Euro 2020: তারুণ্য এবং অভিজ্ঞতায় ভর করেই চোকার্স বদনাম ঘোচাতে চায় নেদারল্যান্ডস

আর একদিন পরই শুরু হচ্ছে ইউরো কাপ (Euro Cup 2020)। ব্লকবাস্টার ফুটবল টুর্নামেন্টের দাবিদারদের শক্তি কী? এক্স ফ্যাক্টর কে? এ সমস্ত কিছুই খুঁজে দেখল ‘সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল’। আজ নেদারল্যান্ডস (Netherlands)।

শক্তি: মাথিয়াস ডে’লিট। বিশ্বমানের ডিফেন্ডার। এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা তরুণ তারকাদের মধ্যে একজন। নিখুঁত ট্যাকলার। আবার পজিশনিংও দারুণ। নেদারল্যান্ডসের আর এক শক্তি মেম্ফিস ডেপে। ফরোয়ার্ডে অনেক পজিশনে খেলতে পারেন। দারুণ ছন্দে রয়েছেন।

দুর্বলতা: বিশ্বফুটবলের চোকার্স ধরা হয় নেদারল্যান্ডসকে। বড় ম্যাচ পরিস্থিতিতে ব্যর্থ করে দল। চোটের জন্য তারকা ডিফেন্ডার ভার্জিল ভ্যান ডাইকের ইউরো না খেলতে পারাটাও দলের জন্য খুব বড় একটা ধাক্কা।

এক্স ফ্যাক্টর: জিওর্জিও ওয়াইন্যালডাম। লিভারপুল দলের ‘মিস্টার ডিপেন্ডেবল’ হয়ে উঠেছিলেন ওয়াইন্যালডাম। নিখুঁত পাস বাড়াতে পারেন। গোলও করেন। আবার সেট পিস পরিস্থিতিতেও দারুণ।

[আরও পড়ুন: Euro Cup 2021: সোনালি প্রজন্মের পর তারুণ্যেই ভরসা স্পেনের, দেখুন টিম প্রোফাইল]
কোন ফর্মেশনে খেলে দল: ৩-১-৪-২ বা ৩-৪-৩

সেরা তরুণ তারকা: ফ্রেঙ্কি ডে’ইয়ং। এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা তরুণ ফুটবলারদের মধ্যে একজন। বার্সেলোনার মিডফিল্ড মার্শাল। বয়স কম হলেও খুবই পরিণত।

হেডমাস্টার: ফ্রাঙ্ক ডে’বোয়ার। আক্রমণ এবং রক্ষণের মধ্যে ব্যালান্স রাখতে ভালবাসেন। ম্যান ম্যানেজমেন্টেও খুব দক্ষ।

ইউরোয় সেরা ফল: ১৯৮৮ ইউরোয় চ্যাম্পিয়ন।

পুরো দল:

গোলকিপার- মার্কো বিজোট (AZ), টিম ক্রুল (নরউইচ), মার্টেন স্টেকেলেনবার্গ (আয়াক্স)

রক্ষণ- নাথান একে (ম্যাঞ্চেস্টার সিটি), ডেলে ব্লাইন্ড (আয়াক্স), মাথিয়াস ডে’লিট (জুভেন্তাস), স্টেফান ডে ভ্রিজ (ইন্টার মিলান), প্যাট্রিক ভান আনহল্ট (ক্রিষ্টাল প্যালেস), জোয়েল ভেল্টমান (ব্রাইটন), ওয়েন উইজনডাল (AZ), ডেনজেল ডামফ্রাইস (পিএসভি)

মিডফিল্ডার- ফ্রেঙ্কি ডে’ইয়ং (বার্সেলোনা), মার্টেন ডে রোন (আটলান্টা), রায়ান গ্রাভেনবার্চ (আয়াক্স), ডেভি ক্লাসেন (আয়াক্স), তেয়ুন কুপমেইনার্স (AZ), কুইন্সি প্রোমেস (স্পার্টাক মস্কো), জুরিয়েন টিম্বার (আয়াক্স), ডনি ভান ডে বিক (ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড), জিওর্জিও ওয়াইন্যালডাম (লিভারপুল)

ফরোয়ার্ড- স্টিভেন বারগুইস (ফেয়েনর্ড), লুক ডে জং (সেভিয়া), মেম্ফিস ডেপে (লিও), কোডি গাকপো (পিএসভি), ডনিয়েল মালেন (পিএসভি আইন্দোভেন), ওয়াউট উইঘোর্স্ট (উলভসবুর্গ)

সম্ভাব্য প্রথম একাদশ: স্টেকেলেনবার্গ, ডেলে ব্লাইন্ড, মাথিয়াস ডে’লিট, স্টেফান ডে ভ্রিজ, ডেনজেল ডামফ্রাইস, ফ্রেঙ্কি ডে’ইয়ং, মার্টেন ডে রোন, জিওর্জিও ওয়াইন্যালডাম, ওয়েন উইজনডাল, মেম্ফিস ডেপে, ওয়াউট উইঘোর্স্ট।


সম্ভাবনা: চোকার্স। হ্যাঁ ঠিক এই তকমাটাই বসানো হয় নেদারল্যান্ডসের পাশে। যুগের পর যুগ ফুটবলকে বহু তারকা উপহার দিয়েছে নেদারল্যান্ডস। জোয়ান ক্রুয়েফ থেকে মার্কো ভান বাস্তেন। ওয়েসলি স্নাইডার থেকে আরিয়েন রবেন। কে নেই সেই তালিকায়। অভিনব সমস্ত স্ট্র্যাটেজিতে ডাচ কোচেরাও দ্য বিউটিফুল গেমকে আরও বিউটিফুল করে তুলেছেন। কিন্তু তাতেও বড় মঞ্চে সব সময় ব্যর্থতার স্বাদ পেয়েছে নেদারল্যান্ডস। যাদের ট্রফি ক্যাবিনেটে রয়েছে মাত্র একটা ইউরো। প্রতিবারই ফুটবলপ্রেমীদের আশা থাকে নেদারল্যান্ডস দারুণ কিছু করবে। শেষমেশ অবশ্য ব্যর্থতা আর হতাশাই বরাদ্দ থাকে ডাচ ফুটবলারদের জন্য।

আসন্ন ইউরোর অবশ্য সেই চোকার্স তকমা মুছতে বদ্ধপরিকর নেদারল্যান্ডসের নতুন প্রজন্ম। বিশেষজ্ঞরাও মনে করছেন মূলত দুটো কারণের জন্যই এ বারের ইউরোয় দাবিদারদের তালিকাতেই থাকবে কমলা ব্রিগেড। কারণগুলো কী? এক, মেম্ফিস ডেপে। গত কয়েক মরশুমে অলিম্পিক লিয়ঁর হয়ে দুর্দান্ত সমস্ত পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছেন ডেপে। আর তারকা ফরোয়ার্ডকে ঘিরেই স্বপ্ন দেখছে নেদারল্যান্ডস। ডেপেই ফরোয়ার্ড লাইনের প্রধান অস্ত্র এমনটাই মনে করছেন নেদারল্যান্ডসের কোচ ফ্রাঙ্ক দে’বোয়ার। যিনি বলেন, “ডেপে বিশ্বমানের ফুটবলার। বিশ্বের প্রতিটা বড় ক্লাবই এই মুহূর্তে ডেপেকে সই করাতে চায়। বরাবর নেদারল্যান্ডসের হয়ে দারুণ পারফর্ম করেছে ডেপে। আমি নিশ্চিত ইউরোতেও ও নিজের চেনা ছন্দেই থাকবে।” দুই, ডে’ইয়ং ও ডে’লিটের উপস্থিতি। নেদারল্যান্ডসের ইউরো স্কোয়াডে অভিজ্ঞতার থেকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে তারুণ্যকে। দলে তরুণ ফুটবলারের সংখ্যা অনেক বেশি। তবে দু’জনের কথা আলাদা করে বলতে হবে। ফ্রেঙ্কি ডে’ইয়ং ও মাথিয়াস ডে’লিট। ডে’ইয়ং যেমন বার্সার মিডফিল্ড মার্শাল হয়ে উঠেছেন। আবার ডে’লিটও জুভেন্তাস জার্সিতে নিজের প্রতিভার প্রমাণ রেখেছেন। আয়াখসের অ্যাকাডেমি থেকে উঠে আসা দুই প্রতিভার উপস্থিতিই নেদারল্যান্ডসকে আরও শক্তিশালী করেছে। চোটের কারণে তারকা ডিফেন্ডার ভার্জিল ভ্যান ডাইকের অনুপস্থিতি একটু হলেও টেনশনের চোরাস্রোত তৈরি করেছে। তাতেও ডাচ ভক্তরা আত্মবিশ্বাসী ইউরো–র রং হবে কমলা!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.