মাধ্যমিকের বাকি ২ লাখ পড়ুয়া কোথায় গেল? সংসার টানতেই কি স্কুলছুট?

‌চলতি বছরে যত জন পরীক্ষার্থীর মাধ্যমিকে বসার কথা ছিল, তার থেকে সংখ্যায় কম ফর্ম পূরণ করেছে। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, যারা ফর্ম পূরণ করেনি, তারা গেল কোথায়? করোনা আবহে স্কুল ছুটের সংখ্যা যে বাড়বে, সেই আশঙ্কা করা হচ্ছিলই। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সেই আশঙ্কাই সত্যি হচ্ছে। প্রায় দুই লক্ষেরও বেশি ছাত্রছাত্রী স্কুলছুট হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।

মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, নবম শ্রেণিতে নাম রেজিস্ট্রেশন করিয়েছিল প্রায় ১১ লাখ ১২ হাজার পড়ুয়া। তাদের সঙ্গে সিসি ও কমপার্টমেন্টাল পাওয়া আরও দুই লাখ পড়ুয়া আছে। সেই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মাধ্যমিকে এবারে পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল ১৩ লাখেরও বেশি। কিন্তু এবারে দেখা যায় মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য ফর্ম পূরণ করেছে ১০ লাখ ৭৯ হাজার ৭৪৯ জন। অর্থাৎ পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট চলতি বছরে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ফর্ম পূরণ করতেই আসেনি দুই লক্ষেরও বেশি পড়ুয়া। এত বেশি সংখ্যক ছাত্রছাত্রী পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ফর্ম পূরণ না করার বিষয়টি যথেষ্টই ভাবাচ্ছে শিক্ষক মহল। উদ্বিগ্ন পর্ষদের কর্তারাও।

প্রতীচী ট্রাস্টের সঙ্গে যুক্ত গবেষক সাবির আহমেদ মনে করেন, করোনা কালে অনেক পরিবারের আয় কমে গিয়েছে। বহু মানুষের আর্থিক অনটনের মধ্যে পড়েছেন। এই পরিস্থিতিতে ওই সব পরিবারের ছেলেমেয়েরা স্কুলে নাও যেতে পারে। পাশাপাশি অনলাইন ক্লাসের যে ব্যবস্থা হয়েছে, তাতে প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলেমেয়েরা তেমন অভ্যস্ত নয়। আর্থিক সংকটের কারণে অনলাইন ক্লাসের পরিষেবা পাওয়ার বিষয়টি এখন ধরাছোঁয়ার বাইরে। একইসঙ্গে তিনি জানান, সংসার রোজগার চালাতে গিয়ে অনেক ছেলেমে্য়েরই পড়াশোনা ছাড়তে হয়েছে। কোথাও কোথাও ছাত্রীদের ক্ষেত্রে তাঁদের বিয়ের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুকুমার পাইন জানান, ‘‌অনেক বাড়িতে একমাত্র উপার্জনকারী কাজ হারিয়েছেন। ফলে বাধ্য হয়েই অনেক পড়ুয়াকেই রোজগারের কাজে নামতে হয়েছে।’‌

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.