ধেয়ে আসছে মহাদৈত্যাকার গ্রহাণু, অভিমুখ ঘোরাতে ঝাঁকে ঝাঁকে রকেট, মহাকাশযান পাঠাবে চিন, নাসাও

পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে সাড়ে ৮ কোটি টনেরও বেশি ওজনের একটি মহাদৈত্যাকার গ্রহাণু বা ‘অ্যাস্টারয়েড’। ভয়ঙ্কর গতিবেগে। আমেরিকার এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং উচ্চতায় যতটা, গ্রহাণুটি চওড়ায় ততটাই। প্রায় দেড় হাজার ফুট।

বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, হিরোশিমায় পড়া পরমাণু বোমা একসঙ্গে ৮০ হাজারটি পড়লে যে পরিমাণ শক্তির জন্ম হতো, গ্রহাণুটি ততটাই শক্তিতে আছড়ে পড়তে পারে পৃথিবীতে।

যে কোনও উপায়ে সেই প্রলয়কাণ্ডের হাত থেকে রেহাই পেতে আমেরিকা, ইউরোপের কয়েকটি দেশের মতোই মরিয়া হয়ে উঠেছে চিন। আমেরিকার গবেষণা সংস্থা নাসাও।

চিনের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘চায়না ন্যাশনাল স্পেস সায়েন্স সেন্টার’-এর-র বিজ্ঞানীরা ওই ধেয়ে আসা গ্রহাণুটির অভিমুখ পৃথিবী থেকে অন্য দিকে ঘুরিয়ে দিতে মহাকাশে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটাতে চাইছেন খুব শক্তিশালী আড়াই ডজন রকেট পাঠিয়ে। যেগুলি একের পর এক ছুটে যাবে গ্রহাণুটিকে লক্ষ্য করে। গ্রহাণুর গায়ে গিয়ে ঘটাবে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। সেই অভিঘাতেই গ্রহাণুটির অভিমুখ বদলে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন চিনের মহাকাশবিজ্ঞানীরা। চিনা বিজ্ঞানীদের পরিকল্পনা, তাঁদের বানানো সর্বাধুনিক লং মার্চ-৫ রকেট পাঠানো হবে ২৩টি। প্রতিটি রকেটের ওজন ৯০০ মেট্রিক টন। তাঁদের গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘আইকারাস’-এ।

প্রায় একই ধরনের পরিকল্পনা করেছে নাসাও। চাইছে ৩০ ফুট উচ্চতার একঝাঁক মহাকাশযান পাঠিয়ে গ্রহাণুটির উপর হাতুড়ির মতো আঘাত করতে। তাই নাসার প্রকল্পটির নাম ‘হ্যামার’ (হাতুড়ি)।

সেই দৈত্যাকার গ্রহাণু ‘বেন্নু’-র পৃথিবীর কক্ষপথের ৭৫ লক্ষ কিলোমিটারের মধ্যে এসে যাওয়ার কথা আর ৫৪ থেকে ৭৮ বছরের মধ্যে। ২১৭৫ সাল থেকে ২১৯৯ সাল।

কোনও ভাবে যদি তা পৃথিবীর কক্ষপথের কাছাকাছি এসে পৃথিবীর জোরালো অভিকর্য বলের টানে আছড়ে পড়ে ভূপৃষ্ঠে, তবে এক ধরনের প্রলয়কান্ড ঘটে যেতে পারে বলে আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের। কারণ, গ্রহাণুদের গতিবেগ ও কক্ষপথ অনেক সময়েই বদলে যেতে পারে। নাসা-ও গ্রহাণুটিক নিয়ে উদ্বিগ্ন বলে সেখানে মহাকাশযান পাঠিয়ে তার মাটির নমুনা নিয়ে এসেছে। এটা বুঝতে, ঠিক কী ধরনের পদার্থ দিয়ে তৈরি বেন্নু গ্রহাণুটি। আছড়ে পড়লে তার অভিঘাত কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে, তা অনুমান করতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.