নিউটাউন এনকাউন্টারে নিহত দুই গ্যাংস্টার জসসি খাড়ার এবং জয়পাল ভুল্লার দেহ নিতে কলকাতায় এসেছে তাদের পরিবার। বৃহস্পতিবার রাতেই টেকনো সিটি থানায় যান জয়পাল ভুল্লারের বাবা। শুক্রবার সকালে টেকনো সিটি থানায় এসেছে নিহত আরেক গ্যাংস্টার যশপ্রীত সিং খাড়ারের পরিবার। দেহ ফেরত নেওয়ার প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে সইসাবুদ করে ফেলেছেন তাঁরা। পরিবারে হাতে আজই দুই গ্যাংস্টারের মৃতদেহ তুলে দেওয়া হতে পারে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
এদিকে, নিহতদের দেহের ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট সামনে এসেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘মৃত গ্যাংস্টারদের শরীরে রয়েছে অসংখ্য বুলেটের ক্ষত। মৃতদের একজনের মাথাতেও বুলেটের ক্ষত রয়েছে।’ ময়নাতদন্তের পুরো প্রক্রিয়ার ভিডিওগ্রাফি হয়েছে। জানা গিয়েছে, দু’জনের দেহের ডিএনএ নমুনা আলাদা করে সংরক্ষণ করা হয়েছে। সোমবার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে চূড়ান্ত রিপোর্ট।
বুধবার নিউটাউনের সাপুরজি এলাকায় কলকাতা পুলিশের এসটিএফ টিমকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় একদল গ্যাংস্টার। পালটা এনকাউন্টারে মৃত্যু হয় দুই দুষ্কৃতীর। তদন্তে নেমে পুলিশের হাতে যা তথ্য এসেছে তা মাথা ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো৷ জানা গিয়েছে, জয়পাল ভুল্লারের বাবা ছিলেন পঞ্জাবের পুলিশের প্রাক্তন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইনস্পেক্টর। জয়পাল নিজে ছিলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র। পরবর্তীকালে একাধিক খুন, ডাকাতি, তোলাবাজিতে অভিযুক্ত গ্যাংস্টার জয়পাল। মুম্বই পুলিশের হেড কনস্টেবলের ছেলে দাউদ ইব্রাহিমের মতো টাকার লোভে পাঞ্জাব, হরিয়ানার গ্যাংস্টার হয়ে ওঠে জয়পাল। চলতি বছরের ১৫ মে লুধিয়ানায় অস্ত্র ছিনতাই করে ২ পুলিশকর্মীকে খুন করে বাংলায় পালিয়ে আসে এনকাউন্টারে নিহত ২ দুষ্কৃতী। খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত জয়পাল ও তার তিন শাগরেদের মাথায় দাম ঘোষণা করা হয় ১৯ লক্ষ টাকা। শুধু জয়পাল ভুল্লারেরই মাথার দাম পুলিশ ঘোষণা করে ১০ লক্ষ টাকা। ২০১৪ সাল থেকেই কার্যত ফেরার ছিল জয়পাল সিং ভল্লার।
ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে অত্যাধুনিক আরও অস্ত্র। জয়পাল ভুল্লারের পাকযোগ ছিল বলেই জানিয়েছে পঞ্জাব পুলিশের ডিজিপি। ড্রাগ ব়্যাকেট চালানোয় পাকিস্তানের সঙ্গে তার যোগ ছিল। বৃহস্পতিবার নিউটাউনে ভুল্লারদের (Jaipal Singh Bhullar) ফ্ল্যাটের আলমারি থেকে মিলেছে পাকিস্তানের কাপড়ের দোকানের একটি প্যাকেট। তাতে উর্দুতে লেখা রয়েছে। তা থেকেই পাকিস্তান যোগের সম্ভাবনা জোড়ালো হচ্ছে। উদ্ধার হয়েছে ‘মেড ইন পাকিস্তান’ লেখা রিভলবার।
নিউটাউনের ওই ফ্ল্যাট থেকে পাকিস্তানের ব্যাগ উদ্ধার হওয়ায় বিষয়টা আরও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। প্রশ্ন উঠছে, জয়পাল ভুল্লার নিজে পাকিস্তানে গিয়েছিলেন? নাকি পাকিস্তান থেকে কেউ এসে তাঁর কাছে এই ব্যাগ পৌঁছে দিয়েছিল? ব্যাগে করে কি মাদক বা অস্ত্র পাচার হত?