খোদ পুলিশকর্তার মেয়ের মোবাইল নম্বর এবং ছবি ব্যবহার করে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপত্তিকর পোস্ট করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। ওই তরুণীর আরও অভিযোগ, ঘটনার পর থেকে এই রাজ্য এবং ভিন্ রাজ্য তো বটেই, অন্য দেশের নম্বর থেকেও ফোন করে তাঁকে লাগাতার বিরক্ত করা শুরু হয়। জুন মাসে বিধাননগর সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। এই ঘটনায় এক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের ছেলের নাম জড়িয়েছে। যিনি কলেজের সূত্রে অভিযোগকারিণীর পরিচিত। তবে তদন্ত শুরু হলেও এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।
ওই তরুণীর অভিযোগ, প্রথমে সোশ্যাল মিডিয়ার একটি গ্রুপে তাঁর ফোন নম্বর যুক্ত করা হয়। এর পরে ছবির সঙ্গে তাঁর নম্বর জুড়ে সম্মানহানির চেষ্টা হয়। তরুণী জানান, এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটায় প্রথমে তেমন আমল দেননি তিনি। কিন্তু ক্রমেই ভিন্ রাজ্য এবং অন্য দেশের অচেনা নম্বর থেকে তাঁর কাছে ফোন, ভিডিয়ো-কল, হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ আসতে থাকে। তরুণীর অভিযোগ, ওই ফোন এবং মেসেজে তাঁর উদ্দেশে কুরুচিকর মন্তব্য করা হয়। যাঁর নাম সামনে আসছে, তিনি তাঁর বাবার রাজনৈতিক প্রভাব-প্রতিপত্তি এবং ক্ষমতা দেখানোর চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ তরুণীর।
সল্টলেকবাসীর একাংশ এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে রাজনৈতিক রং না দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। তরুণীর পরিবার সূত্রের খবর, এই ঘটনায় জালিয়াতি, সম্মানহানি এবং হুমকির অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়েছে। যদিও এই প্রশ্নও উঠছে, কেন জামিনযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হল? অভিযোগকারিণীর বাবা জানিয়েছেন, তাঁরা পুলিশি তদন্ত নিয়ে পুলিশ কমিশনারের দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভাবছেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে বিধাননগর পুলিশ সূত্রের দাবি, অভিযোগ পেয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে। অভিযোগকারিণীর এক পরিচিতকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে।
সাইবার আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় জানান, কেন জামিনযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হল, অভিযোগের প্রকৃতি না দেখে সেটা বলা সম্ভব নয়। তবে নেট-মাধ্যমে উত্ত্যক্ত করা বা হেনস্থা করার মতো ঘটনা ঘটছে। এই ক্ষেত্রে আইনে নির্দিষ্ট ধারাও রয়েছে। প্রয়োজনে তা ব্যবহার করা যেতে পারে।
যে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের ছেলের নাম এই ঘটনায় জড়িয়েছে, তাঁকে ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপ পাঠালেও উত্তর আসেনি।