অ্যাকিউট এনসেফেলাইটিস সিনড্রোমে আক্রান্ত বিহার। বাড়ছে মৃত্যুমিছিল। একই সময় জাপানি এনসেফেলাইটিসের (জেই) সংক্রমণ ছড়াল অসমে। গত দু’দিনে ২১ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বহু। আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছে শিশুও। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে জানা গিয়েছে।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, অসমের ১৫টি জেলায় মোট ৬৯ জনের রক্তে জেই-র জীবাণু মিলেছে। প্রতিষেধকের অভাবে সমস্যা পড়েছেন সাধারণ মানুষ। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, অসম তথা উত্তর-পূর্বের ওষুধ সরবরাহকারীদের হাতে ওই ওষুধ না আসায় বিপত্তি বেড়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ফার্মাসিতে এনসেফেলাইটিসের প্রতিষেধকের অভাব দেখা দেওয়ার আশঙ্কা ছড়িয়েছে।
অসম সরকারের স্বাস্থ্য দফতর, ‘ন্যাশনাল ভেক্টর বোর্ন ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম’-এর অধীনে রাজ্যের ১৫টি জেলায় প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ চলছে। কেন্দ্র স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফ থেকে চারটি দলকে প্রতিষেধক সরবরাহ-সহ যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাঠানো হয়েছে।
জাপানি এনসেফেলাইটিস কী?
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, স্ত্রী কিউলেক্স মশা থেকে জাপানি এনসেফেলাইটিসের জীবাণু ছড়ায়। শুয়োর ও পরিযায়ী পাখিরা এই জীবাণুর বাহক। এ ছাড়া নোংরা জল এবং কচুরিপানা ভর্তি পুকুরও এই মশার আঁতুরঘর। জাপানি এনসেফেলাইটিস ঠেকাতে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে ২০০৮ সালে ১ -১৫ বছর বয়স পর্যন্ত বাচ্চা ও কিশোরদের জেই টিকা দেওয়া শুরু হয়েছিল। ২০০৯ সালে ফের সিদ্ধান্ত হয়, শুধুমাত্র ন’মাসের শিশুদের একবার করে জেই টিকা দেওয়া হবে। সেই মতোই এতদিন টিকাকরণ চলছিল। ২০১৫ সাল থেকে ন’মাসের বাচ্চাদের পাশাপাশি ১৬-২৪ মাস বয়সের শিশুদের দু’বার করে টিকা দেওয়া শুরু হয়।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই রোগের ভাইরাস সরাসরি মস্তিষ্কে হানা দেয়। তা ছাড়া, জ্বর, বমি, মাথাব্যথা, ঝিমুনি তো রয়েছেই। সময় ধরা না পড়লে মৃত্যু অবধি হতে পারে। ২০১৫ সালে ৫৬৫ জন জাপানি এনসেফেলাইটিসে আক্রান্ত হন। ১৩২ জনের মৃত্যু হয়। বেশির ভাগ রোগীই ছিল উজানি অসমের। গত বছর ১৮ জনের মৃত্যু হয় জাপানি এনসেফেলাইটিসের সংক্রমণে। এ বছরও নগাঁও ও ডিব্রুগড়ে সংক্রমণ বেশি। পড়শি রাজ্য অরুণাচলপ্রদেশ ও মেঘালয়তেও এই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ভুটান সীমান্ত বরাবর বড়োভূমিতেও রোগের প্রকোপ বেশি। দ্রুত নামনি অসমেও তা ছড়াচ্ছে।