৯ হাজার ৩৭১ কোটি টাকা দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে ফিরিয়ে দিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)

বিজয় মালিয়া, নীরব মোদি এবং মেহুল চোকসির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়েছে আগেই। আর তা বিক্রি করেই ৯ হাজার ৩৭১ কোটি টাকা দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে ফিরিয়ে দিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। বুধবার ট্যুইটারে বিবৃতি দিয়ে একথা জানিয়েছে তারা। দেশের একঝাঁক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার পর পরিশোধ না করে বিদেশে পালিয়েছেন এই তিন শিল্পপতি। সব মিলিয়ে ২২ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকার লোকসান হয়েছে ব্যাঙ্কগুলির। ইডির সৌজন্যে সেই ক্ষতিতে কিছুটা হলেও প্রলেপ পড়ল।
একা বিজয় মালিয়ার ঋণের পরিমাণই প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। নীরব মোদি ও মেহুল চোকসি প্রধানত পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক থেকে বছরের পর বছর ধরে হাজার হাজার কোটি টাকা ধার করেছেন। আর সেই টাকা না মিটিয়েই বিদেশে পালিয়েছেন। এই ব্যাঙ্কলুট ধরা পড়ার পরই তাঁদের বিরুদ্ধে নোটিস জারি হয়। ততক্ষণে তিনজনেই বিভিন্ন দেশে নিরাপদ আশ্রয়ে। এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের ভারতে ফেরাতে লাগাতার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত নীরব মোদি ও বিজয় মালিয়াকে লন্ডন থেকে এবং মেহুল চোকসিকে অ্যান্টিগা থেকে ফিরিয়ে আনা যায়নি। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া চলছে। শুধু এই তিনজন নয়, আইপিএল দুর্নীতিতে যুক্ত ললিত মোদিও রয়ে গিয়েছেন ব্রিটেনে। তাঁকেও বহুবার চেষ্টা সত্ত্বেও ফেরাতে ব্যর্থ হয়েছে কেন্দ্র।
আর্থিক প্রতারণায় অভিযুক্ত ‘ফেরার’ শিল্পপতিদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে মোদি সরকার। বুধবার সেকথা জানিয়েই অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেছেন, এ পর্যন্ত নিজেদের উদ্যোগে বাজেয়াপ্ত হওয়া সম্পত্তি বিক্রি করে ১ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা আদায় করতে সক্ষম হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি। পাশাপাশি সম্পত্তি বিক্রির মাধ্যমে আরও ৯ হাজার ৪১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা তারা আদায় করতে সক্ষম হবে। একইসঙ্গে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটও এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ওই তিন ‘ফেরার’ শিল্পপতির ১৮ হাজার ১৭০ কোটি ২ লক্ষ টাকার সম্পত্তি আটক করা হয়েছে, যা ব্যাঙ্কগুলির মোট ক্ষতির প্রায় ৮০ শতাংশ। তার মধ্যে ৯ হাজার ৩৭১ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে ব্যাঙ্কগুলিকে। অর্থাৎ, এখনও পর্যন্ত ৪০ শতাংশ ক্ষতিপূরণ হয়েছে তাদের।
এই খবর সামনে আসার পরই এদিন অ্যান্টিগায় থাকায় মেহুল চোকসি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, ‘তাঁর কাছে ব্যাঙ্কের যত টাকা বকেয়া আছে, তার থেকে অনেক বেশি অঙ্কের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।’ এদিকে, এই তিনজনের মধ্যে বিজয় মালিয়া ও নীরব মোদিকে শীঘ্রই ভারতে ফেরানো যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছে সিবিআই। কারণ, বিজয় মালিয়া আর ব্রিটেনের সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করতে পারবেন না। আর নীরব মোদির প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়াও প্রায় শেষ ধাপে। চোকসির বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা দিতে অ্যান্টিগা আদালতে যাচ্ছেন ভারতের তদন্তকারী অফিসাররা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.