খনিতে কাজ করা শ্রমিকদের কাশির সমস্যা: করোনার উপসর্গ কিনা জানালেন চিকিৎসকরা

করোনার উপসর্গর মধ্যে অন্যতম হল কাশি৷ একটু কাশি হলেই মানুষের মনে এখন করোনা আতঙ্ক তৈরি হয়৷ অথচ দেখা যায়, পাথর শিল্পাঞ্চলের কাজে যুক্ত শ্রমিকরা কাশির সমস্যায় দীর্ঘদিন ধরে ভোগেন৷ এর কারণ কী? এটা কি করোনার লক্ষণ নাকি অন্য রোগ? জেনে কী বলছেন চিকিৎসকরা?

চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস জানিয়েছেন, খনিতে কাজ করা শ্রমিকরা যাঁরা কাশির সমস্যায় ভুগছেন তাঁদের এই রোগ করোনাভাইরাস নয়৷ তবে অত্যন্ত ভয়ঙ্কর রোগ৷ যে রোগটির নাম ‘সিলিকোসিস’ (Silicosis)৷ প্রতি দিন বিষাক্ত সিলিকা গুঁড়ো ওঁদের শরীরে ঢুকে ফুসফুস দুটো ক্রমশ ঝাঁজরা করে ফেলে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এটি মূলত পেশাগত রোগ। এটি এমন একটি রোগ, যার মূলে রয়েছে ‘ক্রিস্টালাইজ়ড সিলিকা’ বা স্ফোটিকাকৃতি বালি বা পাথরের কণা। যেখানে এমন কণা উড়ছে, দীর্ঘদিন সেই পরিবেশে কাজ করলে বালি, পাথরের কণা জমে জমে ফুসফুসের উপরি ভাগের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে সিলিকোসিস রোগ হতে পারে। এই রোগের উপসর্গ বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, জ্বর, শেষ দিকে শরীর নীলাভ হয়ে যাওয়া।

আরও পড়ুন: জেনে নিন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বাচ্চার খাদ্যতালিকায় কী কী পরিবর্তন করবেন

এই সিলিকোসিস থেকে টিউবারকিউলোসিস, নিউমোনিয়া এমনকি ফুসফুসের ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা থাকে৷ খানিকটা রেহাই পেতে বিশেষ ধরণের মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা৷ এই রোগে ইতিমধ্যেই অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন৷

সিলিকোসিসের প্রাথমিক লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে: কফ, প্রচুর কাশি, শ্বাস নিতে সমস্যা। গুরুতর লক্ষণ-ের মধ্যে রয়েছে ঠোঁটের রঙ নীল হয়ে যায়, জ্বর, ক্লান্ত বোধ হওয়া, হঠাৎ বুকে ব্যথা, ওজন হ্রাস ও পায়ে ব্যথা বা ফোলাভাব।

উল্লেখ্য, ২০১১ সালে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সংসদে পেশ করেছিল একটি বিশেষ রিপোর্ট। যা বলছে, পাথর ভাঙার বৈধ কারখানাগুলিতে কর্মরত প্রায় এক কোটি শ্রমিক এই রোগের শিকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.