কি কলকাতা/শহরতলী/মফস্বলের এলিট/সুখী/ভোগসর্বস্ব বাঙ্গালী (বাই ডিফল্ট হিন্দু), সেক্যুলারিজমের মৌতাত এখনও ভাঙ্গছে না?

(১) স্থানঃ- কলকাতা
কালঃ- ১৬ ই আগস্ট, ১৯৪৬
ঘটনাঃ- দ্য গ্রেট ক্যালকাটা রায়ট

(২) স্থানঃ- কলকাতা
কালঃ- ০৯ ই জুন, ২০২১
ঘটনাঃ- গতকাল বুধবার অর্থাৎ ০৯/০৬/২০২১-এ পার্ক সার্কাসের তিলজলায় একটি “সবিশেষ সম্প্রদায়” তাদের মাজহাবি চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে একটি শনি মন্দিরে বিনা কারণে, বিনা প্ররোচনায় আক্রমণ করে, ভাঙ্গচুর করে ও প্রণামীর বাক্স লুটপাট করে (পোস্টের সঙ্গে সংযুক্ত চারটে ছবি এক্ষেত্রে দ্রষ্টব্য)। এবার এই “সবিশেষ সম্প্রদায়”-টি কোন সম্প্রদায়, সেটা আজকের দিনেও আপনি না বুঝতে পারলে ওয়েলকাম ইউ টু পোগো অ্যাণ্ড কার্টুন নেটওয়ার্ক চ্যানেলজ। আর তারা কেন বিনা কারণে বা বিনা প্ররোচনায় শনি মন্দির আক্রমণ করে ভাঙ্গচুর করতে গেলো, সেটার কারণও না বুঝতে পারলে শুধু এটুকু বোঝার বা জানার চেষ্টা করুন কেন ৭১২ সালে এই দেশের প্রথম মন্দিরটি বিধর্মী যবন দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলো!!!

দ্য সেম ট্র্যাডিশন গোয়িং অন অ্যাণ্ড অন…

ঘটনার রেশ এই কিছুক্ষণ আগে অবধি বর্তমান ছিলো, সম্ভবতঃ এখনও পুরো শেষ হয়নি, আরও কিছু সম্ভবতঃ ভবিষ্যতের জন্য অবশিষ্ট আছে। আজ সকালে বা দুপুরে পার্ক সার্কাসের হাজারী গলিতে উপরোক্ত সেই “সবিশেষ সম্প্রদায়”-টিই ভূমিপুত্র হিন্দুদের উপর বোম ও পাথর বর্ষণ করে (প্রথম ভিডিওটি দ্রষ্টব্য এক্ষেত্রে)। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশ দাঁড়িয়ে শুধুমাত্র নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে।

দ্বিতীয় ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে কী’ভাবে সরকারী সম্পত্তির ক্ষতি করছে সেই “সবিশেষ সম্প্রদায়”-টি, পুলিশের গাড়ির কাঁচ ভাঙ্গচুর থেকে শুরু করে গাড়িটিকে চূড়ান্ত ক্ষতি না করা অবধি সম্ভবতঃ আক্রমণকারীরা বিরত হয়নি। আর এটা যে সেই “সবিশেষ সম্প্রদায়”-এরই কাজ, সেটার প্রমাণ ভিডিওকারী নিজেই দিচ্ছে। ভালো করে রেকর্ডিংটা শুনলেই সেটা বোধগম্য হচ্ছে।

চতুর্থ ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে আবারও সেই সবিশেষ সম্প্রদায় কী’ভাবে খোদ পুলিশের উপরেই পাথর বর্ষণ করছে একেবারে কাশ্মীর স্টাইলে। বাধ্য হয়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করে ও সেই সঙ্গে টিয়ার গ্যাস ছোঁড়ে। এই ভিডিওটি দেখার সময়েও ভিডিও রেকর্ডিংকারীর বক্তব্য ভালোভাবে শুনতে ভুলবেন না যেন!!!


.
.
.
কি কলকাতা/শহরতলী/মফস্বলের এলিট/সুখী/ভোগসর্বস্ব বাঙ্গালী (বাই ডিফল্ট হিন্দু), সেক্যুলারিজমের মৌতাত এখনও ভাঙ্গছে না? এখনও এই ধ্যানধারণাতেই বিদ্যমান আছেন যে শুধুমাত্র শিক্ষা দিলেই এই সবিশেষ সম্প্রদায় আপনার দেশকে, আপনার ধর্মকে ভালোবাসতে শিখে যাবে? অবশ্য শুধুমাত্র আপনাকে দোষ দিয়েই বা কী হবে, আপনি তো ছোট থেকেই একই বৃন্তে দুটি কুসুমের স্বপ্ন চোখে নিয়ে বড় হয়েছেন; এই দেশের তথাকথিত হিন্দুত্ববাদী রাজনৈতিক দলটির অনেক নেতাও মনে মনে এখনও এটিই বিশ্বাস করে চলেন।

এই জাতটির বিলুপ্তিই সম্ভবতঃ ভবিষ্যৎ। সম্ভবতঃ ঈশ্বরও চান না এই জাতির পুনর্জাগরণ হোক। যখন একটি বৃক্ষ গ্রীষ্মকালে পুনর্বার নতুনভাবে সেজে ওঠে, তখন সে তার সব পুরোনো মলিন পাতা ত্যাগ করেই নতুনভাবে সাজার জন্য প্রস্তুত হয়; এই সৃষ্টি যখন ধর্মযুদ্ধের মাধ্যমে আবার নতুন করে ধর্মরাজ্য প্রতিষ্ঠা করে, তখন ভীষ্ম, দ্রোণ বা অভিমন্যুর মতো অনেক ধার্মিককেও সেই ধর্মরাজ্য প্রতিষ্ঠার যুদ্ধের যুপকাষ্ঠে নিজেদেরকে বলিদান দিতে হয়।

দ্য গ্রেট ক্যালকাটা রায়টের হীরক জয়ন্তী বা প্ল্যাটিনাম জয়ন্তীর আগেও সম্ভবতঃ আমাদের পক্ষের এরকম অনেক বলি চড়বে। সে জন্য এখন থেকেই আমাদের মানসিক ও শারীরিক প্রস্তুতি রাখা প্রয়োজন।

সায়ন পাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.