ভ্যাকসিন কাণ্ডে তৃণমূলের বিরুদ্ধে কোমর বেঁধে নেমে পড়ল বিজেপি, সক্রিয় শুভেন্দু

ভুয়ো ভ্যাকসিন নিয়ে যখন তোলপাড় রাজ্য তখন তৃতীয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের বিরুদ্ধে কোমর বেঁধে ময়দানে নামল বিজেপি। অভিযুক্ত ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জন দেবের সঙ্গে তৃণমূলের তাবড় নেতাদের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে গেরুয়া শিবির তৃণমূলকে জুড়ে দিতে চাইল।

ফিরহাদ হাকিম, শান্তনু সেন, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, দেবাশিস কুমারদের সঙ্গে ধৃত দেবাঞ্জনের ছবি ছড়িয়ে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির টুইটার হ্যান্ডেল থেকে লেখা হয়েছে, “ছবির ব্যক্তিটি হল দেবাঞ্জন দেব, ভুয়ো আইএস অফিসার এবং জাল ভ্যাকসিন কাণ্ডে গ্রেফতার ব্যক্তি। শাসক দল ও প্রশাসনের মদত না থাকলে এই জালিয়াতি ঘটানো সম্ভব? চাল, ত্রিপলের পর এবার ভ্যাকসিন নিয়েও জালিয়াতি? মানুষের বিশ্বাসের এই মর্যাদা দিচ্ছে তৃণমূল!!”
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধনকে মেনশন করে, রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ‘ভয়ানক’ অবস্থার কথা তুলে ধরতে চেয়েছেন। সেখানে শুভেন্দু আরও লিখেছেন, যেখানে একজন সাংসদ জাল ভ্যাকসিন পাচ্ছেন সেখানে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়?

প্রসঙ্গত, ভুয়ো টিকাকরণ কেন্দ্রে গিয়ে করোনা টিকা নিয়েছিলেনযাদবপুরের তৃণমূল সাংসদ মিমি চক্রবর্তী। তাঁর সঙ্গে ওই কেন্দ্র থেকে টিকা পেয়েছিলেন আরও অনেকেই। তাঁদের সকলকেই জাল টিকা দেওয়া হয়েছিল, এদিন তেমনটাই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন কলকাতা পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য অতীন ঘোষ।

বৃহস্পতিবার অতীন ঘোষ জানিয়েছেন, মিমিদের যে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে তা আদতে জাল। বেশ কিছু লক্ষণ দেখে একথা অনুমান করেছে পুরসভা। কারণ প্রথমত যে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছিল তার গায়ে লেখা ছিল কোভ্যাকসিন রিকম্বিনেন্ট বা কোভিশিল্ড রিকম্বিনেন্ট। জলের সঙ্গে গুঁড়ো পাউডার জাতীয় কিছু মিশিয়ে এই ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়েছিল বলে অনুমান কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিকদের।

এছাড়া ওই ভ্যাকসিনের শিশির গায়ে লেখা ছিল না কোনওরকম এক্সপায়ারি ডেট বা ব্যাচ নম্বরও। তাতে সন্দেহ আরও বেড়েছে পুরসভার আধিকারিকদের। অতীন ঘোষের বক্তব্য, ‘এই ভ্যাকসিন যদি আসল হত তবে রিকম্বিনেন্ট কথাটি লেখা থাকত না। ভ্যাকসিন যে সম্পূর্ণ জাল, প্রাথমিক তদন্তে সেটাই উঠে এসেছে।’ তবে গুঁড়ো পাউডারের ব্যাপারে বিশেষ বিস্তারিত তথ্য যায়নি। এর ফরেন্সিক তদন্ত করা হবে বলে খবর।

গতকাল সামনে এসেছিল কসবার এই ভুয়ো টিকাকরণ কেন্দ্রের কথা। যাদবপুরের সাংসদ মিমি চক্রবর্তী এই চক্রের পর্দাফাঁস করেছেন। তিনি নিজেও ওখান থেকেই টিকা নিয়েছিলেন। কিন্তু ফোনে মেসেজ না আসায় তাঁর সন্দেহ হয়। তারপরই তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখেন। জানা যায়, পুরসভার অনুমতি ছাড়াই ওই টিকাকরণ কেন্দ্রের কাজ চলছিল। মূলত তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ, বিশেষ ভাবে সক্ষম এবং দুঃস্থ ও গরিবকে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল কসবার ওই শিবিরে। সেখানেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল মিমি চক্রবর্তীকে।

কোউইন ওয়েবসাইট থেকে কোনও ভ্যাকসিন নেওয়ার সার্টিফিকেটও পাননি বলে অভিযোগ করেছেন মিমি চক্রবর্তী। এদিন পুরসভার বক্তব্যের পর দ্য ওয়ালের তরফে মিমি চক্রবর্তীর প্রতিক্রিয়া জানার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু সাংসদ ফোন তোলেননি। তবে তৃণমূলের বিরুদ্ধে টিকা কেলেঙ্কারি নিয়ে মাঠে নামতে কালক্ষেপ করল না বিজেপি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.