১৯৪২ সাল, গান্ধীর নেতৃত্বে ৯ আগষ্ট শুরু হয় ভারত ছাড়ো আন্দোলন। কমুনিস্টরা তাদের ঐতিহ্য অনুযায়ী এই আন্দোলন ব্যর্থ করতে চেষ্টার কোন ত্রুটি করেনি।CPI এর তৎকালীন জেনারেল সেক্রেটারি P.C.Joshi ও ব্রিটিশ সরকারের স্বরাষ্ট্র সচিব Sir Reginald Maxwell এর মধ্যে এই বিষয়ে গোপন পত্র বিনিময় হয়।১৯৪৬ সালের ২২ ফেব্রুয়ারী কেন্দ্রীয় কমিটির প্রাক্তন সদস্য S.S.Batlivala এক সাংবাদিক সম্মেলনে তা প্রকাশ করে।এই গোপন পত্রাবলী থেকে জানা যায় যে,পলিটব্যুরো ও ইংরেজ সরকারের মধ্যে সম্পাদিত গোপন আঁতাতের শর্ত অনুযায়ী P.C.joshi তার দলকে ইংরেজ সরকারের সেবায় স্বরাষ্ট্র দপ্তরের অধীনে রাখার বন্দোবস্ত করেন।(“an alliance existed between the Politbureau of the CMP and the Home Deptt of Govt of India,by which Mr.Joshi was placing at the disposal of the Govt. of Inddia the services of his party members,,,, তথ্য সূত্র রমেশচন্দ্র মজুমদার History of the freedom Movement in India,vol-III,p-569)
১৯৪৬ সালের ১৭ মার্চ,Bombay Chronicle এ প্রকাশিত S.S.Batlivala চিঠিতে যানা যে মিঃ যোশী এক পত্র মারফত ইংরেজ সরকার ও সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরকে গুপ্ত আন্দোলন ও নেতাজীর আজাদ হিন্দ বাহিনীর সদস্যদের পুলিশে ধরিয়ে দেওয়া সহ সর্বপ্রকার সাহায্য-সহযোগিতার নিঃশর্ত প্রতিশ্রুতি দেন।যোশীর রাজনৈতিক বিশ্লেষণে “ভারত ছাড়ো আন্দোলনকারী ও আজাদ হিন্দ বাহিনীর সমর্থক ও সেনানীবৃন্দ ছিল বিশ্বাসঘাতক ও পঞ্চম বাহিনী।এই চিঠিতে আরও প্রকাশ যে, CPI এই সহযোগিতার বিনিময়ে ইংরেজ সরকারের কাছ থেকে পায় প্রচুর অর্থ সাহায্য। কম্যুনিস্টদের সঙ্গে মুসলিম লীগেরও ছিল আত্মিক সম্পর্ক।
পৃথিবীতে ভারতই একমাত্র দেশ, যে দেশটাকে ভাগ করেছে দেশেরই সংখ্যালঘু মুসলিম জাতি এবং তাদের এই দাবির প্রতি কম্যুনিস্টদের ছিল নৈতিক ও সক্রিয় সমর্থন।পাকিস্তান রাষ্ট্রগঠনের জন্য তারা ও মুসলিম লীগ এক সঙ্গে আন্দোলন করেছিল।গান্ধী ভারত ছাড় আন্দোলন ডাক দিলে, কম্যুনিস্টরা স্লোগান দিল আগে দেশ ভাগ হবে,তারপর দেশ স্বাধীন হবে,Divide & quit। কম্যুনিস্টরা তাদের পার্টির ইস্তাহারে সগর্বে ঘোষণা করে,,” একমাত্র কম্যুনিষ্ট পার্টি মুসলিমদের পাকিস্তান দাবিকে সঙ্গত বলে মনে করে, এবং দাবি আদায়ের জন্য কংগ্রেস কম্যুনিস্ট মুসলিম লীগের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের আহ্বান জানায়।
ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় মুসলিমরা দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নেয়নি।পাকিস্তানি ঐতিহাসিক K.K.Aziz ইতিহাসের এই সাক্ষ্য সমর্থন করে।স্বদেশের মুক্তি সংগ্রামে অংশ নেয়নি কম্যুনিস্টরাও।ইংরেজ সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তারা করেছে অন্তর্ঘাত।কিন্তু কম্যুনিস্টরা তাতেও সন্তুষ্ট হতে পারেনি।ভারতকে খণ্ড খণ্ড করার করার জন্য তারা সর্বপ্রকার চেষ্টা করেছে।দেশ ও জাতি দুর্বল না হলে সর্বহারা বিপ্লব যে সফল হয় না।শুধু পাকিস্তানের দাবি সমর্থন নয় এক ধাপ এগিয়ে কম্যুনিস্টরা ঘোষণা করে যে “ভারতে প্রত্যেক ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীই একটি স্বতন্ত্র জাতি।তাদের প্রত্যেকের অধিকার আছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বাধীনতা ঘোষণা করার।
এইতো গেল সেকালের কথা, এইবার আসুন কালে তাদের মানসিকতার তুলনা করা যাক সেকালের সঙ্গে ।আপনারা লক্ষ্য করে দেখবেন ভারতবর্ষে যেখানে রাষ্ট্র বিরোধী কার্যক্রম হোক সেখানেই কম্যুনিস্টদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখা য়ায় সে কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে হোক বা খালিস্তানি জঙ্গি আন্দলোনের সঙ্গে হোক বা শাহিনবাগ, প্রত্যেক ক্ষেত্রেই বামপন্থীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে তাদের মূল লক্ষ্য ভারতের ঐক্যকে আঘাত করা আর যেখানে তারা সরকার চালায় সেখানে চেষ্টা করে ভারতীয় সংস্কৃতির থেকে ঐ রাজ্যকে বিচ্ছিন্ন করা এবং হিন্দুদের ধ্বংস সাধন করা তার বাস্তব উদাহরণ কেরলা,পশ্চিমবঙ্গ,ত্রিপুরা তাছাড়া উগ্রবামপন্থার নামে দেশে জঙ্গিবাদ প্রতিষ্ঠা করে নৈরাজ্য তৈরিতে তাদের ভূমিকা অসামান্য।
তথ্যসূত্রঃনিত্যরঞ্জন দাসের লেখা মুসলিম শাসন ও ভারতবর্ষ।
বিরিঞ্চি বন্দ্যোপাধ্যায়