বাংলা ছবির গানের জগতে এক অবিস্মরণীয় নাম হেমন্ত মুখোপাধ্যায় (Hemanta Mukhopadhyay) । তিনি ছিলেন একাধারে গায়ক, সুরকার ও প্রযোজক।
১৯২০ সালের ১৬ জুন তার বারাণসীতে মামার বাড়িতে জন্ম হয় হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের। তাঁর বাবা কালিদাস মুখোপাধ্যায় সাধারণ কেরানির চাকরি করতেন। হেমন্ত’র আদি বাড়ি দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার ‘বহরু’ গ্রামে। ১৯০০ সালের শুরুর দিকে বাবা কালিদাস মুখোপাধ্যায় তাঁর পরিবার নিয়ে কলকাতার ভবানীপুরে বসবাস শুরু করেন।
হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ভবানীপুরের নাসিরুদ্দিন স্কুল এবং মিত্র ইন্সস্টিটিউশন থেকে প্রাথমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পড়াশোনা সম্পূর্ন করেন। এরপরে বাবার ইচ্ছায় তিনি যাদবপুরের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হন। কিন্তু গানের কারণেই হেমন্ত’র আর ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া সম্পূর্ণ করা হয় নি।
ছোট থেকেই হেমন্ত’র গানের প্রতি খুব আগ্রহ ছিল। স্কুলে পড়ার সময় টিফিনবেলায় তিনি বন্ধুদের গান গেয়ে শোনাতেন। মিত্র ইন্সস্টিটিউশনে পড়ার সময় তাঁর সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় বিখ্যাত সাহিত্যিক ও কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের। স্কুলে সর্বক্ষণ গান গাওয়ার কারণে একবার পরীক্ষার আগে স্কুল থেকে তাঁর নাম কেটে দেওয়া হয়েছিল। বাবা কালিদাস মুখোপাধ্যায়ের অনুরোধে তাঁকে আবার স্কুলের পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেওয়া হয়। আসলে চার ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে মেজো ছেলে হেমন্ত’র ছোট থেকে পড়াশোনায় আগ্রহ দেখে বাবা কষ্ট করেই তাঁকে মিত্র ইনস্টিটিউশনে ভর্তি করিয়েছিলেন। বাবা কালিদাসের স্বপ্ন ছিল ছেলে হেমন্তকে ইঞ্জিনিয়ার তৈরি করার।
তবে প্রথমদিকে হেমন্ত’র সাহিত্যিক হবার ইচ্ছা ছিল। তিনি অনেক ছোট গল্প লিখেছিলেন। তাঁর লেখা ছোট গল্প ‘একটিদিন’ খ্যাতনামা ‘দেশ’ পত্রিকাতে ছাপাও হয়েছিল। তবে বন্ধু সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় হেমন্ত’র গানের জগতে প্রবেশ ঘটে। সুভাষ রেডিয়োর তবলচি অসিতবরণের সাহায্যে ‘অল ইন্ডিয়া রেডিও’ তে হেমন্তর অডিশনের ব্যবস্থা পাকা করে ফেলেন। অডিশন দেবার প্রায় তিন মাস বাদে হেমন্ত রেডিওতে অনুষ্ঠান করার ডাক পায়। ১৯৩৫ সালে হেমন্ত ‘অল ইন্ডিয়া রেডিও’ তে জীবনের প্রথম গান রেকর্ড করেন। গানটি হলো “আমার গানেতে এলে নবারূপী চিরন্তনী”। ১৯৩৭ সালে তিনি ‘গ্রামাফোন কোম্পানি অফ ইন্ডিয়া’র জন্য “জানিতে যদি গো তুমি” ও “বলো গো বলো মোরে” গান দুটি রেকর্ড করেন। গান দুটির কথা দিয়েছিলেন নরেশ ভট্টাচার্য ও সুর দিয়েছিলেন শৈলেশ দত্তগুপ্ত। ১৯৪০ সালে হেমন্ত জীবনের প্রথম হিন্দি গানও ‘গ্রামাফোন কোম্পানির জন্য রেকর্ড করেছিলেন। এরপর থেকে প্রতি বছর ও ১৯৮৪ সাল অবধি হেমন্ত মুখোপাধ্যায় গ্রামাফোন কোম্পানির জন্য গান রেকর্ড করে গিয়েছেন। অনেক সঙ্গীত শিল্পী সেই সময় তাঁর গানের প্রশংসা করেছিলেন এবং রেডিও থেকেও পরপর অনুষ্ঠান করার ডাক আসতে শুরু হল। এই সবের মাঝে নিজের খরচ চালানোর জন্য তিনি গানের ক্লাস নেওয়া শুরু করলেন।
১৯৪০ সালে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ‘ইন্ডিয়ান পিপলস থিয়েটার এসোসিয়েশন’(IPTA) এর সদস্য হন। এই সময় অনেক নতুন ব্যক্তিত্বদের সাথে তাঁর পরিচয় হয়। সেইরকমই একজন ছিলেন সঙ্গীত পরিচালক সলিল চৌধুরী। ১৯৪১ সালে তিনি বাংলা ছবি ‘নিমাই সন্ন্যাস’এর জন্য প্রথম গান রেকর্ড করেন। ১৯৪৪ সালে তিনি হিন্দি ছবি ‘ইরাদা’র জন্য প্রথম গান রেকর্ড করেন। ১৯৪৪ সালে বাংলা ছবি ‘প্রিয় বান্ধবী’র জন্য তিনি রবীন্দ্র সঙ্গীত উপস্থাপন করেন। তিনি রবীন্দ্র সঙ্গীতকে নিয়ে আলাদা ভাবনা চিন্তা শুরু করেছিলেন এবং ওই বছরেই গ্রামাফোন কোম্পানির জন্য রবীন্দ্র সঙ্গীতের গান রেকর্ড করেন। তিনি আকাশবানী রেডিওতেও রবীন্দ্র সঙ্গীত পরিবেশন করতেন। বলাবাহুল্য বাঙালির গান ও বাঙালির সংস্কৃতি তিনি গানের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনতে শুরু করেন।
বাংলা ছবির গানের জগতে এক অবিস্মরণীয় নাম হেমন্ত মুখোপাধ্যায় (Hemanta Mukhopadhyay) । তিনি ছিলেন একাধারে গায়ক, সুরকার ও প্রযোজক।
১৯২০ সালের ১৬ জুন তার বারাণসীতে মামার বাড়িতে জন্ম হয় হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের। তাঁর বাবা কালিদাস মুখোপাধ্যায় সাধারণ কেরানির চাকরি করতেন। হেমন্ত’র আদি বাড়ি দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার ‘বহরু’ গ্রামে। ১৯০০ সালের শুরুর দিকে বাবা কালিদাস মুখোপাধ্যায় তাঁর পরিবার নিয়ে কলকাতার ভবানীপুরে বসবাস শুরু করেন।
হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ভবানীপুরের নাসিরুদ্দিন স্কুল এবং মিত্র ইন্সস্টিটিউশন থেকে প্রাথমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পড়াশোনা সম্পূর্ন করেন। এরপরে বাবার ইচ্ছায় তিনি যাদবপুরের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হন। কিন্তু গানের কারণেই হেমন্ত’র আর ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া সম্পূর্ণ করা হয় নি।
ছোট থেকেই হেমন্ত’র গানের প্রতি খুব আগ্রহ ছিল। স্কুলে পড়ার সময় টিফিনবেলায় তিনি বন্ধুদের গান গেয়ে শোনাতেন। মিত্র ইন্সস্টিটিউশনে পড়ার সময় তাঁর সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় বিখ্যাত সাহিত্যিক ও কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের। স্কুলে সর্বক্ষণ গান গাওয়ার কারণে একবার পরীক্ষার আগে স্কুল থেকে তাঁর নাম কেটে দেওয়া হয়েছিল। বাবা কালিদাস মুখোপাধ্যায়ের অনুরোধে তাঁকে আবার স্কুলের পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেওয়া হয়। আসলে চার ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে মেজো ছেলে হেমন্ত’র ছোট থেকে পড়াশোনায় আগ্রহ দেখে বাবা কষ্ট করেই তাঁকে মিত্র ইনস্টিটিউশনে ভর্তি করিয়েছিলেন। বাবা কালিদাসের স্বপ্ন ছিল ছেলে হেমন্তকে ইঞ্জিনিয়ার তৈরি করার।
তবে প্রথমদিকে হেমন্ত’র সাহিত্যিক হবার ইচ্ছা ছিল। তিনি অনেক ছোট গল্প লিখেছিলেন। তাঁর লেখা ছোট গল্প ‘একটিদিন’ খ্যাতনামা ‘দেশ’ পত্রিকাতে ছাপাও হয়েছিল। তবে বন্ধু সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় হেমন্ত’র গানের জগতে প্রবেশ ঘটে। সুভাষ রেডিয়োর তবলচি অসিতবরণের সাহায্যে ‘অল ইন্ডিয়া রেডিও’ তে হেমন্তর অডিশনের ব্যবস্থা পাকা করে ফেলেন। অডিশন দেবার প্রায় তিন মাস বাদে হেমন্ত রেডিওতে অনুষ্ঠান করার ডাক পায়। ১৯৩৫ সালে হেমন্ত ‘অল ইন্ডিয়া রেডিও’ তে জীবনের প্রথম গান রেকর্ড করেন। গানটি হলো “আমার গানেতে এলে নবারূপী চিরন্তনী”। ১৯৩৭ সালে তিনি ‘গ্রামাফোন কোম্পানি অফ ইন্ডিয়া’র জন্য “জানিতে যদি গো তুমি” ও “বলো গো বলো মোরে” গান দুটি রেকর্ড করেন। গান দুটির কথা দিয়েছিলেন নরেশ ভট্টাচার্য ও সুর দিয়েছিলেন শৈলেশ দত্তগুপ্ত। ১৯৪০ সালে হেমন্ত জীবনের প্রথম হিন্দি গানও ‘গ্রামাফোন কোম্পানির জন্য রেকর্ড করেছিলেন। এরপর থেকে প্রতি বছর ও ১৯৮৪ সাল অবধি হেমন্ত মুখোপাধ্যায় গ্রামাফোন কোম্পানির জন্য গান রেকর্ড করে গিয়েছেন। অনেক সঙ্গীত শিল্পী সেই সময় তাঁর গানের প্রশংসা করেছিলেন এবং রেডিও থেকেও পরপর অনুষ্ঠান করার ডাক আসতে শুরু হল। এই সবের মাঝে নিজের খরচ চালানোর জন্য তিনি গানের ক্লাস নেওয়া শুরু করলেন।
১৯৪০ সালে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ‘ইন্ডিয়ান পিপলস থিয়েটার এসোসিয়েশন’(IPTA) এর সদস্য হন। এই সময় অনেক নতুন ব্যক্তিত্বদের সাথে তাঁর পরিচয় হয়। সেইরকমই একজন ছিলেন সঙ্গীত পরিচালক সলিল চৌধুরী। ১৯৪১ সালে তিনি বাংলা ছবি ‘নিমাই সন্ন্যাস’এর জন্য প্রথম গান রেকর্ড করেন। ১৯৪৪ সালে তিনি হিন্দি ছবি ‘ইরাদা’র জন্য প্রথম গান রেকর্ড করেন। ১৯৪৪ সালে বাংলা ছবি ‘প্রিয় বান্ধবী’র জন্য তিনি রবীন্দ্র সঙ্গীত উপস্থাপন করেন। তিনি রবীন্দ্র সঙ্গীতকে নিয়ে আলাদা ভাবনা চিন্তা শুরু করেছিলেন এবং ওই বছরেই গ্রামাফোন কোম্পানির জন্য রবীন্দ্র সঙ্গীতের গান রেকর্ড করেন। তিনি আকাশবানী রেডিওতেও রবীন্দ্র সঙ্গীত পরিবেশন করতেন। বলাবাহুল্য বাঙালির গান ও বাঙালির সংস্কৃতি তিনি গানের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনতে শুরু করেন।
এরপর তিনি বাংলা ও হিন্দি ছায়া ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনার কাজ শুরু করেন। ১৯৪৭ সালে বাংলা ছবি ‘অভিযাত্রী’তে তিনি সঙ্গীত পরিচালনা করেন। পরিচালক হেমেন গুপ্তা ১৯৫১ সালে ‘আনন্দমঠ’ ছবিটির সঙ্গীত পরিচালনার জন্য হেমন্তকে বম্বে ডেকে পাঠান। হেমন্ত তাঁর পছন্দের গায়িকা লতা মঙ্গেশকরের কণ্ঠে এই ছবির ‘বন্দেমাতরম’ গানটি রেকর্ড করিয়েছিলেন এবং নিজের কণ্ঠে “জয় জগদীশ হরে” গানটি রেকর্ড করেন। সিনেমা হিট না হলেও গানগুলি সুপারহিট হয়েছিল। হেমন্তই প্রথম লতা মঙ্গেশকরকে বাংলা গানের জগতে নিয়ে আসেন।
হেমন্ত মুখোপাধ্যায়’কে লতা মঙ্গেশকর ও আশা ভোঁসলে এতটাই সম্মান করতেন যে হেমন্ত গান রেকর্ডের জন্য তাঁদের ডাকলেই তারা না করতে পারতেন না এবং গান গাওয়ার জন্য কোনো পারিশ্রমিক নিতেও রাজি হতেন না। বম্বেতে হেমন্ত অনেক হিন্দি ছবির সঙ্গীত পরিচালনা ও গান রেকর্ড করেছেন। ১৯৫৪ সালে ‘নাগিন’ ছবির গানগুলি ভীষণ হিট হয়েছিল।
লতা মঙ্গেশকরের কণ্ঠে হেমন্ত রবীন্দ্র সঙ্গীত “প্রেম একবারই এসেছিল নীরবে” রেকর্ড করিয়েছিলেন। আবার এই গানেরই সুরে হিন্দি আরেকটি গান “আজ রোনা পড়ে তো সমঝে” কিশোর কুমারের কণ্ঠে রেকর্ড করিয়েছিলেন তিনি। তবে ব্যক্তিগত ভাবে গানের সুর করার থেকে তিনি গান গাইতেই বেশি ভালো বাসতেন।
‘হারানো সুর’ ছবির “তুমি যে আমার” গানটির সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন হেমন্ত। এই গানটির সুরের সাথে নায়ক নায়িকার দৃশ্যায়নের শুটিং করার পর ছবির পরিচালক বলেছিলেন গানটি দৃশ্যের সঙ্গে ঠিক মানানসই হয়নি। কিন্তু হেমন্তের দূরদর্শিতা বলেছিল গানের সুরের সাথে একদম উপযুক্ত হয়েছে। পরবর্তীকালে গান ও ছবি দুইই সাফল্য লাভ করেছিল। কিশোর কুমার অভিনীত ‘লুকোচুরি’ ছবির সুরকার ও গায়ক ছিলেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। এই ছবির একটি গান “মুছে যাওয়া দিনগুলি” বিবিসি(BBC) এর বিচারে পঞ্চাশ বছরের সেরা গানের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছিল।
বাংলা সিনেমা জগতে উত্তম ও হেমন্ত জুটি বেশ জনপ্রিয় ও সফল হয়েছিল। হেমন্ত’র সুর ও গলায় এবং উত্তম কুমারের লিপে হিট কতগুলি ছবি হল- শাপমোচন, মরুতীর্থ হিংলাজ, সপ্তপদী, শেষ পর্যন্ত, হারানো সুর.. ইত্যাদি। এছাড়াও হিন্দি সিনেমা যেমন- বিশ সাল বাদ, বিন বাদল বরসাত, সাহেব বিবি আউর গুলাম ইত্যাদি ছবিতেও তিনি গানের মাধ্যমে নিজের জাত চিনিয়েছেন।
গায়ক ও সুরকারের সাথে সাথে তিনি একজন সফল প্রযোজকও ছিলেন। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী বেলা মুখোপাধ্যায় যৌথ ভাবে প্রযোজনা সংস্থা স্থাপন করেন। তাঁদের প্রযোজনা সংস্থার প্রথম ছবি ছিল মৃণাল সেনের পরিচালনায় ‘নীল আকাশের নিচে’। এই ছবিটি ব্যবসায়িক ভাবে ভীষণ সফল হয়েছিল। এছাড়াও ‘বিশ সাল বাদ’, ‘বিবি আউর মকান’, ‘খামোশি’, ‘বাঘিনী’, ‘বালিকা বধূ’… প্রভৃতি ছবি তাঁরা প্রযোজনা করেছিলেন। ‘নীল আকাশের নিচে’ ছবিটির গায়ক, সুরকার ও প্রযোজক ছিলেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায় নিজে। এই সিনেমার প্রশংসা করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরু।
হেমন্ত মুখোপাধ্যায় মারা যাবার ঠিক নয় বছর আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হন। তারপর থেকে তিনি বেশীরভাগ সময়ই শারীরিক ভাবে অসুস্থ থাকতেন। তবুও তাঁর কাজে ফাঁকি পড়েনি। এই সময় তার গাওয়া ‘দাদার কীর্তি’ ছবির “চরণ ধরিতে দিয়ো গো” এবং “এই করেছ ভালো নিঠুর হে” গানটি বেশ সফল হয়েছিল। তাপস পালের সাথে হেমন্ত’র বয়সের বিশাল পার্থক্য থাকলেও তাপসের লিপে ও হেমন্ত’র কণ্ঠে এই রবীন্দ্র সঙ্গীত দুটি বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল।এরপরে তাপস পাল অভিনীত বহু ছবিতে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় সুর ও কণ্ঠ দিয়েছিলেন।এছাড়াও হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের চিরস্মরণীয় কিছু গান যেমন: “ও নদী রে”, “এই সুন্দর স্বর্ণালী সন্ধ্যায়”, “এই রাত তোমার আমার”, “নীড় ছোট ক্ষতি নেই আকাশ তো বড়”, “আয় খুকু আয়”, “এই পথ যদি না শেষ হয়”, “ঝড় উঠেছে বাউল বাতাস” এবং দুর্গম পথ অতিক্রম করে ডাকঘরের চিঠি বয়ে নিয়ে যাওয়া চরিত্র ‘রানার; কে নিয়ে হেমন্ত’র চিরজীবন্ত গান “রানার ছুটেছে রানার” আজও সমান জনপ্রিয়।
সেরা সঙ্গীত পরিচালক ও সেরা কণ্ঠ হিসাবে জীবনে তিনি অসংখ্য পুরস্কার পেলেও ১৯৭০ সালে তিনি পদ্মশ্রী পুরস্কার নিতে অস্বীকার করেন। ১৯৮৫ সালে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাঁকে ডি. লিট সম্মান প্রদান করা হয়।
১৯৮৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু হয়।