করোনা ভ্য়াকসিন নেওযার পর কেন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া, খোলসা করলেন বিশেষজ্ঞরা

দেশজুড়ে চলছে ভ্যাকসিনেশন প্রক্রিয়া। করোনা ভ্যাকসিন নেওয়ার পর সবাই যে সুস্থ থাকছেন, এমন নয়। অনেকের মধ্যেই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে শুরু করেছে। অনেকেরই জ্বর, মাথা ব্যথা, বমি বমি ভাব ইত্য়াদি নানা উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। আবার অনেকের শরীরে কোনও প্রতিক্রিয়াই নেই। তাহলে কিছু মানুষের কেন এমন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে? এই নিয়ে মত প্রকাশ করলেন বিজ্ঞানীরা।

তাঁদের মতে করোনার পর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া অতি সাধারণ বিষয়। এগুলি অস্থায়ী। এক্ষেত্রে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ভ্য়াকসিন যে দেহে করোনা প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াচ্ছে এটি তারই ইঙ্গিত। এছাড়া সবার শারীরিক অবস্থা সমান হয় না। ফলে প্রত্যেকের শরীরে ভ্যাকসিনের সমান প্রতিক্রিয়া হয় না। বিজ্ঞানীরা এও বলেছেন, ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নেওয়ার তুলনায় দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আরও বেশি দেখা দিতে পারে। মানবদেহ যখন অ্যান্টিজেন প্রথম প্রবেশ করে তখন দেহে অ্যান্টিবডি তৈরি হতে কিছুটা সময় নেয়। সেই কারণে অসুস্থ হয়ে পড়া সম্ভব। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) অ্যান্টিজেনকে (antigen) প্যাথোজেনের (pathogen) একটি অংশ বলে বর্ণনা করেছে। এটি অ্যান্টিবডি তৈরির ক্ষেত্রে কাজে লাগে। প্যাথোজেনের অ্যান্টিজেনের প্রতিক্রিয়া স্বরূপ দেহ যে অ্যান্টিবডি তৈরি করে তা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ক্ষেত্রে বড় প্রভাব ফেলে।

দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার দুটি ভাগ রয়েছে। দেহ যখন ভ্যাকসিনের পর প্রথম ধাক্কাটা খায় তখন বাইরে থেকে দেহে প্রবেশ করা অ্যান্টিজেন চিনতে শুরু করে। রক্তের শ্বেতকণিকা (white blood cells) এক্ষেত্রে প্রভাবিত হয়। ফলে জ্বালা, শীত করা, ব্যথা, ক্লান্তি এবং অন্যান্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলি হয়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বয়সের সাথে সাথে কমে যেতে থাকে। ফলে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও বাড়তে পারে। সেই কারণেই অনেকের ক্ষেত্রে ভ্যাকসিন নেওয়ার পর তা অন্যদের তুলনায় বেশি প্রতিক্রিয়া দেখায়। তবে যদি ভ্যাকসিন নেওয়ার পর দু-একদিনের মধ্য়ে কোনও সমস্যা না হয় তার মানে এই নয় যে ভ্যাকসিন কোনও কাজ করছে না। এটি সম্পূর্ণভাবে মানবদেহের উপর নির্ভর করে।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বেশি হলে চিকিৎসেকর সঙ্গে কথা বলা যেতে পারে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধও খাওয়া যেতে পারে। কিন্তু খুব সমস্যা না হলে বা ভ্যাকসিন নেওয়ার আগে ওষুধের প্রয়োজন নেই বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। ইনজেকশন যেখানে দেওয়া হয়েছে সেখানে জ্বালা করলে বা ব্যথা হলে ঠান্ডা জলে পরিষ্কার কাপড় ভিজিয়ে সেখানে সেক দেওয়া যেতে পারে। জ্বর হলে হালকা খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.