নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাজ্যপাল এক জন আদ্যোপান্ত দুর্নীতিগ্রস্ত মানুষ। হাওড়ার জৈন হাওয়ালা-কাণ্ডের চার্জশিটেও ওঁর নাম ছিল।’’ এই মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সাংবাদিক বৈঠকে তার জবাব দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। বললেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ভুল তথ্য দিচ্ছেন।’’
ধনখড় বলেন, ‘‘এখনও জৈন হাওয়ালা-কাণ্ডে কেউ দোষী সাব্যস্ত হননি। হাওয়ালা চার্জশিটে আমার নাম ছিল না। আমার বিরুদ্ধে কোনও তথ্য প্রমাণ নেই। মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষে এই ধরনের মন্তব্য করা উচিত নয়। মুখ্যমন্ত্রী যা মন্তব্য করেছেন তার কোনও সত্যতা নেই। উত্তেজনা তৈরী করতেই এই ধরনের মন্তব্য করা হয়েছে।’’ রাজ্যপাল আরও বলেন, ‘‘হাওয়ালা-কাণ্ডের চার্জশিটে অজিত পাঁজা, যশবন্ত সিনহাদের মত নেতাদের নাম ছিল। পরে তাঁরা অভিযোগ থেকে মুক্ত হন।’’ এমনকি সাংবাদিকদের উদ্দেশে ধনখড় বলেন, ‘‘আপনারা তো কোনও প্রশ্ন করলেন না। আপনারা তো জানেন, জৈন হাওয়ালা-কাণ্ডে চার্জশিটে কাদের নাম ছিল।’’
সাংবাদিক বৈঠকে ধনখড় অভিযোগ করেন, করোনা অতিমারি নিয়ে ২ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। সেই দুর্নীতির বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী চুপ কেন, তদন্তের রিপোর্ট কেন সামনে আসছে না, প্রশ্ন তাঁর। সব জেনেও তৎকালীন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় কেন চুপ করে ছিলেন, কেন প্রশ্ন তোলেননি, সেই অভিযোগও করেছেন রাজ্যপাল।
Advertisement
Advertisement
বিধানসভার অধিবেশন শুরুর আগে নিয়ম অনুযায়ী রাজ্যপালের ভাষণের জন্য যে খসড়া তাঁকে পাঠানো হয়েছে তার সঙ্গে বাস্তবের কোনও মিল নেই বলেও জানিয়েছেন রাজ্যপাল। সেই বিষয়ে তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন। এই বিষয়ে দু’জনের মধ্যে ১০ মিনিট ফোনে কথা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
উত্তরবঙ্গ সফর থেকে ফিরে উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়েও রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেছেন রাজ্যপাল। তিনি জানান, উত্তরবঙ্গে যে পরিস্থিতি দেখে এসেছেন তা কল্পনাও করা যায় না। রাজনৈতিক সন্ত্রাস চলছে সেখানে। গণতন্ত্রকে হত্যা করা হচ্ছে। গণতন্ত্রে সন্ত্রাসের কোনও জায়গা নেই। জিটিএ-র বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও তুলেছেন ধনখড়। জিটিএ-র অডিট ক্যাগ-কে দিয়ে করানোর দাবি জানিয়েছেন তিনি।
যতই তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হোক না কেন, তিনি নিজের কাজ করে যাবেন বলেই দাবি করেছেন ধনখড়। তিনি বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের প্রথম নাগরিক হিসাবে আমি কারও সামনে মাথা নত করব না। ভারতের সংবিধানের সামনেই আমার মাথা নত হবে। কোনও বিষয়ে সন্দেহ হলে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা আমার কাজ। সেই কাজ আমি করে যাব।’’