জোগান দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। তাই করোনার প্রতিষেধক আর কিনতে হবে না। সেই জন্য বরাত বাতিল করার পাশাপাশি প্রতিষেধকের জন্য দেওয়া অগ্রিম টাকাও ফেরত চেয়ে টিকা প্রস্তুতকারী দুই সংস্থাকে চিঠি লিখল রাজ্য সরকার। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ওই দুই সংস্থাকে প্রায় ৭২ কোটি টাকা অগ্রিম দেওয়া হয়েছিল।
কেন্দ্রীয় টিকা নীতি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্প্রতি ঘোষণা করেন, সব রাজ্যকেই বিনামূল্যে টিকা জোগাবে কেন্দ্র। রাজ্যের প্রশাসনিক সূত্রের খবর, কেন্দ্রের সেই ঘোষণার পরেই কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন কেনার বরাত বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী কোভিশিল্ড প্রস্তুতকারী পুণের সিরাম ইনস্টিটিউট এবং কোভ্যাক্সিন প্রস্তুতকারী হায়দরাবাদের ভারত বায়োটেক সংস্থাকে বিষয়টি জানিয়ে দেয় রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য শিবিরের এক আধিকারিক বলেন, “বরাত বাতিলের পরে টিকার জন্য অগ্রিম দেওয়া টাকা ফেরত চেয়ে কয়েক দিন আগে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে সংস্থা দু’টি কবে বরাতের টাকা ফেরত দেবে, সেই বিষয়ে তারা এখনও কিছু জানায়নি।”
কেন্দ্রের আগেকার নির্দেশিকা অনুসারে গত মে থেকে সরাসরি প্রস্তুতকারী সংস্থা থেকে প্রতিষেধক কিনতে শুরু করে রাজ্য। ১৮-৪৪ বছর বয়সিদের মধ্যে কয়েকটি ক্যাটেগরিকে ‘সুপার স্প্রেডার’ হিসেবে চিহ্নিত করে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে প্রতিষেধক দেওয়ার উপরে জোর দেয় রাজ্য প্রশাসন। সরকারি সূত্রের খবর, মে মাসে কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ১৮ লক্ষ ডোজ় টিকা কেনা হয়েছে। জুনে রাজ্যের তরফে দু’টি টিকা মিলিয়ে আরও ২২ লক্ষ ডোজ়ের বরাত দেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে সাড়ে ১৮ লক্ষ ডোজ় কোভিশিল্ড এবং সাড়ে তিন লক্ষ কোভ্যাক্সিন ছিল। প্রতি ডোজ় ৩০০ টাকা করে সাড়ে ১৮ লক্ষ কোভিশিল্ডের জন্য প্রায় ৫৮ কোটি (পাঁচ শতাংশ জিএসটি-সহ) এবং সাড়ে তিন লক্ষ ডোজ় কোভ্যাক্সিনের জন্য ৪০০ টাকা করে প্রায় ১৪ কোটি টাকা (পাঁচ শতাংশ জিএসটি-সহ) অগ্রিম দেওয়া হয়েছিল।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, চলতি মাসে কেন্দ্রের কাছ থেকে কোভ্যাক্সিন ও কোভিশিল্ড মিলিয়ে ১৫ লক্ষ ৪৭ হাজার ডোজ় টিকা মিলেছে। মাসের শেষে কেন্দ্রের কাছ থেকে আরও ২৬ লক্ষ ১২ হাজার ডোজ় টিকা আসতে পারে।
৪৫ বছরের বেশি বয়সিদের জন্য বিনামূল্যে প্রতিষেধক পাঠায় কেন্দ্র। তারই অঙ্গ হিসেবে আজ, বৃহস্পতিবার রাজ্যে সাড়ে সাত লক্ষ ডোজ় কোভিশিল্ড আসার কথা আছে। স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা কমছে।