তৃতীয়বার রাজ্যের ক্ষমতায় তৃণমূল (TMC) সরকার আসার পর করোনা পরিস্থিতির মাঝেই প্রথমবার বিধানসভা (WB Assembly Session) অধিবেশন বসছে। ২ জুলাই থেকে শুরু অধিবেশন। প্রথা অনুযায়ী, সেদিন রাজ্যপালের ভাষণ দিয়ে অধিবেশন শুরু হবে। তবে তার আগেই অধিবেশন নিয়ে ফের সংঘাত বাড়ল রাজ্য ও রাজ্যপালের। করোনা পরিস্থিতির জেরে এবারও রাজ্যপালের ভাষণের সরাসরি সম্প্রচার হবে না। তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বিধানসভার সচিবালয় থেকে। এমনকী রাজ্যপাল বিধানসভার কাজে হস্তক্ষেপ করছেন বলে লোকসভার স্পিকারের কাছে নালিশ জানিয়েছিলেন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় (Biman Banerjee)। পালটা চিঠি দিয়ে বিধানসভার স্পিকারের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করলেন রাজ্যপাল।
চলতি বছর বিধানসভা অধিবেশনের আগে বিধানসভার সচিবালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছিল রাজভবনের তরফে। তার বক্তব্য ছিল, এবার রাজ্যপালের উদ্বোধনী ভাষণ সম্প্রচার করা হোক। কিন্তু বিধানসভার তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, করোনা পরিস্থিতিতে কোনওভাবেই তা লাইভ সম্প্রচার করা যাবে না। এমনকী আসন্ন বাজেট অধিবেশনে বিধানসভায় প্রবেশের ক্ষেত্রেও একাধিক বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। কারণ, মহামারী আবহে কাজ চললেও সকলের স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা অবলম্বন করতে হচ্ছে। তবে তার মধ্যে কেন রাজ্যপালের ভাষণ সম্প্রচারেও বাধা থাকবে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন জগদীপ ধনকড় (Jagdeep Dhankhar)।
রাজ্যপাল বিধানসভার কাজে হস্তক্ষেপ করছেন বলে লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লাকে চিঠি দিয়েছিলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার সরাসরি বিমানকে চিঠি দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। লিখলেন, ‘স্পিকার নিজেই রাজ্যপাল পদটির অবমাননা করেছেন। বিধানসভায় আমার ভাষণ সম্প্রচার বন্ধ করা হয়েছে, যা জরুরি অবস্থার শামিল।’
চিঠিতে ধনখড় লেখেন, ‘লোকসভার সাংসদকে দেওয়া আপনার চিঠি আমাকে ব্যথিত করেছে। এর থেকে দুঃখজনক কিছু হতে পারে না। আপনার এই অভিযোগ সংবিধানের পরিপন্থী। বরং বার বার আপনার কাজে রাজ্যপাল পদটির অবমাননা করা হয়েছে। আমি বিধানসভায় যাওয়ার পরেও গেট বন্ধ রাখা হয়েছে। এমনকি আপনি নিজেও উপস্থিত থাকেননি। আমাকে অপমান করা হয়েছে। বিধানসভার অধিবেশন শুরু হওয়ার আগে রাজ্যপালের ভাষণ দেখানো হবে না বলে জানানো হয়েছে। এই অবস্থা জরুরি অবস্থার শামিল। যদিও মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যের অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য দেখানো হয়েছে।’
রাজ্যপাল পদে শপথ নেওয়ার পর থেকেই একাধিক বিষয়ে রাজ্যের সঙ্গে সঙ্ঘাত হয়েছে ধনখড়ের। তার মধ্যে সাম্প্রতিকতম হল জৈন হাওয়ালা-কাণ্ড। নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, জৈন হাওয়ালা-কাণ্ডের চার্জশিটে নাম ছিল ধনখড়ের। এই অভিযোগের জবাবও কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দিয়েছেন ধনখড়। তিনি বলেন, ‘‘অসত্য বলছেন মুখ্যমন্ত্রী।’’ সেই সঙ্ঘাতের মধ্যেই এ বার বিমানকে কড়া চিঠি পাঠালেন রাজ্যপাল।