রাজ্যে ভুয়ো ভ্যাকসিন, ভুয়ো তৃণমূল নেতা, ভুয়ো সিবিআই এর পর এবার ভুয়ো ডিএসপি। নিজেকে ডিএসপি পরিচয় দিয়ে বেকারদের চাকরি দেওয়ার নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ এক মহিলার বিরুদ্ধে। নদিয়ার কৃষ্ণনগরের ঘটনা।
জানাগেছে, রাধারানী বিশ্বাসের নামে কৃষ্ণনগর কাঁঠালপোতায় এক মহিলা ভাড়া থাকেন। গত বছর লকডাউনের শুরু থেকেই বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজ করতে থাকেন তিনি। ভাড়া বাড়ির পাশেই তাঁর একটি জমি কেনা আছে এবং অপর একটি জমিতে তিনতলা বাড়ি তৈরি হচ্ছে। তিনি নিজেকে ভবানী ভবনের সিআইডি দপ্তরের ডিএসপি পদে চাকুরিরতা বলে পরিচয় দেন। সেই সুবাদে কৃষ্ণনগর এবং আশেপাশের করিমপুর, বগুলা অঞ্চল থেকে স্বাস্থ্য দপ্তর, শিক্ষক সহ নানা সরকারি বিভাগে বিভিন্ন চাকরি নেওয়ার জন্য যোগাযোগ করে বেকার ছেলে মেয়েরা।
ওই এলাকার প্রাক্তন কাউন্সিলরের স্বামী বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী জানান, কারও কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকা কারও কাছে ১৪ লক্ষ এভাবেই প্রায় ১৫/১৬ জনের থেকে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা নিয়েছে। টাকা দিয়ে যুবক যুবতীরা প্রতারিত হচ্ছে এ খবর আমার কাছে আসে গত কয়েকদিন আগে, অনেকে প্রকাশ্যে এসে বলতে না পারলেও এরই মধ্যে থেকে দুজন লিখিত অভিযোগ জমা দেয় কোতোয়ালি থানায়। সেই মোতাবেক পুলিশ এসে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের। সেই কারণে ওই মহিলা ড্রাইভার দুই একজনকে শাসানিও দেন প্রকাশ্যে টাকার ব্যাপারে কিছু না বলার জন্য।
ওই এলাকার বাসিন্দা গৌরব চ্যাটার্জি নামে এক যুবক জানান, পাড়ায় বাস করেন, এত বড় মাপের একজন মহিলা স্বভাবতই নিজের বেকারত্বের দুরবস্থা কথা জানাতেই উনি বলেন ৮ লাখ টাকা লাগবে, যার মধ্যে মেইল আসার আগে ৫ লক্ষ এবং ওয়েবসাইটে নাম প্রকাশিত হওয়ার আগে তিন লক্ষ টাকা দিতে হবে। আমি পাঁচ লক্ষ টাকা দেওয়ার পর, একটা মেইল এসেছিলো বগুলা হাসপাতাল মেডিকেলের জন্য। সেখানে মেডিকেল টেস্টও করানো হয়। এরপর পর বাকি তিন লক্ষ টাকা উনার হাতেই ক্যাশ দিই। বিশ্ববাংলা লোগো দেওয়া একটি ওয়েবসাইটে আমার নাম প্রকাশিত হয়, কিন্তু সবকিছুতেই একটা সন্দেহ ছিল আমার, তাই দুই একজন অভিজ্ঞ লোকজনকে বিষয়টি জানালে তারা সার্চ করে দেখে সেটা সম্পূর্ণ ভূয়ো। এরপর থেকে আমাকে এড়িয়ে চলতেন উনি, তাই বাধ্য হয়ে থানায় এফআইআর করেছি।
এব্যাপারে রাধারানী বিশ্বাসের মেয়ে তিয়াসা বিশ্বাস বলেন, সমস্ত অভিযোগ মিথ্যে, তাদের ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তাঁর মা একজন সমাজসেবী। তিনি কোনো রাজনীতি করেন না, কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্য সফল করতে তিনি তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কিছু সমাজসেবামূলক কাজ করেন। এই ব্যাপারটি তারা প্রশাসনের উপরেই ছেড়ে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
অভিযোগ পেয়ে তদন্তের নামে কোতোয়ালি থানার পুলিশ। তারা বাড়িতে গিয়ে ওই মহিলার দেখা পাননি বলে জানিয়েছেন। মহিলার গাড়ির চালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে যেহেতু তদন্ত চলছে তাই এ ব্যাপারে পুলিশ বিশেষ কিছু বলতে রাজি হয়নি।