প্রিয়াঙ্কা শর্মা মামলায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে আদালত অবমাননার নোটিস ধরালো সুপ্রিম কোর্ট। এ ব্যাপারে চার সপ্তাহের মধ্যে রাজ্য সরকারের থেকে জবাব চেয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
লোকসভা নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় একটি মিম প্রকাশ করেছিলেন বিজেপি-র যুব নেত্রী প্রিয়াঙ্কা শর্মা। মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে সেই মিম প্রকাশের জন্য তাঁকে গ্রেফতার করেছিল রাজ্য পুলিশ। সেই সময় বাংলায় আইনজীবীদের ধর্মঘট চলছিল। ফলে রেহাই পেতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন প্রিয়াঙ্কার আইনজীবীরা। মামলার শুনানির পর অবিলম্বে প্রিয়াঙ্কাকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।
কিন্তু এ দিন বিচারপতিরা বলেন, আদালত অবিলম্বে প্রিয়াঙ্কাকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিলেও রাজ্য সরকার তা করেনি। প্রিয়াঙ্কাকে মুক্তি দিতে দেরি করেছিল। তা দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে অবমাননা করার সামিল। কেন তা করা হল, তার কৈফিয়ত দিয়ে চার সপ্তাহের মধ্যে রাজ্য সরকারকে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সঞ্জীব খান্নার অবসরকালীন বেঞ্চে ওই মামলার শুনানি হয়। বিচারপতিরা প্রিয়ঙ্কাকে নিঃশর্তে জামিন দেন। তাঁরা বলেন, ফেসবুকে ওই ছবি পোস্ট করার জন্য প্রিয়ঙ্কা ক্ষমা চেয়েছেন। তাঁকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। কিন্তু তারপরেও রাজ্য টালবাহানা করে বলে অভিযোগ।
সুপ্রিম কোর্টের এ দিনের নির্দেশ নিয়েব রাজ্য বিজেপি-র অন্যতম সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, “এ রাজ্য আইন, আদালত কিচ্ছু মানে না। মুখ্যমন্ত্রী যেমন ইচ্ছে চলেন। সুপ্রিম কোর্টের চড় খেয়েছে। এরকম আরও চড় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের জন্য অপেক্ষা করছে।”
মেটগালা ফ্যাশন শো-তে বলিউড অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার একটি ছবি ভাইরাল হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেই ছবিতেই মুখ্যমন্ত্রীর মুখ বসিয়ে বিকৃত করার অভিযোগ উঠেছিল হাওড়ার প্রিয়াঙ্কা শর্মার বিরুদ্ধে। দাশনগর থানায় প্রথম অভিযোগ করেন হাওড়ার প্রাক্তন মেয়র পারিষদ সদস্য তথা তৃণমূল নেতা বিভাষ হাজরা। তদন্তে নামে সাইবার ক্রাইম ব্রাঞ্চ। গ্রেফতার করা হয় বছর ছাব্বিশের এই বিজেপি-র যুব মোর্চার নেত্রীকে।
প্রিয়াঙ্কার গ্রেফতারকে ভোটের সময় রীতিমতো ইস্যু করে ফেলে বিজেপি। এমনকী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলায় এসে প্রিয়াঙ্কার গ্রেফতার নিয়ে মমতাকে নিশানা করেছিলেন। টাকির সভা থেকে বলেছিলেন, “দিদি আপনি তো পেন্টিং করেন। সারদা, নারদার মন্ত্র জপে সেই ছবি কোটি কোটিতে টাকায় বিক্রিও হয়। রাগ কমাতে আমার একটা ছবি আঁকুন। যত খারাপই হোক আঁকুন। আর ২৩ মে-র পরে আমি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে নিলে আমার বাসভবনে আসুন। ওই খারাপ ছবিটা আমায় উপহার দিন। সারা জীবন কাছে রাখব। আপনার নামে এফআইআর করব না।”