ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় ব্যাপক চাপের মুখে পড়ল রাজ্য। শুক্রবার হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রতিটি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এফআইআর করতে হবে। শুধু তাই নয়, ভুক্তভোগী প্রত্যেকের গোপন জবানবন্দি নেওয়ার নির্দেশও দিয়েছে আদালত।
এদিন হাইকোর্ট ভোট পরিবর্তী হিংসায় আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছে। একইসঙ্গে তাঁদের জন্য রেশনের ব্যবস্থাও করতে হবে বলে জানিয়েছে বিচারপতিদের বেঞ্চ। হাইকোর্টের নির্দেশ, আক্রান্তদের যদি রেশন কার্ড হারিয়েও গিয়ে থাকে, তাহলেও তাঁদের রেশন দিতে হবে। রাজ্যের কাছে থাকা সব অভিযোগের নথি কমিটিকে দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে আদালতের তরফে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, হিংসা সংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মুখ্যসচিবকে। একই সঙ্গে কাঁকুড়গাছির নিহত বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারের দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের নির্দেশও দিয়েছে আদালত।
সম্প্রতি রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার কোনও ঘটনা ঘটেনি বলে মন্তব্য করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এদিন সেই দাবি উড়িয়ে রাজ্যকে ৭ দফা নির্দেশ দিয়েছে আদালত। হাইকোর্টের নির্দেশের পর বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমরা যা অভিযোগ করছিলাম, সেই অভিযোগেরই মান্যতা দিল কোর্ট। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখ পুড়ল।’ যদিও তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘হাইকোর্ট নির্দেশ দিতেই পারে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর রাজ্যে কোনও হিংসা হয়নি।’
এদিকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্তের মেয়াদ ১৩ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয় উচ্চ আদালতের তরফে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১৩ জুলাই হবে বলে জানিয়েছে আদালত। প্রসঙ্গত, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ২৪ জনের প্রতিনিধি দল গত কয়েকদিনে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় আক্রান্ত মানুষদের সঙ্গে কথা বলেছে। তারই অন্তর্বর্তী রিপোর্ট কলকাতা হাইকোর্টে জমা করে কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশন। সেই রিপোর্টের প্রেক্ষিতে এদিন শুনানি হয় উচ্চ আদালতে।