নারদ মামলা (Narada Case) জামিনে যাঁরা মুক্ত রয়েছেন তাঁদের কেউই পালিয়ে যাবেন না, জামিনের আবেদন বিবেচনা করার ক্ষেত্রে ৬০০ বছরের পুরনো পদ্ধতি রয়েছে। অভিযুক্তদের পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা, অসহযোগিতা ও তথ্য-প্রমাণ লোপাটের বিষয় বিবেচনা করেন বিচারপতিরা। তবে কোনও ঘটনা ঘটে গেলে এতদিন পর তথ্য-প্রমাণ লোপাটের সম্ভাবনা থাকে না।’’ সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের (Kolkata High Court) বৃহত্তর বেঞ্চে নারদ মামলার শুনানিতে এমনই বলেছেন অভিযুক্তদের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি (Abhisekh Manu Singhvi) ।
এদিন বৃহত্তর বেঞ্চে নারদ মামলার শুনানিতে অভিযুক্তদের আইনজীবী সিংভি বলেন, ‘‘জামিনের আবেদন বিবেচনা করার ক্ষেত্রে ৬০০ বছরের পুরোনো একটা পদ্ধতি আছে। মূলত ৩ টি বিষয়ের কথা বিবেচনা করেন বিচারক বা বিচারপতিরা। পালিয়ে যাওয়ার সম্ভবনা । অসহযোগিতা ও তথ্য প্রমাণ লোপাট। অভিযুক্তদের মধ্যে একজন ২০১১ সাল থেকে মন্ত্রী (Minister) এবং ৫০ বছর ধরে বিধায়ক (Mla) । ঘটনা ঘটার এতদিন পর লোপাট করার জন্য আর কি তথ্য প্রমাণ বাকি আছে ? এতদিন পর আর অসহযোগিতা না করার প্রশ্ন আসছে কোথা থেকে ? সমাজের এত গভীরে যাদের শিকড় তাদের পালিয়ে যাওয়ার প্রশ্ন আসছে কোথা থেকে ?’’ অভিষেক মনু সিংভি
মামলার সওয়াল করতে গিয়ে বর্ষীয়ান এই আইনজীবী আরও বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টও জামিন দেওয়ার সময় এই ৩ টি বিষয় খতিয়ে দেখে চিদাম্বরম -কে জামিন দিয়েছেন। কয়েক বছর আগে এই হেভিওয়েটদের কণ্ঠস্বর – নমুনা দেওয়ার জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছিল। Crpc-এর 41A ধারা অনুযায়ী তাদের ডেকে পাঠায় সিবিআই । তাঁরা সহযোগিতা করেছেন। আইন অনুযায়ী তাঁদের ততক্ষন গ্রেফতার করা যাবে না যতক্ষণ না পর্যন্ত তদন্তকারী আধিকারিক উপযুক্ত কারণ দেখাচ্ছেন।’’
এরপরেই বিচারপতি রাজেশ বিন্দল (Rajesh Bindal) সিংভির উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেন, ‘‘১৭ মে আইনমন্ত্রী (Law Minister) নিম্ন আদালতে গিয়েছিলেন । তিনি কি ওখানে রোজ যান ? তিনি ওই নির্দিষ্ট এজলাসে থাকুন বা নাই থাকুন , তিনি আদালত চত্বরে ছিলেন। তিনি ( মলয় ঘটক ) কি বিচার ব্যবস্থাকে মানেন না ? তিনি আদালতে গিয়েছিলেন কেন ? এটা মনে রাখতে হবে যে এটা শুধুমাত্র সাধারণ মানুষ বা রাজনৈতিক কর্মীদের দ্বারা সংগঠিত বিক্ষোভ নয়। এটা সাংবিধানিক পদে থাকা ব্যক্তিদের দ্বারা পরিচালিত বিক্ষোভ। এমন কোনও উদাহরণ দেখাতে পারবেন যেখানে বিচারক বলছেন যে আমি প্রভাবিত হয়েছি ? আমাদের তো জানা নেই।’’
বেশ কিছুক্ষণ নারদ মামলার শুনানি চলে কলকাতা হাইকোর্টে। সওয়াল-জবাব শেষে আজকের মতো শেষ হয়ে শুনানি পর্ব। নারদ মামলায় অভিযুক্ত চার হেভিওয়েট নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায় (Subrata Mukherjee) , ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) , মদন মিত্র (Madan Mitra) ও শোভন চট্টোপাধ্যায় (Sovon Chaterjee) আপাতত শর্তাধীন জামিনে মুক্ত রয়েছেন। এই মামলা সংক্রান্ত কোনও তথ্য নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে তাঁদের মুখো খোলায় নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে।