মুকুল রায় বিজেপির টিকিটে কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয়লাভ করে তৃণমূলে গিয়ে যোগ দিয়েছিলেন। মুকুলের দলত্যাগের পর থেকেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী উঠেপড়ে লেগেছেন ওনার বিধায়ক পদ খারিজ করানোর জন্য। এমনকি তিনি আদালতে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
আরেকদিকে, মুকুলের যখন বিধায়ক পদ খারিজের জন্য সরব হয়েছে বিজেপি। ঠিক সেই সময়ই মাস্টারস্ট্রোক দিয়ে মুকুল রায়কে পিএসি চেয়ারম্যান করে দেন বিধানসভা অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। স্পিকারের মতে মুকুল রায় এখনও বিজেপিরই বিধায়ক। আরেকদিকে, একই মত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের। তাঁদের মতেও মুকুল রায় বিজেপিরই সদস্য। আর সেই কারণেই ওনাকে পিএসি চেয়ারম্যান করা হয়েছে।
তৃণমূলের এহেন মন্তব্যের পরই আরও চটে যান শুভেন্দু অধিকারী। নন্দীগ্রামের বিধায়ক এরপরই মুকুল রায়ের তৃণমূলে যোগ দেওয়া নিয়ে অজস্র ভিডিও জোগাড় করেছেন বলে সূত্রের খবর। আর সেই ভিডিও প্রমাণ দেখিয়েই শুভেন্দুবাবু বোঝাবেন যে, আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূলে যোগ দেওয়া মুকুল রায় কোনোভাবেই বিজেপির সদস্য হতে পারে না।
উল্লেখ্য, রীতি অনুযায়ী বিধানসভার পিএসি চেয়ারম্যান বিরোধী দলের বিধায়ককেই করা হয়। কিন্তু এবার মুকুল রায়কে করা হয়েছে। মুকুল রায় বিজেপির টিকিটে জিতলেও তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় তিনি আর বিরোধী দলে নেই। সেই কারণে মুকুলের চেয়ারম্যান পদ আর বিধায়ক পদ কেড়ে নেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে বিজেপি।
আর এরই মধ্যে শুভেন্দু অধিকারী আরও একটি ছবি পোস্ট করে প্রমাণ দিয়ে দিলেন যে, পিএসি চেয়ারম্যান মুকুল রায় কার দলের লোক? একুশে জুলাই উপলক্ষে আর তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে একটি ভার্চুয়ালি সভার আয়োজন করা হয়। সেই সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও মঞ্চে ছিলেন কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক মুকুল রায়।
শুভেন্দু অধিকারী সেই মুহূর্তের একটি ছবি নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকাউন্টে শেয়ার করে লিখেছেন, ‘পিএসি চেয়াম্যানকে কোন মঞ্চে দেখা যাচ্ছে?” শুভেন্দু এই পোস্টে দুটি ছবি দিয়েছেন। একটি ছবি তৃণমূলের শহীদ দিবসের, আরেকটি ছবি বিজেপির শহীদ শ্রদ্ধাঞ্জলির। উপরের ছবিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেকের সঙ্গে মুকুল রায়কেও দেখা যাচ্ছে। আর নীচের ছবিতে শুভেন্দু অধিকারী এবং বঙ্গ বিজেপির নেতা-নেত্রীরা রয়েছেন। শুভেন্দুবাবু এই পোস্ট করে এটাই বোঝাতে চেয়েছেন যে, মুকুল রায় তৃণমূলেরই লোক। আর তাই তাঁকে পিএসি চেয়ারম্যান পদ থেকে সরাতে হবে।