চিটফাণ্ড কাণ্ডের তদন্তে নেমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আঁকা ছবি বিক্রি নিয়ে অনেক আগেই খোঁজ খবর শুরু করেছিল সিবিআই। এ বার সে সম্পর্কে তথ্য ও নথি সংগ্রহের জন্য আরও গতি বাড়াল কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সি।
সিবিআই সূত্রে খবর, আগামী ৫ জুলাই এ ব্যাপারে জেরার জন্য ডাকা হয়েছে শিল্পী শুভাপ্রসন্নকে। সেই সঙ্গে শিবাজি পাঁজাকেও কিছু নথিপত্র পেশ করতে বলেছেন সিবিআই কর্তারা। এ ছাড়াও ডাকা হয়েছে, তৃণমূলের রাজ্যসভার এক প্রাক্তন সাংসদকেও।
বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের প্রথম জমানায় রীতিমতো অমল আলোয় ছিলেন শুভাপ্রসন্ন। মুখ্যমন্ত্রীর ছবি আঁকা ও তার বিক্রি এবং নিলামের যোগ ছিল বলে সিবিআইয়ের একটি সূত্রের দাবি। সিবিআইয়ের নোটিস সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে এ দিন শুভাপ্রসন্ন বলেন, আমাকে জেরা করতে ডাকেনি। তবে সাক্ষী হিসাবে কিছু কাগজপত্র চেয়েছে। পাঁচ তারিখ সিবিআই দফতরে যাব।
অন্যদিকে শিবাজি পাঁজাও দ্য ওয়ালকে জানান, তিনি এখন কলকাতার বাইরে রয়েছেন। ফিরে এসে সাত-আট তারিখ নাগাদ সিবিআই দফতরে গিয়ে কিছু নথিপত্র জমা দেবেন তিনি।
এরই পাশাপাশি কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে হেফাজতে নিতেও এখন সিবিআই সক্রিয়। এ ব্যাপারে এ দিন কলকাতা হাইকোর্টে মামলার শুনানি হয়েছে। আদালত জানিয়েছে, ২১ জুলাই পর্যন্ত রাজীবকে গ্রেফতার করা যাবে না। মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ১৫ তারিখ।
সিবিআইয়ের সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রীর আঁকা ছবি চিটফান্ড সংস্থাগুলিকে কিনতে বাধ্য করা হয়েছিল। সে ব্যাপারে এক চলচ্চিত্র প্রযোজকের যেমন ভূমিকা ছিল। তেমনই আরও কয়েক জন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তদন্ত এজেন্সির এক কর্তার কথায়, এই ঘটনায় টাকা পয়সার লেনদেনের ব্যাপারটা খুবই কাঁচা হাতে করা হয়েছে। ফলে মানি ট্রেইল তথা টাকা পয়সার লেনদেন নিয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া গিয়েছে। সে ব্যাপারে আরও জিজ্ঞাসাবাদের প্রক্রিয়া এখনও চলছে।
এ ব্যাপারে তৃণমূলের কোনও মুখপাত্র এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। শাসক দল অবশ্য বরাবরই বলছে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা নিয়ে সিবিআইয়ের অপব্যবহার করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ঘরোয়া আলোচনায় তৃণমূলের অনেক নেতা আশঙ্কা করছেন, চিটফান্ড কাণ্ডের সঙ্গে তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের যোগ প্রমাণে মরিয়া সিবিআই। সেই কারণেই ছবি বিক্রি নিয়ে তদন্তে জোর দেওয়া হয়েছে। যদিও সিবিআইয়ের বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই তদন্ত করা হচ্ছে। এর মধ্যে কোনও রাজনৈতিক প্রভাবের প্রশ্ন নেই।