ধারার মতো একটি অতি সাম্প্রদায়িক , নন সেক্যুলার , রেসিস্ট আইনকে পূর্ণ সমর্থন প্রদান , আসামে বাংলাদেশি মুসলিমদের অসমীয়া ও বাঙালিদের উপর সন্ত্রাসকে সমর্থন জানানো, বাংলাদেশে জিহাদের মাধ্যমে হিন্দু তথা অমুসলিমদের সাফ করে দেওয়ার চেষ্টাকে কুর্নিশ করা, করোনা কালে রাষ্ট্রবাদী রাজনৈতিক দলটির পিন্ডির শ্রাদ্ধ করা , পাকিস্তান ও বাংলাদেশে অমুসলিমদের উপর অকল্পনীয় অত্যাচার ও ধর্মান্তকরণকে পূর্ণ সমর্থন জানানো , ইউরোপ এ মুসলিম অনুপ্রবেশকে সমর্থন করা এবং এই অনুপ্রবেশকারী মুসলিমদের হাতেই সাদা চামড়ার ইউরোপীয়ানদের উৎপীড়ণকে সমর্থন জানানো ও পরিশেষে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে তালিবানদের স্বাধীনতা ও আত্মনির্ভরতার তথাকথিত সংগ্রামকে সেলাম জানানো , কি না করেছেন এই সিদ্দিকী।
তার নিজের ধর্মের প্রতি ‘কর্তব্য নিষ্ঠাকে’ কুর্নিশ বা সেলাম জানাতেই হয়!
কিন্তু যার শেষ ভালো , তার সব ভালো , বা যদি বলা যায় , যার জন্য করি চুরি , সেই বলে চোর ۔সেই ব্যাপারটাই হলো আফগানিস্তানে ফটো তোলার সময়।
তার তোলা বিখ্যাত ছবিগুলি এবং তার সঙ্গে তার হৃদয়ব্যাধি, টিপ্পনি বিভিন্ন সময়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।
তার ধারা বরাবরই একপেশে ও অমুসলিমদের প্রতি অকৃত্তিম ঘৃণা মিশ্রিত , তবুও তিনি একজন সাংবাদিক।
গোঁড়া ইসলামিক মৌলবাদীর সমর্থনকারী তালিবানদের সমর্থন তার বিভিন্ন কাজ ও সোশ্যাল মিডিয়ার কম্মেন্ট থেকেই বোঝা যায় , অথচ তার জীবনের অন্তিম পরিণতির দায় চাপলো সেই তালিবানদেরই উপর।
আসলে তার শেষ সময়ে হয়তো সিদ্দিকী তার ক্যারিয়ার এর হাইলাইটস তালিবানদের দেখানোর বা বোঝানোর সুযোগ পাননি , পারলে তার ” কুরবানী ” হয়তো হত না আফগানিস্তানে।
তালিবান নির্মমতার সাথে তাঁকে প্রথমে গুলি করে মেরে, পরে মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য গাড়ির নিচ্ছে পিষ্ট করে তাঁকে।