কুম্ভ মেলা চলাকালীন পুণ্যার্থীদের ভুয়ো কোভিড রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে একটি বেসরকারি ল্যাবের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করল উত্তরাখণ্ড প্রশাসন। পাশাপাশি সরকারি ও মেলা কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে দায়িত্বপ্রাপ্ত বাকি ২৪টি ল্যাবরেটরির কাছেও জবাব তলবের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন হরিদ্বারের জেলাশাসক সি রবিশঙ্কর।
উল্লেখ্য, অতিমহামারীর আবহে ১ এপ্রিল থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত হরিদ্বার, দেরাদুন, তেহরি জেলাজুড়ে ভিড় জমান দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী। মেলা শুরুর আগে ও পরে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে বিভন্ন মহলে সমালোচনা শুরু হয়। কুম্ভ-ফেরত ভক্তদের একটা বড় অংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর বিতর্ক আরও বাড়তে থাকে। এই পরিস্থিতিতে নতুন করে জাল রিপোর্ট কাণ্ডে প্রবল অস্বস্তিতে সরকার।
সূত্রের খবর, এপ্রিল মাসে পাঞ্জাবের এক ব্যক্তির মোবাইলে করোনার নমুনা সংগ্রহ সংক্রান্ত মেসেজ আসে। তাঁর দাবি, সেই সময় তিনি কুম্ভমেলার আশপাশে ছিলেন না। অন্য কোথাও কোভিড টেস্টও করতে দেননি। তাই স্যাম্পেল কালেকশনের কোনও প্রশ্নই ওঠে না।
গোটা ঘটনা জানিয়ে তিনি আইসিএমআর-কে একটি ই-মেল পাঠান। ওই ব্যক্তির অভিযোগ ছিল, অন্য কেউ তাঁর আধার কার্ড ও মোবাইল নাম্বার নিয়ে ভুয়ো পরীক্ষা করিয়েছে। এরপর নড়েচড়ে বসে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। উত্তরাখণ্ড প্রশাসনকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। তখনই ওই ল্যাবের কুকীর্তি ধরা পড়ে। পাশাপাশি আরও একাধিক ল্যাবরেটরির এই জাতীয় জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকার খোঁজ মেলে।
সরকারি তরফ থেকে জানানো হয়েছে, কুম্ভ শুরুর আগেই উত্তরাখণ্ড হাইকোর্ট মেলাচত্বরে দৈনিক ন্যূনতম ৫০ হাজার পুণ্যার্থীর কোভিড টেস্টের আদেশ দেয়। সেই মোতাবেক সরকারি উদ্যোগে ১৪টি এবং মেলা কর্তৃপক্ষের সাহায্য নিয়ে আরও ১০টি বেসরকারি ল্যাবকে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট চালানোর দায়িত্ব দেয় প্রশাসন৷ কুম্ভ মেলার স্বাস্থ্য আধিকারিক অর্জুন সিংহ জানান, পরীক্ষা বাবদ তাঁদের মোট ৯ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। ১০টি ল্যাবে এক মাস ধরে আড়াই লক্ষেরও বেশি ভক্তের করোনার টেস্ট করা হয়।
এই প্রেক্ষিতে হরিদ্বারের জেলাশাসক সি রবিশঙ্কর তদন্তের জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছেন। আগামী পনেরো দিনের মধ্যে তাঁদের রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা। তারপর কেউ অভিযুক্ত প্রমাণিত হলে দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের হুমকিও দিয়েছেন তিনি।