চিট ফান্ড কাণ্ডের তদন্তে গতি আনল সিবিআই।
সোমবার সকাল থেকে একটি বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থার অফিস, তার প্রমোটার ও কর্তাদের বাড়ি-সহ ষোলোটি জায়গায় তল্লাশিতে নেমে পড়ল সিবিআইয়ের বিশেষ টিম।
সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, নিউ ইন্ডিয়া অ্যাগ্রো লিমিটেড নামে ওই চিটফাণ্ড সংস্থার মূল দফতরটি ছিল কলকাতার বউ বাজার এলাকায়। এ ছাড়াও আরামবাগ, কামারহাটি, বর্ধমান সহ গোটা রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ও মফস্বল শহরে তাদের অফিস ছিল। সংস্থার সব কটি দফতরেই তল্লাশি চলছে।
তদন্ত এজেন্সি সূত্রে আরও বলা হচ্ছে, সংস্থাটির অন্যতম ডিরেক্টর ছিলেন সৌরভ মণ্ডল নামে এক ব্যবসায়ী। তাঁর বাড়িও বউ বাজার এলাকায়। সৌরভের বাড়িতেও এ দিন সাত সকালে পৌঁছে গিয়েছে সিবিআই টিম। একই ভাবে সংস্থার অপর কর্তা প্রসেনজিৎ সরকারের বাড়িতেও তল্লাশি শুরু হয়েছে। প্রসেনজিতের বাড়ি আরামবাগে। সংস্থাটি কয়েকশ কোটি টাকা বিনিয়োগকারীদের থেকে সংগ্রহ করেছিল বলে জানা গিয়েছে।
সিবিআই সূত্রে বলা হচ্ছে, শুধু এই সংস্থার দফতরে তল্লাশি চালানো নয়, চিটফান্ড কাণ্ডের সঙ্গে জড়িত মূল ষড়যন্ত্রকারী ও সুবিধাভোগীদেরও চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁদের কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিস পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের এক প্রাক্তন রাজ্যসভা সাংসদ রয়েছেন। সে ছাড়া রয়েছেন আরও এক ব্যবসায়ী। যিনি নিজেকে তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ সারির নেতাদের ঘনিষ্ঠ বলে দাবি করতেন। সব মিলিয়ে গোটা তদন্তে এ বার দ্রুত জাল গুটিয়ে চার্জশিট প্রস্তুত করার প্রক্রিয়া শুরু করে দিতে চাইছে সিবিআই।
কয়েক মাস আগেই টাকা ফেরত না পেয়ে কয়েশ বিনিয়োগকারী আরামবাগ শহরে প্রসেনজিতের বাড়িতে চড়াও হয়। তারপর থেকে কার্যত ভিভিআইপি নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছিল তাঁর বাড়িতে। তারকেশ্বরের এক দাপুটে তৃণমূল নেতার আশীর্বাদে গোটা মহকুমায় প্রসেনজিৎ নিজের সংস্থার জাল বিছিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে।
বাংলার সমস্ত চিটফান্ড দূর্নীতিকে এক ছাতার তলায় আনতে চাইছে কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সি। উদ্দেশ্য একটাই, বৃহত্তর ষড়যন্ত্র বা লার্জার কনস্পিরেসির উৎস খুঁজে বার করা। সারদা, রোজভ্যালি, এমপিএস, প্রয়াগের মতো সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত তো চলছিলই, ইদানিং নারদ স্টিং অপারেশন তদন্তেও সক্রিয় হয়েছে সিবিআই।