আর কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হবে রাজ্যের বাজেট অধিবেশন। প্রথামাফিক রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান তথা রাজ্যপালের ভাষণ দিয়ে অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত জারি রয়েছে। এই আবহে বাজেট অধিবেশন নিয়েও তৈরি হয়েছে জটিলতা।
রাজ্যপালের ভাষণের বয়ান নিয়েই বিতর্কের সূত্রপাত। রাজভবন থেকে জগদীপ ধষকড় দাবি করেছেন, রাজ্য মন্ত্রীসভা তাঁকে বাজেট অধিবেশনের ভাষণের যে খসড়া পাঠিয়েছে, তা তাঁর মনঃপূত হয়নি। এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথাও বলতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, ক্যাবিনেটের অনুমোদিত খসড়াই তাঁকে পাঠানো হয়েছে। এতে আর কিছু করার নেই।
দিন দুয়েক আগেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত নতুন মাত্রা পেয়েছিল। নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে অভিযোগ করেছিলেন, ‘রাজ্যপাল দুর্নীতিগ্রস্থ। হাওয়ালা কেলেঙ্কারিতে তাঁর নাম চার্জশিটে ছিল কি না খোঁজ করা হোক।’
সেদিন সন্ধ্যায় রাজভবন থেকে পাল্টা সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছিলেন ধনকড়। তিনি বলেছিলেন, আমি উত্তরবঙ্গ থেকে ফিরে রাজ্যপালের ভাষণের খসড়া হাতে পাই। সেটা পড়ে আমি দেখি তাতে এমন কিছু বক্তব্য আছে যা অবাস্তব। আমি খসড়া নিয়ে আলোচনার জন্য আমি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বসতে চেয়ে তাঁকে চিঠি পাঠাই। তিনি আমাকে ফোনে বলেন, আমি কী করতে পারি। খসড়া তো মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদিত হয়েছে।
শুক্রবার রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন বসছে। নিয়ম অনুযায়ী অধিবেশনের সূচনা হবে রাজ্যপালের ভাষণ দিয়ে। সাংবিধানিক রীতি অনুযায়ী রাজ্যপালের ভাষণ রাজ্য সরকার লিখে দেয়। রাজ্যপালের পরামর্শে অনেক সময় তাতে কিছু পরিবর্তন করা হয়ে থাকে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকারের। রাজ্যপালের ভাষণে রাজ্য সরকারের তাদের ভাল কাজের নজিরগুলিই তুলে ধরে। সেই সঙ্গে থাকে রাজনৈতিক অবস্থান।
বিধানসভার ভাষণের বয়ান নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপাল বিরোধ নতুন নয়। হালে কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খানের সঙ্গে সেখানকার বাম সরকারের বিরোধ প্রকাশ্যে আসে বিধানসভার ভাষণ নিয়েই।
বাংলায় এবার কী হয়, রাজ্যপাল আদৌ ক্যাবিনেট অনুমোদিত ভাষণ পাঠ করেন কিনা, সেটাই এখন দেখার। এ নিয়ে বাংলার রাজনীতিতে জল্পনাও তুঙ্গে।