১৮৫৫’এর ৩০’শে জুন, শুরু হয় ভাগলপুর থেকে রাজমহল পর্যন্ত এক বিস্তীর্ণ এলাকায় বহিরাগত দিকু’দের (শাসক সহযোগী শহুরে ভদ্রলোক) নির্মম নির্যাতন, অত্যাচার এবং শোষণের বিরুদ্ধে এই ভূমিপুত্রদের রুখে দাঁড়াবার এক প্রাণান্তকর লড়াই। নেতৃত্বের মুখ ছিলেন চার মুর্মু ভাই – সিধু, কানু, চাঁদ এবং ভৈরব।
তাদের পাশেও সেদিন কেউ ছিলো না। শহুরে ভদ্রলোক এবং নিজেদের স্বার্থ রক্ষার্থে ব্রিটিশ সেদিন তার সেনাবাহিনী’কে কাজে লাগিয়ে অত্যন্ত নির্মম ভাবে দমন করেন এই নিপীড়িত মানুষের বেঁচে থাকার সঙ্গত দাবীকে।
হরিশ্চন্দ্র মুখার্জি তার বিখ্যাত ‘হিন্দু পেট্রিয়ট’ পত্রিকায় সাঁওতাল বিদ্রোহের যথাযথ কারণ উল্লেখ করে নিরীহ এবং নিরপরাধ বনবাসীদের উপর এই অনৈতিক আক্রমণের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠেন। দাবী তোলেন, সাঁওতালদের বিরুদ্ধে অভিযানে অংশগ্রহণকারীদের উপযুক্ত শাস্তির।
তথাপি শাসক ব্রিটিশ বাহিনী’র সীমাহীন নির্দয়তায়…. নারী, শিশু এবং পুরুষ-বৃদ্ধ মিলিয়ে হাজার হাজার অগুনিত পাথুরে মূর্তির রক্তে রাঙানো এই স্বাধীনতা সংগ্রাম স্তব্ধ হয় ৩’রা জানুয়ারী ১৮৫৬…।
কিন্তু তাদের এই ধর্মযুদ্ধে চড়ানো আত্মবলিদান কখনোই পুরোপুরি ব্যার্থ হয়ে হয়নি। যার ফলস্বরূপ সাঁওতালদের স্বাধীকার রক্ষার্থে জন্ম নেয় “সাঁওতাল পরগণা”।
আজ আবার নিজেদের অধিকার আদায়ে আত্মত্যাগী সেই নাম না জানা অসংখ্য বীর হুতাত্মা’দের জীবনালেখ্য স্মরণ করার সময় এসেছে বন্ধু। সময় এসেছে, সেই মৃত্যুঞ্জয়ী যোদ্ধাদের চরণ বন্দনা করে তাদেরই আদর্শে আবারও একবার নিজেদের চরিত্র গঠন করে সামনের আসন্ন মহাযুদ্ধের কঠিন প্রস্তুতি গ্রহণের।
হেই সামালো ধান হো
কাস্তেটা দাও শাণ হো
জান কবুল আর মান কবুল
আর দেবনা আর দেবনা
রক্তে বোনা ধান মোদের প্রাণ হো।।
🙏জোহার – জোহার🙏
রাজা দেবনাথ