করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা নিয়ে এবার বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যসচিবদের আরও একবার চিঠি দিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। কোনওরকম তাড়াহুড়ো করে যাতে বিধি-নিষেধ তুলে দেওয়া না হয়, তা নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে চিঠিতে। শনিবার রাজ্যগুলিকে চিঠি পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা। যথাযথভাবে যাতে করোনাবিধি পালিত হয় তা নিশ্চিত করতে বলার পাশাপাশি টেস্ট এবং টিকাকরণে জোর দিতে বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব ।
চিঠিতে বলা হয়েছে, করোনা বিধি-নিষেধ পুরোপুরি তুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে দেখতে হবে পরীক্ষা ও টিকাকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন কি না। পুজোর আগেই সম্ভবত দেশে ধেয়ে আসবে কোভিডের তৃতীয় ঢেউ। আর সে কারণেই ফের একবার সতর্কবার্তা দিয়ে চিঠি নবান্নে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিবের কাছেও পাঠানো হয়েছে অমিত শাহের মন্ত্রক থেকে।
সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই একটি চিঠি প্রত্যেকটি রাজ্যের মুখ্যসচিবকে পাঠানো হয়েছে। বলা হয়েছে, পরিস্থিতি বুঝে সঠিক পরিকল্পনা করে তবেই বিধি-নিষেধ তুলতে হবে। করোনা সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙতে টিকাকরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদিও ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি রাজ্যে বিধি-নিষেধ ক্রমশ শিথিল করা হয়েছে। রাজধানী দিল্লির মত রাজ্যে বর্তমানে বিধি-নিষেধে অনেক ছাড় মিলছে। এরই মাঝে করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার আশঙ্কা । এই আবহে করোনাবিধি যথাযথভাবে পালিত হয়, তা নিয়ে শনিবার রাজ্যগুলিকে নোটিশ পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা। রাজ্যের মুখ্যসচিবদের চিঠি দিয়েছেন তিনি। তাতে স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘টেস্ট-ট্র্যাক-ট্রিট-ভ্যাকসিনেশন’ চতুষ্পদী সমীকরণ ঠিকমতো মেনে চলতে হবে এবং কোথাও যাতে এর অন্যথা না ঘটে, তা দেখতে হবে।
এদিকে সম্প্রতি মেডিক্যাল জার্নাল ল্যানসেটে ২১ জন বিশেষজ্ঞ প্যানডেমিকের তৃতীয় ঢেউকে আটকাতে আগে থেকে প্রস্তুতি নেওয়ার কথা জানান। বিশেষজ্ঞদের মধ্যে রয়েছেন কিরণ মজুমদার শাহ আর সার্জেন চিকিৎসক দেবী শেঠী। বিশেষজ্ঞদের মত, হাসপাতালে পরিষেবা, জরুরি ওষুধ, অক্সিজেন, অ্যাম্বুলেন্সের মত সব গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে একটা স্বচ্ছ জাতীয় মূল্য নীতি থাকা উচিত। হাসপাতালগুলির খরচ স্বাস্থ্য বিমার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত, যেমনটা বেশ কিছু রাজ্যে হয়েছে। তাছাড়া তাঁদের দাবি, স্বাস্থ্য পরিষেবা সংস্থার বিকেন্দ্রীকরণ অবশ্যই প্রয়োজনীয়।
এর আগেও গত এপ্রিলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে চিঠি এসেছিল মুখ্যসচিবের কাছে। সে বার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, চিকিৎসা ক্ষেত্র ছাড়া যেন অন্য কোনও কাজে অক্সিজেন ব্যবহার করা না হয়। সে সময়ে চিকিৎসা ক্ষেত্রে অক্সিজেন চাহিদা মেটাতেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এবার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কায় এই চিঠি বড়সড় প্রস্তুতি বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।