শহরতলীর বর্ষার হাত ধরে কলকাতায় স্বাভাবিকের নীচে পারদ

একসঙ্গে স্বাভাবিকের নীচে (below normal) সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। সৌজন্যে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণার (north and south 24 paraganas) অল্প অংশে বর্ষার (monsoon) প্রবেশ। বর্ষার বৃষ্টি (rain) একদিকে সঙ্গে অল্প অল্প ঠান্ডা হাওয়া। অস্বস্তিকর গরম থেকে কলকাতাকে আপাতত মুক্তি দিয়েছে। এমনটাই জানাচ্ছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।

আজ শনিবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি কম। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি কম। সর্বোচ্চ আর্দ্রতার পরিমাণ ৯৫ শতাংশ, সর্বনিম্ন ৬৫ শতাংশ। বৃষ্টি হয়েছে ২১.৫ মিলিমিটার। যার হাত ধরে স্বাভাবিকের নীচে তাপমাত্রা।

শুক্রবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি বেশি। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে দুই ডিগ্রি কম। সর্বোচ্চ আর্দ্রতার পরিমাণ ৮৮ শতাংশ, সর্বনিম্ন ৬৬ শতাংশ। বৃষ্টি হয় ছিটেফোঁটা।

দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর জেরে হালকা থেকে মাঝারি, কোথাও ভারী বৃষ্টিও হচ্ছে। এমন ভাবে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হতে পারে মঙ্গলবার পর্যন্ত। হাওয়া অফিস জানিয়েছে আজ শনিবার বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম বর্ধমান এবং বীরভূম, পূর্ব মেদিনীপুর ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে। রবিবার পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম বর্ধমানে ভারী বৃষ্টি হতে পারে।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার নিম্নচাপের (low pressure area) হাত ধরেই দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু (south westerly monsoon) প্রবেশ করে দক্ষিণবঙ্গে (south bengal)। দক্ষিণবঙ্গের চারটি জেলায় প্রবেশ করে বর্ষা।

উত্তরবঙ্গের মালদহ দুই দিনাজপুরের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের কৃষ্ণনগর ও ক্যানিং, উত্তর ২৪ পরগণার একটু অংশে ও দক্ষিণ ২৪ পরগণার তলার দিকে অংশে এসেছে বর্ষা। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘নিম্নচাপের হাত ধরে দক্ষিণের চার জেলাকে ছুঁয়েছে বর্ষা। আগামী দুই দিনে আমরা আশা করছি পুরো বাংলাকে বর্ষা কভার করে নেবে’।

এদিকে পরিবেশ বিশেষজ্ঞ সুজীব কর বলছেন, ‘আবহাওয়া দফতর বলছে মৌসুমী বায়ু প্রবেশ করেছে রাজ্যে। সেটা ঠিক কিন্তু এই যে বৃষ্টি এখন হচ্ছে সেটা সিস্টেম কেটে গেলেই সঙ্গে সঙ্গে থেমে যাবে। কারণ মৌসুমী বায়ু যাচ্ছিল বাংলাদেশ মায়ানমারের দিকে। সিস্টেম সেটিকে টেনে এনে বৃষ্টি করিয়ে দিচ্ছে। ঠিকঠাক বর্ষার বৃষ্টি শুরু হবে তিন জুনের পর’। হাওয়া অফিস এও জানাচ্ছে ওডিশার পুরীতেও দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমী বায়ু প্রবেশ করেছে।

মৌসম ভবন জানিয়েছে, উত্তর-পশ্চিম, মধ্য ভারত ও দক্ষিণ ভারতে স্বাভাবিকের চেয়েও বেশি বৃষ্টিপাত হবে। পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতে চলতি বছরের জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে স্বাভাবিকের থেকে কম হবে বৃষ্টি। মঙ্গলবার মৌসম ভবনের তরফে জানানো হয়েছে, দীর্ঘকালীন গড় অনুযায়ী ১০১ শতাংশ বৃষ্টি হবে সারা দেশে। অর্থাৎ যা স্বাভাবিকের থেকে বেশি। ১৯৮১ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত দীর্ঘকালীন গড় ৯৬ থেকে ১০৪ শতাংশ। গড় বৃষ্টিপাত ৮৮০ মিলিমিটার। তা সম্পূর্ণ হওয়ার সম্ভাবনা আছে ৪০ শতাংশ। সময় অন্তর আপডেট দেবে আবহাওয়া দফতর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.