Corona Virus Third Wave: বিধি না মানলে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে দিনে ২লক্ষ সংক্রমণ হতে পারে দেশে, দাবি বিজ্ঞানীদের

করোনার সম্ভাব্য তৃতীয় ঢেউ অক্টোবর-নভেম্বরেই ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। তবে এই ভয়াবহতা দ্বিতীয় ঢেউয়ের মতো মারাত্মক হবে না বলেই মনে করছেন কেন্দ্রীয় বিশেষজ্ঞ প্যানেলের বিজ্ঞানীরা। তাঁদের অনুমান, তৃতীয় ঢেউ সর্বোচ্চ পর্যায়ে দিনে দেড় থেকে দু’লক্ষ মানুষকে সংক্রমিত করতে পারবে। যা দ্বিতীয় ঢেউয়ের সর্বোচ্চ দৈনিক সংক্রমণের অর্ধেকরও কম।

গত ৭ মে ভারতে দৈনিক করোনা সংক্রমণ সংখ্যা শিখর ছুঁয়েছিল। একদিনে ৪ লক্ষ ১৪ হাজার ১৮৮ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন করোনায়। ভারতের দ্বিতীয় ঢেউয়ে এটিই ছিল দৈনিক সর্বোচ্চ সংক্রমণ। করোনার গতিবিধির উপর নজর রাখার দায়িত্বে থাকা সরকারি প্যানেলের বিজ্ঞানীদের মতে, তৃতীয় ঢেউ দ্রুত সংক্রামক হলেও দ্বিতীয় ঢেউকে ছাপিয়ে যেতে পারবে না। তৃতীয় ঢেউয়ের পরিস্থিতি যদি নিতান্তই খারাপ পর্যায়ে পৌঁছয়, তবে তাতে দৈনিক দেড় থেকে দু’লক্ষ মানুষ সংক্রমিত হতে পারেন।

তবে তিনটি শর্ত দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এক, সাধারণ মানুষ যদি করোনা বিধি পালন না করেন। দুই, যদি টিকা কার্যকরী না হয় বা ২০ শতাংশ কম কার্যকরী হয়। তিন, যদি করোনার আর একটি নতুন রূপ আত্মপ্রকাশ করে, যা আগের থেকে ২৫ শতাংশ বেশি সংক্রমণ ছড়াতে সক্ষম। এই তিনটি বিষয় একসঙ্গে হলে তবেই করোনার তৃতীয় ঢেউ অক্টোবর-নভেম্বরে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছতে পারে বলে মনে করছে করোনা সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় বিশেষজ্ঞ প্যানেল।

দ্বিতীয় ঢেউয়ের ক্ষেত্রে করোনার সম্ভাব্য ভয়াবহতা আগে থেকে আন্দাজ করা যায়নি। তৃতীয় ঢেউয়ের ক্ষেত্রে তাই সেই ভুল করতে চান না সরকারি বিশেষজ্ঞরা।
দ্বিতীয় ঢেউয়ের ক্ষেত্রে করোনার সম্ভাব্য ভয়াবহতা আগে থেকে আন্দাজ করা যায়নি। তৃতীয় ঢেউয়ের ক্ষেত্রে তাই সেই ভুল করতে চান না সরকারি বিশেষজ্ঞরা।

করোনার গতিবিধির উপর নজরদারি চালানো ওই সরকারি প্যানেল আগে থেকেই এ বিষয়ে সতর্ক করেছে। কারণ দ্বিতীয় ঢেউয়ের ক্ষেত্রে করোনার সম্ভাব্য ভয়াবহতা আগে থেকে আন্দাজ করা যায়নি। তার জন্য সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছিল কেন্দ্রকে। তৃতীয় ঢেউয়ের ক্ষেত্রে তাই সেই ভুল করতে চায় না তারা। করোনা ভাইরাসের গতিবিধির একটি গাণিতিক মডেল তৈরি করেছেন এই প্যানেলের সদস্য বিজ্ঞানীরা। নাম দেওয়া হয়েছে সূত্র মডেল। সেই সূত্র মডেলেই এই তিনটি সম্ভাবনাকে সামনে রেখে সাবধান হওয়ার কথা বলেছেন তাঁরা।

সূত্র মডেল নিয়ে কাজ করছেন আইআইটি কানপুরের বিজ্ঞানী মহিন্দ্রা আগরওয়াল। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা তিনটি বিষয়কে মাথায় রেখেছি। প্রথমত, মানুষের রোগ প্রতিরোধক শক্তি কমে যাওয়া। দ্বিতীয়ত টিকা যতটা কার্যকরী হবে ভাবা হয়েছিল, ততটা না হওয়া এবং তৃতীয়ত করোনার আরও বেশি সংক্রামক রূপ তৈরি হওয়া।’’

যদি মানুষ করোনা বিধি যথাযথ পালন না করেন তবে অক্টোবর থেকে নভেম্বরেই সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছবে তৃতীয় ঢেউ, দাবি সরকারি বিশেষজ্ঞ প্যানেলের।

আগরওয়াল জানিয়েছেন, এই তিনটি বিষয়ই যদি বাস্তবায়িত হয় এবং মানুষ করোনা বিধি যথাযথ পালন না করেন তবে অক্টোবর থেকে নভেম্বরেই সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছবে তৃতীয় ঢেউ। দৈনিক সংক্রমণ দেড় থেকে দু’লক্ষে পৌঁছতে পারে সে সময়। তবে তিনি এ-ও জানিয়েছেন, করোনার ডেল্টা প্লাস রূপটি তৃতীয় ঢেউয়ের কারণ হবে না। কেন না ডেল্টা প্লাস যে করোনার আগের রূপ ডেল্টার মতো সংক্রমক নয়, তা ইতিমধ্যেই জানা গিয়েছে।

সূত্র মডেলেরই আরেক বিজ্ঞানী আইআইটি কানপুরের এম বিদ্যাসাগর জানিয়েছেন, অবশ্য এমনও হতে পারে এরকম কিছুই হল না। যথাযথ টিকাকরণের সাহায্যে আগস্টেই দেশে স্বাভাবিক পরিস্থিতিও ফিরে আসতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছে ওই সরকারি প্যানেল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.