করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গের মধ্যে দিয়ে চলছে গোটা দেশ। আশঙ্কা করা হচ্ছে ৬ থেকে ৮ সপ্তাহের মধ্যে ভারতে আছড়ে পড়তে পারে করোনার তৃতীয় তরঙ্গ (Corona 3rd Wave)। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, করোনার নয়া ডেল্টা প্লাস (Delta Plus) ভ্যারিয়েন্টের কারণেই আসতে পারে তৃতীয় তরঙ্গ। ইতিমধ্যেই গোটা বিশ্বের ২০০ জন সংক্রমিতের মধ্যে ৩০টি কেস ভারতের। কাজেই, ভবিষ্যতে এই ভ্যারিয়েন্ট ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে মনে করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের (Ministry of Health)তরফে জানানো হয়েছে, ভারতে ৩০ টি ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট (Delta Plus)সংক্রমণের হদিশ মিলেছে। এর মধ্যে ১৬ টি মহারাষ্ট্রের, বাকি ঘটনাগুলি মধ্যপ্রদেশ এবং কেরালায়। স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ বলেছেন যে, ভারতে যে ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে তা অন্যান্য নয়টি দেশে পাওয়া ভ্যারিয়েন্টগুলোর মধ্যে অন্যতম। স্বাস্থ্য মন্ত্রক এটিকে ‘ভ্যারিয়েন্ট অফ কনসার্ন’ বলে অভিহিত করেছে। ডেল্টা প্লাসে ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এটি সহজেই ফুসফুসের কোষগুলিকে অবরুদ্ধ করে, এবং অ্যান্টিবডি দ্রুত হ্রাস করে।
তিনি আরো বলেন, ৮০ টি দেশে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টটি সনাক্ত করা হয়েছে। ভারত ছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, পর্তুগাল, সুইজারল্যান্ড, জাপান, পোল্যান্ড, নেপাল, চীন এবং রাশিয়ায় করোনার ভাইরাসের ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্টটি পাওয়া গিয়েছে। ভূষণ বলেন যে, কোনও রূপের ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতার উপর নির্ভর করে সেটি কতটা উদ্বেগজনক।
তিনি বলেন এটি বর্তমানে সংখ্যার দিক থেকে ছোট দেখাচ্ছে তবে এটিকে বাড়িয়ে তুলতে চাইনা। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফ থেকে একটি নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়েছে, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ এবং কেরালাকে এই সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া উচিত। জনসাধারণের ভিড় নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, পাশাপাশি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ব্যাপক পরীক্ষা এবং টিকাকরণের উপর জোর দিতে বলা হয়েছে।
গত বছর শেষের দিক থেকে করোনার ভ্যারিয়েন্ট B.1.617.2-এর জেরে দেশজুড়ে দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পরে। এদিকে ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্টে রয়েছে K417N মিউটেশন। যেটাকে প্রাথমিকভাবে বলা হচ্ছে B.1.617.2.1. ভ্যারিয়েন্ট।
পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব, খিদে চলে যাওয়া, জয়েন্ট পেন এর মতন লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারে ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্টে। এর পাশাপাশি জ্বর, ক্লান্তি, গলায় ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, শুকনো কাশি, ডায়েরিয়া, মাথায় যন্ত্রণা, স্বাদ চলে যাওয়া, গন্ধ চলে যাওযার মতো লক্ষণ থাকতে পারে। এই পরিস্থিতিতে বিজ্ঞানীরা চেষ্টা করছেন-কোভিড-১৯ এবং ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্টের মধ্যে প্রধান পার্থক্য খুঁজে বের করার।